নারীদের ওপর ডিজিটাল নিপীড়ন বন্ধে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে
Published: 20th, November 2025 GMT
নারীদের ওপর ডিজিটাল নিপীড়ন বন্ধে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক সময়ে নারীদের প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে পরিকল্পিত ডিজিটাল নিপীড়ন, কুৎসা রটনা এবং হয়রানির উদ্বেগজনক ধারা তৈরি হয়েছে, তা গভীরভাবে নিন্দনীয়।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শেহরীন আমিন ভূঁইয়া মোনামী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা, ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধি উম্মে উসওয়াতুন রাফিয়া, ফাতিমা তাসনিম জুমা, সাবিকুননাহার তামান্না, আফসানা আক্তার, উম্মে সালমা, রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধি তাসনিম জারা, নুসরাত তাবাসসুম, উমামা ফাতেমা, সীমা আক্তারসহ একাধিক নারীকে টার্গেট করে এই আক্রমণ চালানো হচ্ছে।’
এতে বলা হয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তির অংশগ্রহণে চালানো এই ডিজিটাল নিপীড়ন ব্যক্তিগত মর্যাদাহানির পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। নারীদের রাজনৈতিক অবস্থানকে কেন্দ্র করে তাদেরকে হেয় করা, ব্যক্তিগত আক্রমণ চালানো, ভয় দেখানো এবং সামাজিকভাবে অপদস্ত করার মাধ্যমে তাঁর অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করার এই প্রচেষ্টা একটি ঘৃণ্য, নারীবিদ্বেষী ও গণতন্ত্রবিরোধী আচরণ। এমন প্রবণতা আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে বিষাক্ত করে তুলছে এবং রাজনীতিতে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। একটি গণতান্ত্রিক ও সভ্য সমাজে এমন গর্হিত কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
রাজনীতিতে নারীদের নিরাপদ ও সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবিলম্বে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, নারীদের বিরুদ্ধে চলমান সাইবার বুলিং, স্লাটশেমিং, এডিটেড ছবি ছড়ানোসহ যেকোনো ধরনের অনলাইন হয়রানির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। ডিজিটাল পরিসরে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব এবং এই দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রকে কঠোর ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি দেশের সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে, নিজেদের কর্মীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার সম্পর্কে স্পষ্ট নীতিমালা ও কঠোর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে হবে।
যেসব কর্মী নারীদের প্রতি অপমানজনক বা হয়রানিমূলক আচরণে লিপ্ত হবে, তাদের বিরুদ্ধে দলীয় কাঠামোর মধ্যে দ্রুত সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে উল্লেখ করে বলা হয়, একটি সম্মানজনক রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
সিঙ্গাপুরে হলিউড তারকা আরিয়ানা গ্রান্ডেকে জড়িয়ে ধরা তরুণের কারাদণ্ড
সিঙ্গাপুরে একটি চলচ্চিত্রের উদ্বোধনমূলক প্রদর্শনীতে নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে হলিউড তারকা আরিয়ানা গ্রান্ডেকে জড়িয়ে ধরার ঘটনায় এক তরুণকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দেশটির একটি আদালত তাঁকে ৯ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার এশিয়া অঞ্চলে ‘উইকড: ফর গুড’ চলচ্চিত্রের উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছে। কারাদণ্ড হওয়া তরুণের নাম জনসন ওয়েন। তিনি অস্ট্রেলীয় নাগরিক। বয়স ২৬ বছর। তাঁর বিরুদ্ধে জনপরিসরে বিশৃঙ্খলা তৈরি করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, ওয়েন লাফ দিয়ে নিরাপত্তাবেষ্টনী পার হয়ে দৌড়ে আরিয়ানা গ্রান্ডের দিকে চলে যান। এ সময় আরিয়ানা গ্রান্ডেকে ভীত দেখাচ্ছিল। ওই তরুণ তখন গ্রান্ডের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর কাঁধে হাত রাখেন ও লাফাতে থাকেন।
এ ঘটনায় সিঙ্গাপুরে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। অনেকে ওয়েনকে গ্রেপ্তার করে দেশে ফেরত পাঠানোর দাবি তোলেন। তাঁর বিরুদ্ধে আগেও বিভিন্ন কনসার্ট ও তারকাদের অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা করার অভিযোগ ছিল।
পপ তারকা থেকে অভিনেত্রী বনে যাওয়া গ্রান্ডে ২০১৭ সালের মে মাসে এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় ২২ জন নিহত এবং কয়েক শ মানুষ আহত হন। এরপর বিভিন্ন সময়ে গ্রান্ডে বলেছেন, ওই হামলার ভয়াবহ স্মৃতি তাঁকে তাড়িয়ে বেড়ায়।
সিঙ্গাপুরের ঘটনায় কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, এমন আচরণের মধ্য দিয়ে ওয়েন নতুন করে গ্রান্ডেকে ভয় পাইয়ে দিয়েছেন।
সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল সোমবার আদালতে শুনানি চলাকালে বলা হয়, ওয়েন দুবার চলচ্চিত্রের উদ্বোধনী প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে হুট করে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেছিলেন। গ্রান্ডেকে জড়িয়ে ধরার পরপরই সহ-অভিনেত্রী সিনথিয়া এরিভো জোর করে ওয়েনকে সরিয়ে দেন। এরপর নিরাপত্তাকর্মীরা ওয়েনকে বের করে নিয়ে আসেন।
ওয়েন দ্বিতীয়বারও নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরোনোর চেষ্টা করেন। তবে নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে থামিয়ে দেন।
পরে ওয়েন এ ঘটনার একাধিক ভিডিও তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেন। সেখানে তিনি গ্রান্ডেকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন যে তিনি পুলিশের কাছ থেকে ‘মুক্ত’ হয়েছেন।
পরদিন সিঙ্গাপুর পুলিশ ওয়েনকে গ্রেপ্তার করে এবং তাঁর বিরুদ্ধে জনপরিসরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অভিযোগ আনা হয়। ওয়েন দোষ স্বীকার করেছেন।
কৌঁসুলিরা অভিযোগ করেন, ওয়েন ধারাবাহিকভাবে এমন ঘটনা ঘটিয়ে আসছেন। তিনি ইচ্ছে করে এ ধরনের আচরণ করেন এবং অনলাইনে জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য সেগুলো প্রকাশ করে থাকেন।
ওয়েন এর আগে কেটি পেরি এবং দ্য উইকেন্ডের কনসার্টে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার ভিডিও পোস্ট করেছেন। তিনি বিভিন্ন খেলাধুলার ম্যাচেও মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন। অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, তাঁকে কিছু স্টেডিয়ামে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে এবং বড় অঙ্কের জরিমানা গুনতে হয়েছে।