এসেনসিয়াল ড্রাগসকে আনতে সক্রিয় ডিএসই, মন্ত্রণালয়ে চিঠি
Published: 11th, August 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশনা অনুযায়ী, সম্ভাবনাময় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগ (এসওই) বা সরকারি সংস্থা ও কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) পিএলসি। এ লক্ষ্যে কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা বা চিঠি পাঠিয়ে বৈঠকের আমন্ত্রণ জানানোর কাজ চলছে। ডিএসই আশা করছে, শিগগিরই লাভজনক রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করা সম্ভব হবে।
এরই ধরাবাহিকতায় সরকারি মালিকানাধীন ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডকে (ইডিসিএল) পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে ডিএসই। পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, দক্ষতা এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে সরকারের চলমান প্রচেষ্টা বাস্তবায়নে এ উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সম্প্রতি এসেনসিয়াল ড্রাগকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তিতে সহায়তা চেয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো.
আরো পড়ুন:
কারণ ছাড়াই বাড়ছে রহিমা ফুডের শেয়ারদর
পিপলস লিজিংয়ের অর্ধবার্ষিকে লোকসান বেড়েছে ১৫.৩৩ শতাংশ
ওই চিঠির অনুলিপি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ সাইদুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মকসুদ, এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম ও এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আ. সামাদ মৃধা বরাবর পাঠানো হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই পুঁজিবাজারে সরকারি কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করতে নিয়ন্ত্রক বিএসইসি নেতৃত্বে কাজ করে যাচ্ছে ডিএসই। মূলত সরকারি কোম্পানিগুলোর অনাগ্রহের কারণেই দীর্ঘদিন ধরে দফা দফায় চেষ্টা করেও তাদের পুঁজিবাজারে আনা সম্ভব হয়নি। অবশেষে পুঁজিবাজারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি গতিশীল করতে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে চলতি বছরের ১১ মে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তালিকাভুক্তির নির্দেশ দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ডিএসইর চিঠি
ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম লিখেছেন, দেশের পুঁজিবাজার টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। বিশেষ করে যখন বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন বিষয়টি খুবই প্রয়োজনীয়। এই প্রেক্ষাপটে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানির সম্ভাব্য ইক্যুইটি তালিকাভুক্তি করতে আগ্রহী।
ওষুধ খাতে কোম্পানিটির কৌশলগত ভূমিকা এবং গত দুই দশক ধরে প্রশংসনীয় ব্যবসা বৃদ্ধির রেকর্ডের পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটি বিদ্যমান নিয়ন্ত্রক কাঠামোর অধীনে তালিকাভুক্তির জন্য উপযুক্ত অবস্থানে রয়েছে। আমাদের বিশ্বাস, বর্তমান বিধিমালার আওতায় কোম্পানিটি তালিকাভুক্তির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এই ধরনের কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া সময়োপযোগী এবং বিভিন্ন দিক থেকে কার্যকর হবে। এই কোম্পানিটির পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। যেমন- কর্পোরেট সুশাসন বৃদ্ধি, বৃহত্তর কর্মক্ষম শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর অংশগ্রহণ সক্ষম করে জনসাধারণের মালিকানা সম্প্রসারণ বৃদ্ধি করবে বলে চিঠিতে জানানো হয়।
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, এসেনশিয়াল ড্রাগস একটি উচ্চ-কার্যক্ষমতা সম্পন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির তালিকাভুক্তি পুঁজিবাজারের মানদণ্ড বৃদ্ধি এবং দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। ফলে আরও সরকারি প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত হবে এবং দেশের পুঁজিবাজারকে আরো শক্তিশালী করবে। একই সঙ্গে পুঁজিবাজারের গভীরতা বৃদ্ধি ও বৈচিত্র্যকরণে অবদান রাখবে। এটি সরকারের অর্থনৈতিক সংস্কার ও স্বচ্ছতা এবং বেসরকারি খাতের উন্নয়নে নেয়া বৃহত্তর উদ্যোগকে শক্তিশালী ও বেগবান করবে।
এসেনশিয়াল ড্রাগসকে সহজ ও কার্যকরভাবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তি করতে ডিএসই সম্পূর্ণ সহযোগিতা এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করবে। ডিএসই মনে করে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এই সময়োপযোগী উদ্যোগ বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে, যা এসেনশিয়াল ড্রাগসের অংশীজন এবং জাতীয় অর্থনীতির জন্য দীর্ঘমেয়াদে সুফল বয়ে আনবে। তাই এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সুবিধাজনক সময়ে আলোচনায় বসতে আগ্রহী ডিএসই। এ বিষয়ে যে কোনো সহযোগিতা ও ব্যাখ্যার জন্য ডিএসই সদা প্রস্তুত রয়েছে বলে চিঠিতে জানানো হয়।
