যুক্তরাষ্ট্র সফরের দ্বিতীয় দিনে গতকাল বুধবার ক্যাপিটল হিলে কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এ সফরের উদ্দেশ্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৌদি আরবের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তাবিষয়ক সম্পর্ক আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় শক্তিশালী করে তোলা। এ সময় তাঁর বিরুদ্ধে থাকা মানবাধিকার–সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমালোচনা পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়েছে।

গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে মোহাম্মদ বিন সালমানকে জাঁকজমকপূর্ণ অভ্যর্থনা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১৮ সালে ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যুবরাজের পক্ষে তিনি প্রকাশ্যে সাফাইও গান। যদিও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলেছিল, যুবরাজের অনুমোদনেই তাঁকে হত্যার অভিযান পরিচালিত হয়েছিল।

গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে নৈশভোজের আয়োজন করেন ট্রাম্প। এতে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন, সিনেটে বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান জিম রিশ এবং প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র কমিটির চেয়ারম্যান ব্রায়ান মাস্টসহ কয়েকজন রিপাবলিকান সদস্য।

জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর সৌদি যুবরাজকে যুক্তরাষ্ট্রে কূটনৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে দেখা হতো। এ হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগের কারণে কংগ্রেসের অনেকেই তাঁর তীব্র সমালোচনা করেছিলেন এবং বিভিন্ন সময় জবাবদিহির দাবি তুলেছিলেন। তবে চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফরের মধ্য দিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর ভাবমূর্তি ফিরে পেয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও একসময় সৌদি যুবরাজের কড়া সমালোচক ছিলেন। কিন্তু গত মঙ্গলবার ওভাল অফিসের বৈঠকে তিনি যুবরাজের ঠিক কাছেই বসেছিলেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওই বৈঠকে মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রশংসা করেন। তিনি বারবার বলেন, যুবরাজের মতো বন্ধু পাওয়া তাঁর জন্য সম্মানের।

তবে প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সৌদি যুবরাজকে নিয়ে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল একেবারেই ভিন্ন। তখন ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে সৌদি আরবের ভূমিকা মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং তুরস্কে সৌদি কনস্যুলেটে খাসোগি হত্যাকাণ্ডের কারণে মার্কিন আইনপ্রণেতারা ক্ষুব্ধ ছিলেন।

কংগ্রেস থেকে বারবার যুবরাজকে জবাবদিহি করার দাবি উঠেছিল। তবে এবার সেই কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলেই তাঁকে বন্ধুত্বপূর্ণভাবে স্বাগত জানান হলো। তবে অন্যান্য বিশ্বনেতাকে যেভাবে জাঁকজমকপূর্ণভাবে অভ্যর্থনা দেওয়া হয়, তাঁর ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যায়নি।

প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন এই অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। কিছু ডেমোক্র্যাট এবং ট্রাম্পের কিছু রিপাবলিকান সহকর্মীও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। তবে এ অনুষ্ঠানের বিষয়ে আগে থেকে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে স্পিকারের দপ্তর কোনো সাড়া দেয়নি।

সাধারণত বিদেশি নেতারা কংগ্রেসে এলে আয়োজন করে ছবি তোলা বা প্রকাশ্যে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পান। তবে যুবরাজের ক্ষেত্রে তা দেখা যায়নি।

আরও পড়ুনট্রাম্প ও সৌদি যুবরাজের বৈঠকের উল্লেখযোগ্য বিষয় কী কী ছিল১৬ ঘণ্টা আগে

প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র কমিটির চেয়ারম্যান ব্রায়ান মাস্ট বলেন, এটি ছিল ‘অসাধারণ’ একটি বৈঠক। সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ সংস্কার, ইসরায়েল-গাজা পরিস্থিতি, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং চীনা গুপ্তচরবৃত্তি মোকাবিলাসহ নানা বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

আরও পড়ুনখাসোগি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না সৌদি যুবরাজ : ট্রাম্প১৯ নভেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হত য ক ণ ড র য ক তর ষ ট র য বর জ র

এছাড়াও পড়ুন:

খাসোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে সমালোচিত সৌদি যুবরাজ এবার মার্কিন কংগ্রেসে পেলেন উষ্ণ অভ্যর্থনা

যুক্তরাষ্ট্র সফরের দ্বিতীয় দিনে গতকাল বুধবার ক্যাপিটল হিলে কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এ সফরের উদ্দেশ্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৌদি আরবের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তাবিষয়ক সম্পর্ক আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় শক্তিশালী করে তোলা। এ সময় তাঁর বিরুদ্ধে থাকা মানবাধিকার–সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমালোচনা পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়েছে।

গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে মোহাম্মদ বিন সালমানকে জাঁকজমকপূর্ণ অভ্যর্থনা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১৮ সালে ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যুবরাজের পক্ষে তিনি প্রকাশ্যে সাফাইও গান। যদিও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলেছিল, যুবরাজের অনুমোদনেই তাঁকে হত্যার অভিযান পরিচালিত হয়েছিল।

গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে নৈশভোজের আয়োজন করেন ট্রাম্প। এতে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন, সিনেটে বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান জিম রিশ এবং প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র কমিটির চেয়ারম্যান ব্রায়ান মাস্টসহ কয়েকজন রিপাবলিকান সদস্য।

জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর সৌদি যুবরাজকে যুক্তরাষ্ট্রে কূটনৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে দেখা হতো। এ হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগের কারণে কংগ্রেসের অনেকেই তাঁর তীব্র সমালোচনা করেছিলেন এবং বিভিন্ন সময় জবাবদিহির দাবি তুলেছিলেন। তবে চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফরের মধ্য দিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর ভাবমূর্তি ফিরে পেয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও একসময় সৌদি যুবরাজের কড়া সমালোচক ছিলেন। কিন্তু গত মঙ্গলবার ওভাল অফিসের বৈঠকে তিনি যুবরাজের ঠিক কাছেই বসেছিলেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওই বৈঠকে মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রশংসা করেন। তিনি বারবার বলেন, যুবরাজের মতো বন্ধু পাওয়া তাঁর জন্য সম্মানের।

তবে প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সৌদি যুবরাজকে নিয়ে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল একেবারেই ভিন্ন। তখন ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে সৌদি আরবের ভূমিকা মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং তুরস্কে সৌদি কনস্যুলেটে খাসোগি হত্যাকাণ্ডের কারণে মার্কিন আইনপ্রণেতারা ক্ষুব্ধ ছিলেন।

কংগ্রেস থেকে বারবার যুবরাজকে জবাবদিহি করার দাবি উঠেছিল। তবে এবার সেই কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলেই তাঁকে বন্ধুত্বপূর্ণভাবে স্বাগত জানান হলো। তবে অন্যান্য বিশ্বনেতাকে যেভাবে জাঁকজমকপূর্ণভাবে অভ্যর্থনা দেওয়া হয়, তাঁর ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যায়নি।

প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন এই অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। কিছু ডেমোক্র্যাট এবং ট্রাম্পের কিছু রিপাবলিকান সহকর্মীও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। তবে এ অনুষ্ঠানের বিষয়ে আগে থেকে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে স্পিকারের দপ্তর কোনো সাড়া দেয়নি।

সাধারণত বিদেশি নেতারা কংগ্রেসে এলে আয়োজন করে ছবি তোলা বা প্রকাশ্যে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পান। তবে যুবরাজের ক্ষেত্রে তা দেখা যায়নি।

আরও পড়ুনট্রাম্প ও সৌদি যুবরাজের বৈঠকের উল্লেখযোগ্য বিষয় কী কী ছিল১৬ ঘণ্টা আগে

প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র কমিটির চেয়ারম্যান ব্রায়ান মাস্ট বলেন, এটি ছিল ‘অসাধারণ’ একটি বৈঠক। সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ সংস্কার, ইসরায়েল-গাজা পরিস্থিতি, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং চীনা গুপ্তচরবৃত্তি মোকাবিলাসহ নানা বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

আরও পড়ুনখাসোগি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না সৌদি যুবরাজ : ট্রাম্প১৯ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