বৈশ্বিক হালাল পণ্যের বাজারে প্রবেশের লক্ষ্যে হালাল শিল্পপার্ক স্থাপনে মালয়েশিয়ার সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) কুয়ালালামপুরে শিল্প কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “চলুন, এগিয়ে যাই।”

প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে আজ সকাল সোয়া ৭টার দিকে এক পোস্টে বিষয়টি জানানো হয়।

মালয়েশিয়ার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অধীনে হালাল বিষয়ক সমন্বয়ক হাকিমাহ বিনতি মোহদ ইউসুফ। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের মহাপরিচালক সিরাজউদ্দিন বিন এবং হালাল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাইরোল সাহারি।

প্রধান উপদেষ্টাকে কর্মকর্তারা জানান, বৈশ্বিক হালাল পণ্য বাজারের বর্তমান আকার ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে। অন্তত ১৪টি হালাল শিল্পপার্ক পরিচালনা করা মালয়েশিয়া এই বাজারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশীদার। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডও এই খাতে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।

বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে বাংলাদেশেরও  এই বাজারে প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, এজন্য অবকাঠামো ও সার্টিফিকেশন ব্যবস্থার উন্নতি প্রয়োজন। বর্তমানে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ একমাত্র প্রতিষ্ঠান যা হালাল পণ্য সার্টিফাই করার অনুমোদনপ্রাপ্ত এবং এখন পর্যন্ত মাত্র ১২৪টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সার্টিফিকেট পেয়েছে।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ মালয়েশিয়ার পক্ষকে আহ্বান জানান, বাংলাদেশে হালাল শিল্পপার্ক গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় চাহিদাগুলো নির্ধারণে সহায়তার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “আমরা একসাথে কাজ করে হালাল পণ্যশিল্প গড়তে কী কী দরকার, তার একটি রূপরেখা তৈরি করতে পারি।” অনেক বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান হালাল সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত পণ্য রপ্তানিতে আগ্রহী বলেও তিনি জানান। 

প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকটিকে একটি মূল্যবান শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা হিসেবে বর্ণনা করেন। “আপনাদের এই তথ্যের জন্য ধন্যবাদ, মনে হচ্ছে যেন হালাল পণ্য নিয়ে একটি ক্লাস করলাম,” বলেন তিনি। 

প্রধান উপদেষ্টার সফরের তৃতীয় তিনের দিনের শুরুতে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া হালাল ইকোসিস্টেম খাতে সহযোগিতার জন্য একটি নোট বিনিময় করেছে। যেটাকে কর্মকর্তারা “হালাল কূটনীতি” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ইসলামিক উন্নয়ন মালয়েশিয়ার (জাকিম) মহাপরিচালক সিরাজউদ্দিন বিন সুহাইমি জানান,  শিগগিরই একটি দল বাংলাদেশে গিয়ে প্রয়োজনীয়তা মূল্যায়ন করবে।

বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.

তৌহিদ হোসেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।

ঢাকা/হাসান/ইভা

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ ল ল শ ল পপ র ক কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের ক্ষমায় যুক্তরাষ্ট্রের কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন হন্ডুরাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট

হন্ডুরাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট হুয়ান অরল্যান্ডো হার্নান্দেজকে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কারা কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট থেকে এমন তথ্য জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচারের অভিযোগে হার্নান্দেজ কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়ায় তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

ফেডারেল কারাগারের রেকর্ড অনুযায়ী, হার্নান্দেজ গত সোমবার পশ্চিম ভার্জিনিয়ার ইউএসপি হেজেলটন কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে কোকেন আমদানির ষড়যন্ত্র ও নিজের কাছে মেশিনগান রাখার অভিযোগে হার্নান্দেজকে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তাঁকে তখন ৪৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

হার্নান্দেজ হন্ডুরাসের ন্যাশনাল পার্টির সদস্য। তিনি ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সহিংসভাবে মাদক চোরাচালানের ষড়যন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রে শত শত টন কোকেন পাচারে সহযোগিতার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করতে ২০২২ সালের এপ্রিলে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

