ঠাকুরগাঁওয়ে জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে তালা, মানুষের ভোগান্তি
Published: 24th, June 2025 GMT
ঠাকুরগাঁও জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের চত্বরে দলিল লেখক কল্যাণ সমবায় সমিতির স্থাপনাকে কেন্দ্র করে মূল ফটকে তালা দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে জেলা দলিল লেখক সমিতির বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকালে নিজ কার্যালয়ে এমন অভিযোগ করেন জেলা রেজিস্ট্রার হেলাল উদ্দিন। কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা দেয়ার ফলে সেবা নিতে মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন।
সরেজমিন দেখা যায়, রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের বাইরে কাঠ দিয়ে ছাউনি নির্মাণের কাজ করাচ্ছেন দলিল লেখক সমিতির লোকেরা। কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলছে। যার ফলে কার্যালয়ের ভিতরে ঢুকে কেউ কাজ করতে পারছে না। সেবা নিতে এসে সাধারণ মানুষেরা ভোগান্তিতে পড়েছে।
আরো পড়ুন:
স্কাউটিংয়ের অভিজ্ঞতায় ভবিষ্যতের পৃথিবী রচনায় এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধা বাড়ল
রেজিস্ট্রার অফিসে সেবা নিতে আসা ওমর ফারুক, তানভীর, হাসানসহ বেশ কয়েকজন জানান, দুপুরে দলিল লেখকের লোকেরা তালা মেরে দিয়েছেন। তাদের নিজেদের ঝামেলা, আর সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
দলিল লেখক সমিতির লোকেরা অনেক দিন ধরে জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের চত্বরে টেবিল-চেয়ার পেতে তাদের কাজ করে আসছেন। তারা জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে রোদ-বৃষ্টিতে তাদের কাজ করতে সমস্যার কথা বলেন। জেলা রেজিস্ট্রার তাদের কার্যালয়ের হলরুম ব্যবহার করার কথা বলেন।
ঠাকুরগাঁও দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ সরকার ও সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘‘প্রায় ৪ বছর ধরে নির্দিষ্ট জায়গার জন্য আমরা লড়াই করছি। যেখানে সরকারের রাজস্ব আদায়ে আমরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখি, সেখানে কেউ আমাদের কথা শুনছেন না। কর্মকর্তাদের অনুমতিতে আমরা ওই জায়গায় বসা শুরু করেছিলাম। এখন বর্ষাকাল হওয়ার কারণে বৃষ্টি ও রোদ থেকে বাঁচতে অস্থায়ী ছাউনি দিচ্ছিলাম। কিন্তু জেলা রেজিস্ট্রার এই কাজে বাধা দেন।’’
ঠাকুরগাঁও জেলা রেজিস্ট্রার হেলাল উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘‘সকালে দলিল লেখক সমিতির লোকেরা আমার অফিসের সামনে দখল করে কিছু পিলায় লাগিয়ে দেয়। সেই সময় তারা কিছু গাছ তুলে ফেলে। তাদের চাওয়া আমার অফিসের সামনে ঘর বানিয়ে বসার স্থান করবে। আমি তাদের বারণ করায় তারা আমাকে ও আমার অন্য কর্মচারীদের হুমকি দিয়ে থাকে। এরপর কোনো কারণ ছাড়া তারা আমাদের অফিসে এসে সাধারণ জনগণকে হুমকি দেন যাতে কেউ দলিল না করেন। এক পর্যায়ে জনগণকে বের করে কার্যালয়ে মূল ফটকে তালা মেরে দেয়। আমাদের অবরুদ্ধ করে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘এরপর সাধারণ মানুষ রুখে দাঁড়ালে তারা তালা খুলে দেয়।’’
ঢাকা/হিমেল/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র ম ল ফটক র অফ স ঠ ক রগ ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন সেতু নির্মাণে কত সময় লাগবে, কত খরচ হবে
নগরের শীতল ঝরনা খালের ওপর ভেঙে দুই ভাগ হয়ে পড়া সেতুর জায়গায় নতুন সেতু নির্মাণে চলতি সপ্তাহেই দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে নতুন সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির। এতে ব্যয় হবে ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা।
গত বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টায় ভারী বর্ষণের সময় নগরের বায়েজিদ বোস্তামী সড়কের স্টারশিপ গলির মুখে ভেঙে যায় একটি সেতুর এক পাশ। শীতল ঝরনা খালের ওপর অবস্থিত এই সেতুর আরেক পাশ দিয়ে যান চলাচল করছে। তবে সেতুর এই পাশটিও ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানান সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলীরা।
এই সেতু দিয়ে নগরের ২ নম্বর গেট থেকে অক্সিজেন যাতায়াত করেন লোকজন। নগরের ২ নম্বর গেট থেকে অক্সিজেনমুখী সড়কের ওপর থাকা সেতুর অংশ ভেঙে যায়। বর্তমানে অক্সিজেন থেকে ২ নম্বর গেটমুখী অংশ চালু আছে।
রোববার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, ভেঙে যাওয়া সেতুর এক পাশে টিনের ঘেরাও দেওয়া হয়েছে। সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে এবং ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সতর্কতামূলক ব্যানার টানানো হয়েছে। এ ছাড়া খননযন্ত্র দিয়ে সেতুর উপকরণগুলো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলীরা জানান, নগরের বায়েজিদ বোস্তামী সড়ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সড়ক। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ হাজার গাড়ি চলাচল করে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটির এক পাশ ভেঙে গেছে। আরেক পাশও ধসে পড়তে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেতুটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের আগেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এখন এই প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হয়েছে। ঠিকাদার নিয়োগের জন্য আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় শীতল ঝরনা খালের ওপর নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে সেতুর নকশা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ব্যয়ও ঠিক করা হয়েছে। যার পরিমাণ ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা। নতুন সেতুর প্রশস্ততা হবে ২৩ মিটার। এর দৈর্ঘ্য ১৫ মিটার। আগে দৈর্ঘ্য ছিল ছয় মিটার।
সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক জসীম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গুরুত্ব বিবেচনায় শীতল ঝরনা খালের ওপর নতুন সেতু নির্মাণে বিশেষভাবে উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা। এ জন্য দ্রুত দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর নির্মাণকাজ শুরু হবে। নতুন সেতু নির্মাণ করতে অন্তত এক থেকে দেড় বছর সময় লাগবে। তবে চেষ্টা করবেন আরও আগে কাজ শেষ করার জন্য।
প্রকল্প পরিচালক জানান, সেতুটির দুই পাশের নির্মাণকাজ একসঙ্গে করা যাবে না। প্রথমে ভেঙে যাওয়া অংশে কাজ করা হবে। এরপর পাশের অংশে কাজ করবেন তাঁরা। সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল এক প্রকৌশলী প্রথম আলোকে বলেন, সেতুর দরপত্রপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অন্তত দেড় মাস সময় লাগবে। এরপর ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হবে। তাই নির্মাণকাজ শুরু করতে দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগবে।
চট্টগ্রাম নগর থেকে উত্তর চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটিতে যাতায়াত করতে বায়েজিদ বোস্তামী সড়ক ব্যবহার করেন লোকজন। আবার এই সড়কের দুই পাশে রয়েছে পোশাক কারখানা, ইস্পাত কারখানাসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান। আছে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ এবং ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতো খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ফলে এই সড়কের গুরুত্ব অনেক বেশি।