চবিতে শিবিরের কোরআন অলিম্পিয়াড ও বইপাঠ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ
Published: 28th, June 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে আয়োজিত কোরআন অলিম্পিয়াড ও বই পাঠ প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২৮ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সংগঠনটির চবি শাখা।
অনুষ্ঠানে মাহে রমজান উপলক্ষ্যে কোরআন অলিম্পিয়াড এবং পলাশী দিবস উপলক্ষ্যে বইপাঠ প্রতিযোগিতায় ৬৫ জন বিজয়ী শিক্ষার্থীর মাঝে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
আরো পড়ুন:
কুবিতে জাতীয় ইন্টারডিসিপ্লিনারি সম্মেলন অনুষ্ঠিত
হাল্ট প্রাইজ প্রতিযোগিতায় ‘প্রোগ্রাম অফ দ্যা ইয়ার’ চবি
শাখা শিবিরের সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহ-সেক্রেটারি জেনারেল ও শাখা শিবিরের সাবেক সভাপতি ড.
প্রধান আলোচক ছিলেন আরবি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. গিয়াস উদ্দিন তালুকদার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, “আজ এই কুরআন অলিম্পিয়াড ও বইপাঠ প্রতিযোগিতা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, যদি আমরা সত্যিকার অর্থে দেশ ও জাতির কল্যাণ চাই, তবে কুরআনের আলোকে গড়া নৈতিক নেতৃত্বই হতে পারে তার ভিত্তি। আমরা এমন একটি সমাজ চাই, যেখানে অন্যায়-অবিচার থাকবে না, শোষণহীন ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। ইসলামী আদর্শে গড়ে উঠা ছাত্রসমাজই পারে সে রাষ্ট্র বিনির্মাণের নেতৃত্ব দিতে।”
তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আগামী দিনের দেশ নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ন্যায়, মানবিকতা ও আল্লাহভীতির ভিত্তিতে একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠনে পথপ্রদর্শক হবে।”
প্রধান আলোচক অধ্যাপক ড. গিয়াস উদ্দিন তালুকদার বলেন, “পবিত্র কোরআনই সর্বশেষ আসমানি কিতাব, এরপর আর কোনো কিতাব আসবে না। সুতরাং কোরআন ব্যতীত আমাদের আর কোনো পথপ্রদর্শনকারী গ্রন্থ নেই। এই পৃথিবীতে যখন সত্য এসেছে, মিথ্যা-জুলুম বিতাড়িত হয়েছে। লক্ষ লোকের ফুৎকারে যেমন সূর্যের আলো ম্লান হয় না, তেমনি কোরআনের নুর ম্লান করার ক্ষমতা পৃথিবীর কোনো শক্তির নেই।”
শাখা শিবির সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, “ইসলামী ছাত্রশিবির জ্ঞানের প্রতিযোগিতা সবসময়ই জারি রেখেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি এ ধরনের আয়োজন না হয়, তাহলে জাতি পথ হারানোর দিকে অগ্রসর হবে। আমরা চাই, আমাদের ক্যাম্পাসের ভাই-বোনেরা নৈতিক মানুষ হিসেবে গড়ে উঠুক। কোরআনের নৈতিকতা নিয়ে যদি একজন শিক্ষার্থী নিজেকে গড়ে তুলতে পারে, তাহলে ভবিষ্যতে সে কখনো দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ হবে না।”
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুরে মেতেছে বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা
দিনাজপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিজয়া দশমীতে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী সিঁদুর খেলা।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর থেকে শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ও প্রতিমা বিসর্জন কেন্দ্রে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, শিশু ও প্রবীণ সবাই অংশ নেন এই আনন্দঘন উৎসবে।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন
বুড়িগঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন, সদরঘাটে ভক্তদের ঢল
শঙ্খধ্বনি, ঢাক-ঢোলের তালে প্রতিমার সামনে একে অপরের মুখে, কপালে ও গালে সিঁদুর লেপন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ভক্তরা। লাল রঙে রঙিন হয়ে ওঠে চারপাশ, সৃষ্টি হয় এক অনিন্দ্যসুন্দর পরিবেশ। সিঁদুর খেলাকে কেন্দ্র করে শহরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।
দিনাজপুর শহরের বড় মণ্ডপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে একই দৃশ্য দেখা গেছে। প্রতিমা বিসর্জনের আগে এভাবেই মা দুর্গাকে বিদায় জানান ভক্তরা।
পণ্ডিতদের মতে, বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা মূলত মা দুর্গাকে বিদায়ের আগে তাকে শুভকামনা ও আশীর্বাদ জানানোর একটি প্রতীকী রীতি। বিশেষত বিবাহিত নারীরা একে অপরকে সিঁদুর পরিয়ে স্বামীর দীর্ঘায়ু ও পরিবারের মঙ্গল কামনা করেন।
দিনাজপুর শহরের রাজবাটি, কালীতলা, বড় মণ্ডপসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ছিল এই উৎসবের প্রাণবন্ত আয়োজন। ছোট-বড় সবাই লাল সিঁদুরে রঙিন হয়ে একে অপরকে আলিঙ্গন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
শেষ বিকেলে ঢাক-ঢোলের বাদ্য, শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি শুরু হয়। দিনাজপুরে সিঁদুর খেলার এ উৎসব শুধু ধর্মীয় আবেগ নয়, বরং বাঙালি সংস্কৃতির প্রাণের এক রঙিন প্রকাশ।
স্থানীয় পূজারী সুবর্ণা রায় বলেন, “মা দুর্গাকে বিদায় জানাতে মন খারাপ লাগে। তবে সিঁদুর খেলা আনন্দের মধ্য দিয়ে সেই বিষাদকে কিছুটা কমিয়ে দেয়।”
অর্পিতা এক কলেজ ছাত্রী জানান, সারা বছর অপেক্ষা করি দুর্গাপূজার জন্য। আজকের দিনটা আবেগের, আবার আনন্দেরও। মা-কে বিদায় জানালেও সিঁদুর খেলায় মন ভরে যায়।
দিনাজপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, “সিঁদুর খেলা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এই খেলায় আমরা শুধু আনন্দই পাই না, বরং ঐক্যের বার্তাও ছড়িয়ে যায়।”
আরেক তরুণ ভক্ত রুবেল দেবনাথ বলেন, “সিঁদুর খেলা শুধু একটি আচার নয়, এটি আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ও আনন্দ ভাগাভাগি করার এক বিশেষ উপলক্ষ।”
ঢাকা/মোসলেম/মেহেদী