বাংলাদেশে প্রথম ইনডিপেনডেন্ট আইএফআরএস এস–১ ও এস–২ রিপোর্ট প্রকাশ করল ব্র্যাক ব্যাংক
Published: 8th, July 2025 GMT
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ইনডিপেনডেন্ট আইএফআরএস ‘এস–১’ ও ‘এস–২’ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। ইন্টারন্যাশনাল সাসটেইনেবিলিটি স্ট্যান্ডার্স বোর্ডের (আইএসএসবি) তৈরি জলবায়ু ও টেকসই ঝুঁকি প্রকাশের বৈশ্বিক ফ্রেমওয়ার্ক অনুসরণ করে এ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রথম ইনডিপেনডেন্ট রিপোর্ট প্রকাশের মধ্য দিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাংক হিসেবে নতুন প্রবর্তিত এই স্ট্যান্ডার্ড গ্রহণ করেছে। শুধু বাংলাদেশেই প্রথম নয়, বিশ্বব্যাপী হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও ব্র্যাক ব্যাংক একটি, যারা এই স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্র্যাক ব্যাংকের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, করপোরেট সুশাসন ও ক্লাইমেট গভর্ন্যান্সের প্রতি প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
২০২৩ সালে এই ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ডস (আইএফআরএস) এস–১ ও এস–২ স্ট্যান্ডার্ডস প্রবর্তিত হয়, যা সাসটেইনেবিলিটি ও জলবায়ু–সম্পর্কিত আর্থিক তথ্য প্রকাশে একটি সমন্বিত ও বিনিয়োগকারীকেন্দ্রিক কাঠামো প্রদান করে। ব্র্যাক ব্যাংক নিজস্ব উদ্যোগে ব্যাংকটির ২০২৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে এই কাঠামোগুলো অনুসরণ করার অগ্রণী পদক্ষেপ নিয়েছে, যা উদীয়মান অর্থনীতির আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে।
এই প্রতিবেদনে টেকসই ও জলবায়ু–সম্পর্কিত ঝুঁকি ও সুযোগে কীভাবে ব্র্যাক ব্যাংক এক্সপোজার শনাক্ত, পরিচালনা ও প্রকাশ করে থাকে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এতে বোর্ড লেভেলের ইএসজি ওভারসাইট, ব্যবসায়িক কৌশলে টেকসই অন্তর্ভুক্তিকরণ, জলবায়ু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি এবং স্কোপ–১, স্কোপ–২ ও স্কোপ–৩ নির্গমনসহ ব্যাংকটির পূর্ণাঙ্গ গ্রিনহাউস গ্যাস (জিএইচজি) নির্গমনের বিস্তারিত ম্যাট্রিক্স উল্লেখ করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য দিক হলো, এটি বৈশ্বিক পিসিএএফ (পার্টনারশিপ ফর কার্বন অ্যাকাউন্টিং ফিন্যান্সিয়ালস) পদ্ধতি প্রয়োগ করে ফিন্যান্সড নির্গমন রিপোর্ট প্রকাশ করে। এটি জলবায়ু প্রভাব পরিমাপের এমন একটি উন্নত পদ্ধতি, যা উন্নয়নশীল দেশগুলোয় খুব একটা অনুসরণ করা হয় না।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ায় এটি রেগুলেটর, বিনিয়োগকারী, উন্নয়ন অংশীদার ও যাঁরা দায়িত্বশীল ও ভবিষ্যৎমুখী আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুঁজছেন, এমন সব গ্রাহককে ব্যাংকটি সম্পর্কে একটি বিস্তারিত ধারণা দিচ্ছে। এটি সুশাসন, কৌশল ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং প্রতিষ্ঠানের ম্যাট্রিক্স–সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে কাজ করে।
বাংলাদেশ যখন তীব্র পরিবেশগত ঝুঁকির সম্মুখীন, তখন এই উদ্যোগ কীভাবে একটি স্থানীয় ব্যাংক নিজেদের ঝুঁকি কাঠামো, ঋণদান পোর্টফোলিও ও কৌশলগত দিকনির্দেশনার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক মান বজায় রাখতে পারে, সেটি আমাদের সামনে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। ব্র্যাক ব্যাংক এরই মধ্যে সেক্টরভিত্তিক কার্বন নিঃসরণ রোধের কৌশলগুলো নিয়ে এগিয়ে গেছে এবং ক্লাইমেট স্ট্রেস পরীক্ষার পদ্ধতিগুলো আরও শক্তিশালীকরণে কাজ করছে।
