স্বামীর গোপনাঙ্গ কেটে পুকুরে ফেলে দেন কল্পনা
Published: 25th, June 2025 GMT
চাঁদপুরে ঘুমন্ত অবস্থায় স্বামী উজ্জ্বলের গোপনাঙ্গ কেটে নেওয়ার কারণ জানিয়েছেন তার স্ত্রী কল্পনা। উজ্জ্বল আগের বিয়ের তথ্য গোপন রেখে একে একে চারটি বিয়ে করলেও কোনো স্ত্রীকেই ভরণ-পোষণ দিতেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উজ্জ্বলের গোপনাঙ্গ কেটেছেন বলে স্বীকার করেছেন কল্পনা।
বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে মতলব উত্তর থানা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এসব কথা বলেছেন কল্পনা।
আরো পড়ুন: তৃতীয় বিয়ে করায় যুবকের গোপনাঙ্গ কাটলেন দ্বিতীয় স্ত্রী
এর আগে মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে গ্রামে এলে এলাকাবাসী কল্পনা বেগমকে ধরে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
কল্পনা বেগম বলেছেন, “উজ্জ্বল মিথ্যা কথা বলে আমাকে বিয়ে করেছে। আমার আগে তার দুই স্ত্রী ছিল। আমাকে বিয়ের করার পরও আরেকটি বিয়ে করে। আমাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। আমার কোনো খোঁজ নেয় না। আমি ও আমার দেড় বছরের মেয়ে রোজা আক্তারের কোনো খরচ দেয় না সে। আমি ডিভোর্স চাইলে সে দেয়নি। মারধর করত। ঘটনার দিন আমাকে নিয়ে যেতে আমাদের বাড়িতে আসে। রাতে রাগের মাথায় ব্লেড দিয়ে কাজটা করেছি। পরে তার গোপনাঙ্গ পুকুরে ফেলে দিয়েছি।”
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, উজ্জ্বলের প্রথম স্ত্রী আফরোজার ঘরে দুই ছেলে সন্তান আছে। দ্বিতীয় স্ত্রী রোজিনা ও তৃতীয় কল্পনা বেগম। চতুর্থ স্ত্রীকে নিয়ে উজ্জ্বল কুমিল্লা শহরে থাকতেন। কল্পনার নিজের অতীত জীবনও বিতর্কিত। তিনি এর আগে দাউদকান্দির পদুয়া গ্রামের মো.
সোমবার রাতে উজ্জ্বলের গোপনাঙ্গ কাটার পর অজ্ঞাত এক ব্যক্তি মো. উজ্জ্বলের ফোন থেকে তার চতুর্থ স্ত্রী ফারজানাকে কল করে বিষয়টি জানান। ফারজানা গিয়ে উজ্জ্বলকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রবিউল হক বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ও সংবেদনশীল। অভিযুক্ত কল্পনা বেগমকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অপরাধ স্বীকার করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা/জয়/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পদ্মা-মেঘনায় মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। আগামীকাল ৪ অক্টোরব থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত চাঁদপুরের হাইমচরের চরভৈরবী থেকে মতলব উত্তরের ষাটনল পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার অংশে এই নিষধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলেদের সর্তক করতে নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে চালানো হচ্ছে সেচেতনতামূলক প্রচারণা।
আরো পড়ুন:
মৌসুম শেষে খালি ট্রলার নিয়ে কূলে ফিরছেন জেলেরা
পটুয়াখালীতে ৫ কেজির পোয়া মাছ ৮০ হাজারে বিক্রি
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) চাঁদপুর অঞ্চলের নৌ-পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান জানান, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে গত বুধবার থেকেই চাঁদপুর সদরের আনন্দবাজার, লালপুর মৎস্যবাজার, আমীরাবাদ ঘাট, চর উমেদ ও রাজরাজেশ্বর এলাকায় পথসভা ও লিফলেট বিতরণ করছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগ। পর্যায়ক্রমে হাইমচর ও মতলব উত্তর এবং দক্ষিণে প্রচারণা চালানো হবে।
জেলেদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “২২দিন ধৈর্য ধারণ করে মা ইলিশ রক্ষায় জেলে ভাইরা সক্রিয় ভূমিকা রাখলে এবং সরকার প্রদত্ত সহায়তা কার্যক্রমে অংশ নিলে তারাই বড় ও অনেক অনেক ইলিশ পাবেন। এর পরেও কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কয়েকজন জেলে জানান, তারা নৌকা ও জাল নদীতে ফেলা বন্ধ রাখলেও অন্য জেলা থেকে প্রতিবার চাঁদপুরের নৌ সীমানায় ঢুকে ইলিশ ধরে নিয়ে যায় জেলেরা। পাশাপাশি শিশুদের জেলে বানিয়ে নদীতে নামিয়ে একদল দুষ্কৃতকারী ইলিশ ধরতে ব্যস্ত থাকে। দ্রুত সময়ে যাতে সরকার নির্ধারিত চাল তারা পান সেজন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জেলেরা।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, “ইলিশের জন্যই চাঁদপুর সারা দেশে পরিচিত। মা ইলিশকে নিরাপদে ডিম ছাড়তে না দিলে ভবিষ্যতে এই মাছের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই পদ্মা-মেঘনা নদীতে মা ইলিশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এই নিষেধাজ্ঞা শুধু শাস্তির জন্য নয় বরং জেলেদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য। এখন যদি আমরা মা ইলিশ রক্ষা করি আগামী দিনে আরো বেশি ইলিশ পাওয়া যাবে এবং উপকৃত হবে জেলেরাই।”
তিনি বলেন, “আইন অমান্য করলে মৎস্য সংরক্ষণ আইনে শাস্তির বিধান রয়েছে। জেলেদের সহায়তায় সরকার খাদ্য সহায়তা ও বিকল্প কর্মসংস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। চাঁদপুরের ৪৫ হাজার ৬১৫ জেলে পরিবারকে এ বছর ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে, যা গতবারের তুলনায় ৫ কেজি বেশি।”
“নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচরের চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। এ সময়ে কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ, মৎস্য বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ টিম প্রতিদিন নদীতে টহল দেবে। তাই আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে অসাধু জেলেদের নানা বিষয় নিয়ে। তবেই বড় বড় ও বেশি ইলিশ পাওয়া যাবে,” যোগ করেন তিনি।
ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