‘বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা বন্ধের ঝুঁকিতে’
Published: 11th, July 2025 GMT
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, আরো অর্থ না পেলে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। তাদের সহায়তার জন্য ২৫৫ মিলিয়ন ডলারের আবেদন করা হয়েছে, যার মাত্র ৩৫ শতাংশ অর্থায়ন করা হয়েছে। শুক্রবার জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র বাবর বালুচ এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী বসতি দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের শিবিরগুলোতে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নৃশংস অভিযানের পর তাদের বেশিরভাগই পালিয়ে এসেছেন।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র বাবর বালুচ বলেছেন, “আমাদের কী প্রয়োজন এবং কী সম্পদ উপলব্ধ রয়েছে তার মধ্যে বিশাল ব্যবধান রয়েছে। এই তহবিল ঘাটতি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার উপর প্রভাব ফেলবে। কারণ তারা খাদ্য, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার জন্য প্রতিদিন মানবিক সহায়তার উপর নির্ভরশীল।
রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়া ও চীনের ক্রমবর্ধমান ভয়ের কারণে প্রতিরক্ষা ব্যয়কে অগ্রাধিকার দেওয়ার কারণে প্রধান দাতাদের তহবিল হ্রাসের ফলে মানবিক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত দিয়ে বালুচ বলেন, “বিশ্বব্যাপী তীব্র তহবিল সংকটের কারণে, নতুন আগত শরণার্থী ও ইতিমধ্যে উপস্থিত উভয়েরই গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা পূরণ হবে না এবং অতিরিক্ত তহবিল নিশ্চিত না করা হলে সমগ্র রোহিঙ্গা শরণার্থী জনগোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।”
ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা বন্ধ হয়ে যাবে।
ইউএনএইচসিআর অনুসারে, গত ১৮ মাসে কমপক্ষে এক লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসেছেন। বৌদ্ধ অধ্যুষিত মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইন রাজ্যের বেশিরভাগ মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও নিপীড়ন হাজার হাজার মানুষকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য করেছে।
বালুচ বলেন, “বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এই স্থানান্তর.
ঢাকা/শাহেদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শরণ র থ দ র সহ য ত র জন য তহব ল
এছাড়াও পড়ুন:
১৮ মাসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গা: ইউএনএইচসিআর
্সআস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে চলমান সংঘাত এবং বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যকে লক্ষ্যবস্তু করায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে। ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। গত কয়েক মাসে এ সংখ্যা আরও বেড়েছে। ইউএনএইচসিআর ও অন্যান্য দাতা সংস্থা এসব শরণার্থীকে মানবিক সহায়তা দিতে কাজ করে যাচ্ছে।
ইউএনএইচসিআর বলছে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে উদারভাবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। কক্সবাজারে মাত্র ২৪ বর্গকিলোমিটারে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। দেড় বছরে আরও দেড় লাখ যুক্ত হয়েছে। ফলে এলাকাটি বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ স্থানের একটিতে পরিণত হয়েছে।
নতুন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করা এসব রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে প্রায় ১ লাখ ২১ হাজার জনের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর। এসব শরণার্থীর বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এদের অধিকাংশই জনাকীর্ণ শরণার্থী শিবিরগুলোতে বসবাস করছে।
সংস্থাটি বলছে, শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা মূলত সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। ফলে নতুন করে শরণার্থী যোগ হওয়ায় সংকট দেখা দিয়েছে। যারা নিবন্ধিত শরণার্থী তাদের মানবিক সহায়তা প্রদান করছে দাতা সংস্থাগুলো। তবে, যারা নিবন্ধনের আওতায় আসেনি; তাদের কাছে খাবার, চিকিৎসা সেবা, শিক্ষা ও প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রীসহ মৌলিক পরিষেবা পৌঁছানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবকদের।
ইউএনএইচসিআরের শঙ্কা, বর্তমানে বৈশ্বিক সহায়তা তহবিল তীব্র সংকটের মধ্যে রয়েছে। এ অবস্থায় নতুন শরণার্থী বৃদ্ধি পেলে জরুরি পরিষেবা শৃঙ্খল ভেঙে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। শিগগির অতিরিক্ত তহবিল নিশ্চিত না করা হলে, সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে এবং প্রয়োজনীয় রান্নার জ্বালানি (এলপিজি) ফুরিয়ে যাবে। ডিসেম্বরের মধ্যে খাদ্য সহায়তা বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার শিশুর শিক্ষাসুবিধা বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। আর এদের মধ্যে প্রায় ৬৩ হাজার নতুন করে বাংলাদেশে আসা শিশু।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশ ও এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে সংহতি প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা না আসা পর্যন্ত এবং নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের পরিবেশ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানানো হয়।