এই যুগান্তকারী প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক ক্লাইমেট গভর্ন্যান্সে ব্যাংকটির অগ্রণী ভূমিকা ও নেতৃত্ব স্থানকে আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী এবং ইএসজি রেটিং এজেন্সিগুলোর বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে নিজের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করেছে। নীতিনির্ধারক ও নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রতিবেদনটি এক উল্লেখযোগ্য মাধ্যম। জলবায়ু–সম্পর্কিত ফিন্যান্সিয়াল ডিসক্লোজারকে কীভাবে স্থানীয়করণ, পরিচালনা ও ব্যাংকিং খাতে বিস্তৃত করা যেতে পারে, তার একটি উল্লেখযোগ্য মডেল হিসেবে এই প্রতিবেদন ভূমিকা রাখবে।
ব্র্যাক ব্যাংকের এমন প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়ে ব্যাংকটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও (কারেন্ট চার্জ) তারেক রেফাত উল্লাহ খান বলেন, ‘স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সুশাসন হলো ব্র্যাক ব্যাংকের দায়িত্বশীল ব্যাংকিংয়ের মূল ভিত্তি। ব্র্যাক ব্যাংক যে কেবল মুনাফা অর্জনের বিষয়েই নয়; বরং পরিবেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সহ অন্য অনেক বিষয় নিয়েও কাজ করে, এ প্রতিবেদনটি সেটিরই এক পূর্ণাঙ্গ প্রকাশ। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের প্রতিবেদনটি কেবল ব্যাংকিং খাতেই নয়; বরং বাংলাদেশের করপোরেট খাতেও অনুকরণীয় বেঞ্চমার্ক স্থাপন করবে, যা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকেও এ ধরনের রিপোর্ট প্রকাশে উদ্বুদ্ধ করবে।’
ব্র্যাক ব্যাংকের ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনটি পাওয়া যাবে: https://www.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রক শ র আর থ ক উল ল খ জলব য
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো ২ জনের শরীরে জিকা ভাইরাস শনাক্ত
চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো দুই জনের শরীরে জিকা ভাইরাস পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে থেকে এ তথ্য জানানো হয়। আক্রান্তদের মধ্যে একজন পুরুষ ও একজন নারী। সোমবার নগরীর একটি বেসরকারি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় জিকা ভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত করা হয়।
চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, নগরের বেসরকারি একটি ল্যাবে দুই জনের শরীরে জিকা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার থেকে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, এপিক হেলথ কেয়ারে একটি কম্বাইন কিটের মাধ্যমে দুই জনের শরীরে জিকা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়। এ কিট একাধিক ভাইরাস শনাক্তে ব্যবহৃত হয়। চূড়ান্ত নিশ্চিতকরণে আরও কিছু পরীক্ষা করানো হচ্ছে। আক্রান্ত পুরুষের জ্বর, শরীর ব্যথা এবং শরীর লালচে হয়ে গেছে। নারীর জ্বর, হাত-পা ব্যথা ও ফুলে গেছে।
আইইডিসিআরের তথ্য অনুযায়ী, জিকা ভাইরাসের কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। আক্রান্ত ব্যক্তিকে বিশ্রাম নিতে হবে। প্রচুর পানি ও তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। জ্বর ও ব্যথার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেতে হবে। জিকা ভাইরাসে আক্রান্তদের প্রায় ৮০ শতাংশের মধ্যে কোনো উপসর্গই দেখা যায় না। বাকি ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট উপসর্গ প্রকাশ পায়। আক্রান্তদের মধ্যে চামড়ায় লালচে দানার মতো ছোপ (র্যাশ), মাথা ব্যথা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, মাংসপেশি ও গিঁটে ব্যথা হয়। সাধারণত আক্রান্ত হওয়ার ৩ থেকে ১২ দিনের মধ্যে উপসর্গগুলো দেখা দেয় এবং এই উপসর্গ ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হতে পারে।