গত শুক্রবার ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছিলেন, হার্নান্দেজের সঙ্গে রূঢ ও অন্যায় আচরণ করা হয়েছিল।

গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে হার্নান্দেজের স্ত্রী আনা গার্সিয়া দে হার্নান্দেজ ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমার স্বামী এখন একজন মুক্ত মানুষ।’

হার্নান্দেজ হন্ডুরাসের ন্যাশনাল পার্টির সদস্য। তিনি ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সহিংসভাবে মাদক চোরাচালানের ষড়যন্ত্র ও যুক্তরাষ্ট্রে শত শত টন কোকেন পাচারে সহযোগিতার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করতে ২০২২ সালের এপ্রিলে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বিচার চলাকালে নিউইয়র্কের কৌঁসুলিরা বলেছিলেন, হার্নান্দেজ মধ্য আমেরিকার দেশ হন্ডুরাসকে ‘মাদক চক্রের নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রের মতো’ পরিচালনা করেছেন। তিনি চোরাচালানিদের আইনের হাত থেকে সুরক্ষা দেওয়ার বিনিময়ে লাখ লাখ ডলার ঘুষ নিয়েছেন।

কারাদণ্ডের পাশাপাশি হার্নান্দেজকে ৮০ লাখ ডলার জরিমানা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের আদালত।

রোববার এয়ার ফোর্স ওয়ান উড়োজাহাজের ভেতর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প হার্নান্দেজকে ক্ষমা করে দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি দাবি করেন, হার্নান্দেজের বিরুদ্ধে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন সাজানো তদন্ত করেছে।

রোববার এয়ার ফোর্স ওয়ান উড়োজাহাজের ভেতর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প হার্নান্দেজকে ক্ষমা করে দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি দাবি করেন, হার্নান্দেজের বিরুদ্ধে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন সাজানো তদন্ত করেছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি (হার্নান্দেজ) দেশটির (হন্ডুরাস) প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আর এ কারণেই মূলত তারা তাঁকে মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে দিয়েছে।’

হার্নান্দেজকে এমন সময়ে মুক্তি দেওয়া হলো, যখন কিনা হন্ডুরাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল নিয়ে উত্তেজনা চলছে।

হন্ডুরাসে গত রোববার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। এরই মধ্যে ভোট গণনায় দেরি হওয়াকে কেন্দ্র করে নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হন্ডুরাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মধ্যপন্থী লিবারেল পার্টির নেতা সালভাদর নাসরাল্লা রক্ষণশীল প্রার্থী নাসরি আসফুরার চেয়ে সামান্য এগিয়ে গেছেন। গতকাল মঙ্গলবার প্রায় ৬৮ শতাংশ ভোট গণনা শেষে নির্বাচন কর্তৃপক্ষ এমন তথ্য দিয়েছে। আসফুরা হলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-সমর্থিত প্রার্থী।

আরও পড়ুনহন্ডুরাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প–সমর্থিত প্রার্থীর চেয়ে এগিয়ে গেলেন নাসরাল্লা৩ ঘণ্টা আগে

গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ আংশিক ভোট গণনায় প্রাপ্ত সর্বশেষ ফল প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, ৬৮ শতাংশ ভোট গণনা শেষে নাসরাল্লা পেয়েছেন ৪০ দশমিক ১৩ শতাংশ ভোট এবং ন্যাশনাল পার্টির আসফুরা পেয়েছেন ৩৯ দশমিক ৭১ শতাংশ ভোট।

হন্ডুরাসের নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রাথমিকভাবে দ্রুত ভোট গণনার ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। এতে যে ওয়েব পোর্টালে তাৎক্ষণিকভাবে ফলাফলের তথ্য হালনাগাদ করার কথা ছিল, সেটিতেও সমস্যা তৈরি হয়েছে।

গত সোমবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, হন্ডুরাস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘যদি তারা এটা করে, তবে তাদের কঠিন পরিণতি হবে। হন্ডুরাসের মানুষ ৩০ নভেম্বর বিপুল সংখ্যায় ভোট দিয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