চিকিৎসার অবহেলায় কিশোরীর মৃত্যু: চট্টগ্রামে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 23rd, June 2025 GMT
চট্টগ্রামে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় এক কিশোরীর মৃত্যুর অভিযোগে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আদালতে নালিশি মামলা হয়েছে। আজ সোমবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালতে মামলাটি করেন কিশোরীর বাবা পলাশ কুসুম নন্দী। মারা যাওয়া কিশোরী অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অভিযোগটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী নুরে হুদা।
মামলায় অভিযুক্ত তিন চিকিৎসক হলেন নগরের আসকার দীঘির পাড়ে অবস্থিত নিউ লাইফ হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্তব্যরত চিকিৎসক সমৃদ্ধি চৌধুরী, হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুমন চক্রবর্তী ও চিকিৎসক অনিরুদ্ধ ঘোষ।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তাঁর কিশোরী মেয়ে প্রজ্ঞা নন্দী দীর্ঘদিন ধরে মাইগ্রেনে ভুগছিলেন এবং সে অনুযায়ী ওষুধ খেত। ২ জুন হঠাৎ বমি ও দুর্বলতা অনুভব করলে তাঁরা তাকে নিউ লাইফ হসপিটালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক স্যালাইন দেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, মেয়ে সুস্থ আছে, ভর্তি করার প্রয়োজন নেই।
বাদীর অভিযোগ, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মেয়েকে স্যালাইন দেওয়া হয় এবং ক্যানুলার মাধ্যমে ইনজেকশন পুশ করা হয়। স্যালাইন দেওয়ার ২০ মিনিটের মধ্যেই মেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তখন কোনো পরীক্ষা–নিরীক্ষা বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই কেন ইনজেকশন পুশ করা হলো জানতে চাইলে চিকিৎসকেরা বিরক্তি প্রকাশ করেন। কিশোরীর জ্ঞান না ফেরায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনার অনুরোধও উপেক্ষা করা হয়।
পরে বিকেলে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও রাত ১০টার দিকে রোগীকে ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হয়। এরপর অন্য একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান, কিশোরী অনেক আগেই মারা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে নিউ লাইফ হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক র
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার ফাঁসি কার্যকরের দাবি শহীদ রাকিবুলের মা-বাবার
শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ঝিনাইদহের রাকিবুল হোসেনের মা ও বাবা।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আরো পড়ুন:
ফ্যাসিবাদ ও জুলুমের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক রায়: খেলাফত মজলিস
রায়ে খুশি শহীদ আবু সাঈদের বাবা-মা
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন—বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
রায়ের পর সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় শহীদ রাকিবুল হোসেনের বাবা আবুবকর সিদ্দিক ও মা হাফিজা খাতুন সাংবাদিকদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে উল্লিখিত দাবি জানান।
হাফিজা খাতুন বলেছেন, শেখ হাসিনা তার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল। আদালতে আজ সব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। শহীদের মা হিসেবে আমি আজ আংশিক সন্তুষ্ট। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ, আল্লাহ যেন আমাকে হায়াত দেন। আমি যেন শেখ হাসিনার ফাঁসি কার্যকর দেখে যেতে পারি।
আবুবকর সিদ্দিক বলেন, শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছাদুজ্জামান খান কামালসহ জুলাই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত সকলের ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। যারা গণহত্যা চালিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছে, তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। দেশের মাটিতে ফিরিয়ে এনে তাদের ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হবে। আজ আমরা খুশি। শেখ হাসিনা বহু মায়ের বুক খালি করেছে। একজন নারী হয়েও সে কীভাবে এত মায়ের সন্তানকে হত্যার আদেশ দিয়েছে, তা আমরা ভেবে পাই না।
ঢাকা/সোহাগ/রফিক