ধানের মৌসুমে অস্থির চাঁপাইনবাবগঞ্জের চালের বাজার
Published: 9th, July 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারে চালের দামে অস্থিরতা বিরাজ করছে। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৬-৮টাকা পর্যন্ত। কৃষকের হাতে ধান না থাকা, মিলারদের বিপুল মজুতের কারণে চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে বলে দাবি খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতাদের। আকস্মিক দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রশাসনের কার্যকর নজরদারির অভাবকে দুষছেন তারা।
ধান মজুত করে চালের দাম বাড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মিল মালিকরা। তাদের দাবি, সরকরি নির্দেশনা অনুযায়ী যতটুকু ধান মজুত রাখার কথা, সেই অনুযায়ী ধান রাখছেন তারা। খাদ্য অধিদপ্তরের যারা দায়িত্বে আছেন, তাদের দিয়ে মনিটরিং করালেই বিষয়টি আরো স্পষ্ট হবে বলে দাবি তাদের।
বাজার ঘুরে জানা গেছে- বর্তমানে আমন ধানের মোটা চাল ৫৬-৫৮ টাকা কেজি, বোরো ধানের সরু চাল ৭৮-৮০ টাকা, বোরো ধানের মাঝারি চাল ৬৫-৭২ টাকা এবং ওই ধানের মোটা চাল ৫৬-৫৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সবমিলিয়ে বাজারে ৫৬ টাকার নিচে কোনো চালই বিক্রি হচ্ছে না।
আরো পড়ুন:
অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতার পথে: ড.
আইপিও ৬ মাসে শেষ করা হবে : ডিএসই চেয়ারম্যান
চাল ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সাম্প্রতিক সময়ে কৃষকরা ঘরে ধান তুলে মিলার ও বিভিন্ন মোকামে বিক্রি করেছেন। কাজেই বর্তমানে জেলায় চালের কোনো সঙ্কট থাকার কথা নয়। এরপরও এ ভোগ্যপণ্যটির দাম বাড়ছে। এখনই দামে লাগাম না টানলে মিলার চালের দাম বাড়াতেই থাকবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন তারা। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে অবৈধ মজুতদারদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুরাতন বাজারের চাল ব্যবসায়ী কাউসার আহমেদ বলেন, “মিল মালিকদের অবৈধ মজুতের কারণে বাজারে ধানের দাম বাড়ছে। ধানের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে।”
অপর ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, কৃষকের কাছে কম দামে ধান সংগ্রহ করে এবারো মজুত করছেন মিলাররা। চালের কৃত্রিম সঙ্কট দেখিয়ে দাম বাড়াচ্ছেন তারা। তাদের উৎপাদিত চাল ইচ্ছে মতো দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।”
ক্রেতারা জানান, মূলত ঈদুল আজহার পরপরই চালের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়। খুচরা ও পাইকারি বাজারে সব ধরনের চালের দাম ৬-৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
শিবগঞ্জ পৌর এলাকার চালের ক্রেতা ওমর ফারুক বলেন, “বাজারে চালের দাম বেড়েছে। মোটা চালের ২৫ কেজির বস্তায় আগের থেকে ১৫০ টাকা বাড়তি যোগ করতে হচ্ছে। এখন ধানের ভরা মৌসুম। এ সময়ে চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়াটা অযৌক্তিক।”
ধান মজুত করে চালের দাম বাড়ানোর অভিযোগের বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মিল মালিক বলেন, “খাদ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা ছাড়া আমরা বাড়তি কোনো কাজ করি না। এখানে যারা দায়িত্বে আছেন, তাদের দিয়ে মনিটরিং করালেই আরো স্পষ্ট হওয়া যাবে, আমাদের কাছে কতটুক কি মজুত আছে।”
শিমুল অটোরাইস মিলের মালিক ওমর খৈয়ম শিমুল রাইজিংবিডিকে বলেন, “সরকরি নির্দেশনা অনুযায়ী যতটুকু ধান মজুত রাখার কথা, সেই অনুযায়ী ধান রাখি। আমাদের এখানে নির্ধারিত পরিমাণের চেয়েও কম ধান মজুত আছে। কারসাজির সঙ্গে আমরা জড়িত নই।”
তিনি আরো বলেন, “ঈদুল আজহার পর ধানের দাম বৃদ্ধিসহ রাইস ব্র্যান পাউডারের দাম স্থির না থাকায় চালের দাম বেড়েছে।”
ভরা মৌসুমেও চালের দাম বেড়ে যাওয়াকে কারসাজি বলছে ভোক্তাদের সংগঠন ক্যাব। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষি সংস্কার কমিশন গঠনসহ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম।
তিনি বলেন, “শুধু চালকল মালিকরা নয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় অনেকই বাড়ির মধ্যে চাল মজুত রেখেছেন। এসব অবৈধ গোডাউনে অভিযান চালানো হলে স্থানীয় বাজারে চালের দাম কমে আসবে।”
বাজার তদারকির বিষয়ে জানতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ফজলে এলাহীর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/মেহেদী/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ প ইনব বগঞ জ র অন য য় ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
সুজন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার কমিটি গঠন
সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন এর নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে কমিটি পুনর্গঠন ও পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
১৮ অক্টোবর শনিবার নারায়ণগঞ্জের আলী আহমদ চুলকা নগর পাঠাগার ও মিলন আয়তনের পাতাল মেঝেতে সুজন নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে এই সভা অনুষ্ঠিত হয় । সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা সাবেক সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল ।প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুজন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সমন্বয়কারী জিল্লুর রহমান।
আজ সভার প্রথম অধিবেশনে সুজন নারায়ণগঞ্জ জেলাধীন রূপগঞ্জ আড়াইহাজার সোনারগাঁ বন্দর ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ শাখার সভাপতি সাধারণ সম্পাদক এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার কর্মকর্তা সদস্য গণ মতামত পর্বে অংশগ্রহণ করেন।
উপস্থিত সকলের মতামত ও প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে চলমান নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন কমিটি গঠনে সকলে একমত পোষণ করেন ।
দ্বিতীয় অধিবেশনে সুজন সোনারগাঁ উপজেলা শাখার সভাপতি সহ অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে সরাসরি প্রস্তাব ও সমর্থনের ভিত্তিতে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কার্যনির্বাহী পরিষদ ২০২৫-২৭ গঠন করা হয় ।
উপস্থিত সকলের প্রস্তাব ও সমর্থনে সভাপতি হিসেবে ধীমান সাহা জুয়েলকে পুনরায় এবং সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক আশুকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয় ।
কেন্দ্রীয় সহ সমন্বয়কারী জিল্লুর রহমান কমিটির ঘোষণা দেন নব নির্বাচিত কমিটির অন্যরা হলেন, সহ-সভাপতি হিসেবে ওমর হায়দার রানা ও এডভোকেট শাহিদুল ইসলাম টিটু,সহ-সম্পাদক মাকসুদা ইয়াসমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান,, অর্থ সম্পাদক , দপ্তর সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিন্টু , প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তালুকদার আব্দুল্লাহ আল ফারুক রিংকু, কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ মোক্তার হোসেন, অ্যাডভোকেট তানহা রহমান, জহিরুল ইসলাম বিদ্যুৎ, ফররুখ আহমেদ, আবুল হাসান, মোহাম্মদ সেলিম ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট আহম্মেদ শরীফ পারভেজ, সাবিত আল হাসান, মোঃ আবু সাঈদ, মোঃ আল আমিন আলী, মোঃ নজরুল ইসলাম সুজন, শাহ আলম ভুইয়া ও মজিবুর রহমান প্রমুখ।