মেয়ের মুখে বাবা ডাক শোনা হলো না রিয়াদের
Published: 3rd, December 2025 GMT
পড়াশোনা শেষ করেননি। এর মধ্যেই দেড় বছর আগে বিয়ে করেন। পড়াশোনার পাশাপাশি এলাকায় একটি দোকান পরিচালনা করে সংসার চালাতেন হাসান রিয়াদ (২৬)। তাঁর একমাত্র সন্তানের জন্ম হয় সাত মাস আগে। নাম রাখেন সিদরাতুল মুনতাহা। মেয়ের মুখে বাবা ডাক শুনবেন—এ প্রতীক্ষায় দিন কাটছিল তাঁর। তবে বাবা ডাক আর শোনা হয়নি। মেয়ের মুখে কথা ফোটার আগেই সড়ক দুর্ঘটনায় না ফেরার দেশে চলে যেতে হয়েছে রিয়াদকে।
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন হাসান রিয়াদ (২৬)। গত সোমবার রাতে উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের বার আউলিয়া ডিগ্রি কলেজের সামনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ট্রাকচাপায় মারা যান মোটরসাইকেল আরোহী রিয়াদ।
রিয়াদ চরম্বা ইউনিয়নের লুকতার বরপাড়া এলাকার আবদুল কুদ্দুসের ছেলে। লোহাগাড়ার চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদ্রাসার ফাজিল শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে ছিলেন সবার বড়।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ধরে তিন কিলোমিটার উত্তরে বার আউলিয়া গেট। সেখান থেকে বার আউলিয়া সড়ক ধরে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে চার কিলোমিটার এগোলেই চরম্বা জামছড়ি সেতু এলাকা। সেখান থেকে গ্রামীণ সড়ক ধরে আধা কিলোমিটার উত্তরে রিয়াদদের আধপাকা ও টিনশেডের বাড়ি।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, পুরো বাড়িতে সুনসান নীরবতা। কারও মুখে কোনো কথা নেই। পারিবারিক কবরস্থানে রিয়াদের দাফন শেষে আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন। বাড়িতে অনেকটা অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে রয়েছেন রিয়াদের মা সাজেদা বেগম ও স্ত্রী ফাতিমা সাদিয়া।
প্রথম সন্তান মেয়ে হওয়ায় অনেক খুশি হয়েছিল রিয়াদ। মেয়েকে ছাড়া বাইরে এক রাতও থাকত না। বাবা ডাক শোনার কত ইচ্ছা ছিল রিয়াদের। মেয়ের মুখে বাবা ডাক শোনার আগেই আমার ছেলেটা চলে গেল।আবদুল কুদ্দুস, নিহত রিয়াদের বাবাবাড়ির সামনে রিয়াদের বাবা আবদুল কুদ্দুস বসে ছিলেন। তাঁর কোলে তখন রিয়াদের সাত মাস বয়সী মেয়ে। আবদুল কুদ্দুস প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথম সন্তান মেয়ে হওয়ায় অনেক খুশি হয়েছিল রিয়াদ। মেয়েকে ছাড়া বাইরে এক রাতও থাকত না। বাবা ডাক শোনার কত ইচ্ছা ছিল রিয়াদের। মেয়ের মুখে বাবা ডাক শোনার আগেই আমার ছেলেটা চলে গেল।’
রিয়াদের বাবা আরও বলেন, বাবার স্নেহ বুঝে ওঠার আগেই তাঁকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলল ছোট্ট মেয়েটি। রিয়াদের স্ত্রী ও মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়েই এখন পরিবারের সবাই দুশ্চিন্তায়।
বাড়ির উঠানে কথা হয় নিহত রিয়াদের খালাতো ভাই মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সোমবার রাতে উপজেলার বড় হাতিয়া ইউনিয়নের মগদিঘীর পাড় এলাকায় তিনি, তাঁর আরেক খালাতো ভাইসহ রিয়াদ নানার বাড়িতে দাওয়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে মোটরসাইকেলে বাড়িতে ফেরার পথেই দুর্ঘটনা ঘটে।
মাহমুদুল বলেন, ‘আমি, রিয়াদ ও সাইফুল ইসলাম নানা ও বড় মামার কবর জিয়ারত করে নানাবাড়িতে রাতের খাবার খেয়েছি। এরপর সেখান থেকে বের হই রাত ১১টার দিকে। রিয়াদ একটি মোটরসাইকেলে ছিল, আমরা দুজন পৃথক মোটরসাইকেলে পেছনে ছিলাম। হঠাৎ একটি ট্রাক উল্টো পথে এসে রিয়াদকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল ক দ দ স র আগ ই প রথম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
জেএসএইচএলকে পাবলিক লিমিটেডে রূপান্তর করবে জেএমআই হসপিটাল
পুঁজিবাজারে ওষুধ ও রসায়ন খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের (জেএইচআরএমএল) পরিচালনা পর্ষদ তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান জেএমআই স্পেশালাইজড হাসপাতাল লিমিটেডকে (জেএসএইচএল) প্রাইভেট লিমিটেড থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
তথ্য মতে, কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি জেএসএইচএলে অতিরিক্ত ১০ কোটি ৬০ লাখ ৭ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছে। এতে মোট বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ৩১ কোটি ৬০ লাখ ৭ হাজার টাকা।
সভায় আলোচনা শেষে পরিচালনা পর্ষদ সিদ্ধান্ত নেয় যে, জেএসএইচএলে আর কোনো অতিরিক্ত বিনিয়োগ করা হবে না। পাশাপাশি জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেড তাদের শেয়ারহোল্ডিং ৫০ শতাংশের নিচে নামাবে। এর ফলে জেএমআই স্পেশালাইজড হাসপাতাল লিমিটেড সহযোগী থেকে অ্যাসোসিয়েট কোম্পানিতে রূপান্তরিত হবে। তবে কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠানের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব বজায় রাখবে বলে জানানো হয়েছে।
কোম্পানিটি আরো জানায়, রূপান্তর কার্যক্রম সম্পন্ন হলে জেএমআই স্পেশালাইজড হাসপাতাল লিমিটেড আরো বড় পরিসরে পরিচালিত হতে পারবে এবং ভবিষ্যতে মূলধন সংগ্রহের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে।
ঢাকা/এনটি/এস