হুমকিতে গান বন্ধ, ৬ দিন পর গাইতে শুরু করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্মান্ধ পরিবারটি
Published: 3rd, December 2025 GMT
জন্ম থেকেই অন্ধ হেলাল মিয়া (৬৫)। তাঁর পরিবারের ১৩ সদস্যের ৯ জনই জন্মান্ধ। মূলত গান গেয়ে পাওয়া আয়ে পরিবারটির সংসার চলে। প্রায় ৫০ বছর ধরে গানই তাঁদের একমাত্র পেশা। কিন্তু সম্প্রতি কিছু লোকের বাধার কারণে তাঁদের গান থামাতে হয়, বন্ধ হয়ে যায় আয়ের পথ। ছয় দিন পর গতকাল মঙ্গলবার থেকে তাঁরা আবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চ–সংলগ্ন এলাকায় গান গাইতে শুরু করেছেন।
হেলাল মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার রাজঘর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ছাড়াও পরিবারের অন্য দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সদস্যরা হলেন হেলালের ছেলে সাদেক মিয়া (৪৫), ফারুক মিয়া (৩০), তারেক মিয়া (২৫) ও বারেক মিয়া (২০), মেয়ে খায়রুন্নেছা (৪০), নাতনি রোকসানা বেগম (১৬), নাতি মোস্তাকিম (১১) ও মুজাহিদ (১০)। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে আবদুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চ–সংলগ্ন এলাকায় সপরিবারে গান গেয়ে সংসার চালান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাউলশিল্পী আবুল সরকারের বিচারের দাবিতে সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। গত বুধবার দুপুরে তাঁদের কয়েকজন পৌর মুক্তমঞ্চে গিয়ে হেলাল ও তাঁর পরিবারকে গান গাইতে বাধা দেন এবং ভিক্ষা করে সংসার চালানোর পরামর্শ দেন। আবার গান গাইলে তাঁদের হারমোনিয়াম, ঢোলসহ অন্য সরঞ্জাম ভেঙে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। ওই সময় হেলাল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ভয়ে নিজেদের গ্রামের বাড়ি রাজঘর এলাকায় চলে যান। এতে আয়ের পথ বন্ধ থাকায় তাঁরা কষ্টে দিন পার করছিলেন।
পরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা সমাধানের উদ্যোগ নেন। তিনি জেলার আলেম-উলামাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। মাদ্রাসার কোনো শিক্ষার্থী হেলাল ও তাঁর পরিবারকে গান গাইতে দেবে না বলে আশ্বাস দেন তাঁরা। পরে হাফিজুরকে বিষয়টি জানানো হয়। গতকাল সকাল থেকে তাঁরা সপরিবারে আবার পৌর মুক্তমঞ্চে গান শুরু করেন।
এ বিষয়ে হেলাল মিয়া বলেন, হাফিজুর রহমান মোল্লাসহ বিএনপি কয়েকজন নেতা তাঁকে গান গাওয়ার বিষয়ে সুযোগ করে দিয়েছেন। শঙ্কা থাকলেও গতকাল তাঁরা গান গেয়েছেন।
হাফিজুর রহমান মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুনেছি কিছু যুবক তাঁদের গান গাইতে নিষেধ করেছিলেন। আশা করি, এখন আর কোনো সমস্যা হবে না।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় প র ম ক তমঞ চ র পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
জার্মানিতে সেনাবাহিনীর ২০ হাজার গুলি চুরি, কে কীভাবে এ কাণ্ড ঘটাল
জার্মানির স্যাক্সনি-আনহাল্ট রাজ্যের বুর্গ শহরে সেনাবাহিনীর ব্যারাকে যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হওয়া একটি ডেলিভারি ট্রাক থেকে হাজার হাজার গুলি চুরি হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে এ চুরির বিষয় নিশ্চিত করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
এই গুলি কে বা কারা চুরি করেছে, তা এখনো জানা যায়নি। চালক অনির্ধারিত স্থানে ট্রাক থামানোয় এ ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছে মন্ত্রণালয়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জার্মানির দুই সংবাদমাধ্যম এমডিআর ও সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ডেয়ার স্পিগেলকে চুরির ঘটনাটি গত ২৫ নভেম্বর ঘটেছে বলে জানানো হয়েছে।
স্যাক্সনি-আনহাল্ট রাজ্যে গোলাবারুদ ‘হারানোর’ ঘটনা আগেও ঘটেছে। এ ছাড়া গত কয়েক মাসে বার্নবুর্গ ও আইসলেবেন শহরে পুলিশের গোলাবারুদ খোয়া যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।জার্মান সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, একটি বেসামরিক মালিকানাধীন ট্রাক সেদিন গুলি বহন করছিল। রাত হওয়ায় বুর্গের একটি হোটেলের পার্কিংয়ে ট্রাক থামান চালক। পরের দিন ট্রাক ব্যারাকে পৌঁছানোর পর বেশকিছু গুলি উধাও হয়ে যাওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে।
তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যায়, পিস্তলের প্রায় ১০ হাজারটি তাজা গুলি ও প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহৃত অ্যাসল্ট রাইফেলের ৯ হাজার ৯০০ গুলি ট্রাকে নেই।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা চুরির বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে নিয়েছি। এসব গুলি ভুল হাতে পড়া উচিত নয়।’ মন্ত্রণালয় আরও মনে করছে, চালকের এমন জায়গায় ট্রাক থামানো ঠিক হয়নি।
চুরির ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, তা জানতে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় তদন্ত শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।
স্যাক্সনি-আনহাল্ট রাজ্যে গোলাবারুদ ‘হারানোর’ ঘটনা আগেও ঘটেছে। এ ছাড়া গত কয়েক মাসে বার্নবুর্গ ও আইসলেবেন শহরে পুলিশের গোলাবারুদ খোয়া যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।