এ বিষয়ে জানতে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করা ও এসএমএস দেওয়া হলেও তিনি কোনো জবাব দেননি।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএসইর সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন কর্মকর্তা রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, ‘`পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগীতা চাওয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তাদের পক্ষ থেকে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। তবে ডিএসই এ বিষয়ে কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে আলোচনায় বসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’’
রাষ্ট্রীয় কোম্পানি তালিকাভুক্তিতে বিএসইসি ও ডিএসইর উদ্যোগ
গত ৭ জুলাই প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। বিশেষ করে দেশের যেসব বিদেশি বা বহুজাতিক কোম্পানিতে সরকারের মালিকানা রয়েছে, সেগুলোকে সরাসরি তালিকাভুক্তির (ডাইরেক্ট লিস্টিং) মাধ্যমে দ্রুত পুঁজিবাজারে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে শিল্প উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি।
পরবর্তীতে গত ২১ জুলাই রেল ভবনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সরকারি কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্তির লক্ষ্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সঙ্গে বৈঠক করেন খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। উভয় পক্ষের এ বৈঠকে দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের লাভজনক ও ভালো কোম্পানিগুলোর পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্তির পথকে সুগম করতে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএসইসি।
এরই ধরাবাহিকতায় গত ২৪ জুলাই লাভজনক সরকারি কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির লক্ষ্যে দেশের অন্যতম বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানির চেয়ারম্যানসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ডিএসই।
এরপর গত ২৯ জুলাই রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত বিএসইসি সঙ্গে পুঁজিবাজারের অংশীজনদের তৃতীয় মাসিক সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। সে সময় তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি তালিকাভুক্তির জন্য আমরা কাজ করছি। কিছু সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির তালিকা করে তাদের সঙ্গে বসছি। সরকার এ বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
পরবর্তীতে গত ৩১ জুলাই প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুসরণে সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বিষয়ে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। বৈঠকে সরকারি মালিকানাধীন লাভজনক মৌল ভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্তির বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়। একই সঙ্গে দেশের যেসব বিদেশি বা বহুজাতিক কোম্পানিতে সরকারের মালিকানা রয়েছে, সেগুলোকে সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে দ্রুত পুঁজিবাজারে নিয়ে আসার বিষয়েও আলোচনা হয়।
বিএসইসির দেওয়া তথ্য মতে, ইতোমধ্যে লাভজনক ১৫টি কোম্পানির তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। ওই কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো হলো- ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড, কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), সাইনোভিয়া (সাবেক স্যানোফি) বাংলাদেশ লিমিটেড, নোভার্টিস (বাংলাদেশ) লিমিটেড, সিনজেন্টা (বাংলাদেশ) লিমিটেড, নেসলে বাংলাদেশ পিএলসি, পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড, নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড, বি-আর পাওয়ারজেন লিমিটেড, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস্ কোম্পানি লিমিটেড, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড, সাধারণ বীমা কর্পোরেশন লিমিটেড ও জীবন বীমা কর্পোরেশন লিমিটেড ইত্যাদি।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে মাত্র ২০টি সরকারি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এগুলোর বাজার মূলধন ৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। সর্বশেষ ২০১২ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান। এরপর থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও সরকারি কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সরকারি কোম্পানিগুলো হলো- এটলাস বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড (বিডি সার্ভিস), বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস কোম্পানি (বিএসসিসিএল), বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি), ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো), ইস্টার্ন কেবলস, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইবিসি), যমুনা অয়েল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ন্যাশনাল টিউবস, পদ্মা অয়েল, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড, রেনউইক যজ্ঞেশ্বর, রূপালী ব্যাংক, শ্যামপুর সুগার মিলস, তিতাস গ্যাস, উসমানিয়া গ্লাস সিট ফ্যাক্টরি, লিন্ডে বাংলাদেশ ও জিলবাংলা সুগার মিলস।
ঢাকা/এনটি/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত ল ক ভ ক ত র জন য ত ল ক ভ ক ত কর ড এসইর চ র লক ষ য সরক র র ব এসইস ল ভজনক ব যবস ড এসই
এছাড়াও পড়ুন:
আন্তজার্তিক পরিমন্ডলে আলোকিত মুখ নারায়ণগঞ্জের আলিয়ার হোসেন
আন্তজার্তিক পরিমন্ডলে এক আলোকিত মুখ নারায়ণগঞ্জের কৃতি সন্তান অধ্যাপক আলিয়ার হোসেন। লন্ডনের নর্থামব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান, নেতৃত্ব ও ক‚টনৈতিক প্রশিক্ষক, সরকারি নীতি ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বিশেষজ্ঞ আলিয়ার হোসেন উচ্চ শিক্ষায় অনেকগুলো ডিগ্রী অর্জন করেছেন। আন্তজার্তিক বক্তা আলিয়ার হোসেন সংকট ব্যবস্থাপনা, কোচিং, টেকসই উন্নয়ন কৌশল, ক‚টনৈতিক এবং নির্বাহী নেতৃত্ব প্রশিক্ষণে দক্ষ একজন মানুষ।
যুক্তরাজ্য, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ এশিয়া উভয় ক্ষেত্রেই বেসরকারি, সরকারি এবং উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন স্তরে পরামর্শ, শিক্ষকতা এবং নির্বাহী প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। তিনি শিল্প ও নাগরিক সম্পৃক্ততার জন্য গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের পাশাপাশি লন্ডন ক্যাম্পাসে নিয়োগকর্তা নিয়োগ বোর্ডের উপদেষ্টা বোর্ডের চেয়ারম্যান। তিনি যুক্তরাজ্যের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টরেট (পিএইচডি এবং ডিবিএ) তত্ত¡াবধায়ক এবং পরীক্ষকও।
আলিয়ার হোসেন স্পার্কের সহ-সভাপতি এবং যুক্তরাজ্যের স্কুল অফ লিডারশিপের আহŸায়ক। প্রায়শই তিনি বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতীয় সংলাপ, বিতর্ক, টিভি টক শো, একাডেমিক এবং মূলধারার রাজনৈতিক আলোচনায় ভার্চুয়ালি এবং ব্যক্তিগতভাবে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি পরিবর্তন ব্যবস্থাপনা, এসডিজি’স কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা, মন্ত্রী পর্যায়ের এবং ক‚টনৈতিক প্রশিক্ষণ, নেতৃত্ব উন্নয়ন, কর্পোরেট সংস্কৃতি, শাসন এবং কৌশলগত নীতির জন্য মূল বক্তা এবং অধিবেশন মডারেটর হিসাবে অসংখ্য যুক্তরাজ্য, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও ব্যবসায়িক সংস্থা পরিদর্শন করেন।
তিনি যুক্তরাজ্য এবং বিদেশে এসএমই, পারিবারিক ব্যবসা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অলাভজনক সংস্থা, দাতব্য সংস্থা ও সরকারি সংস্থা থেকে শুরু করে শত শত নির্বাহী এবং ব্যক্তিদের সাথে কাজ করেছেন।
তিনি সুশাসন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই, বিশ্ব নাগরিকত্বের ধারণা, নীতিগতভাবে ব্যবসা করার গুরুত্ব এবং বিশ্ব গ্রামে টেকসই উন্নয়নের তাৎপর্য সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখতেও উৎসাহী। এই বিস্তৃত আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে আলিয়ার হোসেন দুটি সময়োপযোগী রচনা (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট হ্যান্ডবুক-এ সাউথ এশিয়ান পারস্পেক্টিভ এবং ডেভেলপিং দ্য মিনিস্ট্রিয়াল মাইন্ডসেট-এ গেøাবাল ভিউ (গুগল সার্চে পাওয়া যায়) তৈরি করেছেন যা টেকসইতা এবং শাসনে কাজ করার জন্য আহবান করা অনেকের ত্রুটিগুলো তুলে ধরে। তিনি দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে বেশ কয়েকটি অলাভজনক প্রকল্পকে সমর্থন করেন যা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা, টেকসই ব্যবসায়াকি ধারণা এবং বিনামূল্যে চিকিৎসার সাথে জড়িত।
আলিয়ার হোসেন ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা শিক্ষাবিদ, চার্টার্ড ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের সদস্য, ইনস্টিটিউট অফ কনসাল্টিং-এর সদস্য এবং যুক্তরাজ্যের উচ্চ শিক্ষা একাডেমির সিনিয়র ফেলো। তিনি ২০০৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত রয়েল ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স (চ্যাথাম হাউস) এর সাথে ৩৫ বছরের কম বয়সীদের গ্রæপে নিযুক্ত ছিলেন।
কেই এই আলিয়ার হোসেন?
আলিয়ার হোসেন নারায়ণগঞ্জের বিশিষ্ট শিল্পপতি, ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক হাজী মোজাফ্ফর আলী কন্ট্রাক্টরের নাতি, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি আলহাজ্ব আফজাল হোসেন ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা আতাহার হোসেন সামসুর ভাতিজা এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সাবেক তিনবারের এমপি এডভোকেট আবুল কালামের ভাগ্নে। চাচা আতাহার হোসেন সামসুকে দেখে ১৯৯৬ সালে নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাশ করার পর বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত হন আলিয়ার হোসেন। এবং চাচা আতাহার হোসেন সামসুর বাসায় বিএনপির বৈঠকগুলোতে উপস্থিত থাকতেন তিনি। এরপর তিনি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি কলেজে পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে তিনি যুক্তরাজ্যে যান এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উচ্চশিক্ষার জন্য নতুন যাত্রা শুরু করেন।
২০১৬ সালে নারায়ণগঞ্জ ভিত্তিক ডান্ডি ফাউন্ডেশনে যুক্ত হন আলিয়ার হোসেন। এই ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য হচ্ছে ‘সামাজিক ন্যায়বিচার, সুশাসন, মানসম্মত শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা এবং টেকসইতা প্রতিষ্ঠা করা’। এছাড়া ফাউন্ডেশনের বাইরে গিয়ে টেকসই, স্মার্ট ও আধুনিক নারায়ণগঞ্জ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এখন কাজ করছেন তিনি।