শান্তি আলোচনার প্রস্তাব নিয়ে ইউক্রেনে মার্কিন প্রতিনিধি দল
Published: 20th, November 2025 GMT
রাশিয়ার সাথে ‘যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা’ করতে পেন্টাগনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইউক্রেনে পৌঁছেছেন। মার্কিন সেনা সচিব ড্যান ড্রিসকলের নেতৃত্বে দলটি বৃহস্পতিবার সকালে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া সভিরিডেনকোর সাথে আলোচনা করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
মার্কিন প্রতিনিধি দল রাতেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে দেখা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বুধবার থেকে খবর আসতে শুরু করেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি নতুন প্রস্তাবিত কাঠামো প্রস্তুত করেছে। এই কাঠামোতে ইউক্রেনের কাছ থেকে অঞ্চল ছেড়ে দেওয়া এবং নাটকীয়ভাবে সামরিক বাহিনীর সদস্য হ্রাস করাসহ বড় ধরনের ছাড়ের প্রয়োজন।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ এবং রাশিয়ার বিশেষ দূত কিরিল দিমিত্রিভ এটি খসড়া করেছেন বলে জানা গেছে।
ওয়াশিংটন বা মস্কো কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে এই পরিকল্পনার কথা নিশ্চিত করেনি।
তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক্স-এ লিখেছেন, “টেকসই শান্তি অর্জনের জন্য উভয় পক্ষকে কঠিন কিন্তু প্রয়োজনীয় ছাড়ে সম্মত হতে হবে। এই যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য সম্ভাব্য ধারণাগুলোর একটি তালিকা তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্র উভয় পক্ষের সাথে পরামর্শ করছে।”
জানুয়ারিতে ট্রাম্পের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ড্রিসকলের দলটি কিয়েভে ভ্রমণকারী সবচেয়ে সিনিয়র সামরিক দল। তার সাথে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল র্যান্ডি জর্জ, ইউরোপে মার্কিন সেনাবাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল ক্রিস ডোনাহু এবং সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট মেজর মাইকেল ওয়েইমার যোগ দিয়েছেন।
বিষয়টির সাথে পরিচিত ব্যক্তিদের উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস, ফিনান্সিয়াল টাইমস এবং রয়টার্স জানিয়েছে, পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে কিয়েভকে পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাসের অঞ্চলগুলো ছেড়ে দিতে হবে, সশস্ত্র বাহিনীর আকার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে হবে এবং তার অনেক অস্ত্র ত্যাগ করতে হবে।
তবে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বারবার রাশিয়ার কাছে কোনো আঞ্চলিক ছাড়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন র
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে ‘যুক্তরাষ্ট্র ও রুশ কর্মকর্তাদের গোপন পরিকল্পনার’ বিষয়ে জানে না মস্কো
প্রায় চার বছর ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে গোপনে একটি খসড়া পরিকল্পনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস এ তথ্য সামনে এনেছে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী কিয়েভকে মস্কোর কাছে তাদের কিছু ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে হবে। কমাতে হবে নিজেদের সামরিক বাহিনীর আকার। তবে এমন পরিকল্পনার বিষয়ে অবগত না থাকার কথা জানিয়েছে মস্কো।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, খসড়া এই পরিকল্পনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও ক্রেমলিনের উপদেষ্টা কিরিল দিমিত্রিয়েভ। মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে পর্দার আড়ালে যোগাযোগ করে এই পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্প প্রশাসন এই পরিকল্পনায় সমর্থন জানিয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
অনানুষ্ঠানিক এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে কিছু ভূখণ্ড রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দিতে হবে কিয়েভকে। যদিও যুদ্ধ থামাতে এমন কোনো ছাড়ের কথা প্রথম থেকে নাকচ করে আসছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। পরিকল্পনায় কিয়েভকে মার্কিন সামরিক সহায়তা কমানো এবং ইউক্রেন বাহিনীর বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার কমানোর কথা বলা হয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর পরিকল্পনা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি হোয়াইট হাউস। তবে বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও লিখেছেন, ‘টেকসই শান্তির জন্য ইউক্রেন ও রাশিয়া—দুই পক্ষকে কঠিন কিন্তু প্রয়োজনীয় কিছু ছাড় দিতে হবে। এ কারণেই যুদ্ধ থামাতে আমাদের সম্ভাব্য সব পরিকল্পনা তৈরি করে যেতে হবে।’
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এমন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চলছে না বলে জানিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। আজ বৃহস্পতিবার রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভাও বলেছেন, ইউক্রেন নিয়ে খসড়া কোনো পরিকল্পনা ওয়াশিংটনের কাছ থেকে পায়নি মস্কো। যুক্তরাষ্ট্র এমন কোনো পরিকল্পনা করলে তা অবশ্যই কূটনৈতিকভাবে রাশিয়ার কাছে পাঠাতে হবে।
যুদ্ধ বন্ধের পরিকল্পনা ফাঁস হওয়া নিয়ে জল্পনার মধ্যেই গত বুধবার কিয়েভ সফরে গেছেন মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রতিনিধিরা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর সচিব ড্যানিয়েল ড্রিসকোল। ইউক্রেনে মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুদ্ধ থামাতে জেলেনস্কিসহ দেশটির বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন মার্কিন প্রতিনিধিরা।
এদিকে গতকাল বুধবার রাতভর পশ্চিম ইউক্রেনে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। দেশটির তেরনোপিল শহরের বিভিন্ন বহুতল ভবন ও জ্বালানি স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়। ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল জানিয়েছে, হামলায় ৩ শিশুসহ অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৩ জন।