একনেক বৈঠক শেষে রুদ্ধদ্বার আলোচনায় উপদেষ্টারা
Published: 24th, May 2025 GMT
দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষ হওয়ার পরই এই অনির্ধারিত বৈঠক শুরু হয়।
শনিবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে উপদেষ্টা পরিষদের এই বৈঠক শুরু হয়। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বৈঠকে ১৯ উপদেষ্টা উপস্থিত রয়েছেন।
এর আগে এনইসি সম্মেলন কক্ষে বেলা ১১টায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শুরু হয়। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে একনেক সভা শেষ হয়। বৈঠকে দশটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভাসূত্রে জানা যায়, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপদেষ্টাদের বাইরে আর কাউকে রাখা হয়নি। একনেক বৈঠক শেষে একে একে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পরিকল্পনা সচিবসহ সব সরকারি কর্মকর্তাকে এনইসি কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে দেখা গেছে। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় উপদেষ্টা পরিষদের এই বৈঠককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে।
শনিবার বিকেলে বিএনপি জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠক শেষে অনির্ধারিত আলোচনায় তাঁর পদত্যাগের ভাবনার কথা বলেন। জানা যায়, এ সময় তিনি সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে নানা প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেন। প্রায়ই সড়ক আটকে আন্দোলন, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হওয়া, রাষ্ট্রীয় কাজে নানা পক্ষের অসহযোগিতাসহ দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
ড.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হামলা চালিয়ে বন্দর রক্ষার আন্দোলন থেকে বামপন্থীদের সরানো যাবে না
লালদিয়া টার্মিনাল ও পানগাঁও নৌ টার্মিনাল নিয়ে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে করা ইজারা চুক্তি অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার নেতারা। তাঁরা বলেছেন, পুলিশ দিয়ে হামলা চালিয়ে নেতা–কর্মীদের আহত করে বন্দর রক্ষার আন্দোলন থেকে বামপন্থীদের সরানো যাবে না। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশি হস্তক্ষেপ আইন করে নিষিদ্ধ ও হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার নেতারা। সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে সম্পাদিত লালদিয়া-পানগাঁও টার্মিনাল ইজারা চুক্তি বাতিল এবং নিউমুরিং ও পতেঙ্গা টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার যমুনা অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বাম গণতান্ত্রিক জোট, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা, বাংলাদেশ জাসদ ও জাতীয় গণফ্রন্ট। মিছিলটি রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে এলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা করে পুলিশ। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহত হন।
পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আজ শুক্রবার প্রেসক্লাবের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেন বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার নেতা–কর্মীরা।
সমাবেশে নেতারা বলেন, দেশ ও জাতিকে অন্ধকারে রেখে নিউমুরিং, মোংলা, পতেঙ্গা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। বর্তমান অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকারের এ ধরনের চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার নেই। এই সরকারের উচিত গণ–অভ্যুত্থানের ম্যান্ডেট অনুযায়ী দ্রুত নির্বাচন দিয়ে সরে যাওয়া।
প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’ অভিমুখী মিছিলে পুলিশি হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে নেতারা বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারও বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের মতোই সভা-সমাবেশ, মিছিল করার নাগরিক গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছে।
নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, পুলিশ দিয়ে হামলা চালিয়ে নেতা–কর্মীদের আহত করে বন্দর রক্ষার আন্দোলন থেকে বামপন্থীদের সরানো যাবে না। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশি হস্তক্ষেপ আইন করে নিষিদ্ধ করা এবং হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা। সমাবেশ থেকে বন্দর রক্ষার চলমান আন্দোলনে দেশবাসীকে অংশগ্রহণেরও আহ্বান জানানো হয়।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিবির সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দন, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সীমা দত্ত, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের শামীম ইমাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী প্রমুখ।