কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের (সিএসসি) জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সম্মেলনে যোগ দিতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের বুধবার দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল। সেই পরিকল্পনা বাদ দিয়ে তিনি আজ মঙ্গলবার ভারতের রাজধানীতে গেছেন।

ভারতের একটি কূটনৈতিক সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছে, খলিলুর রহমান সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার পরে দিল্লিতে পৌঁছেছেন। ভারতের ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ সচিবালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো এই প্রতিবেদককে জানিয়েছে, সিএসসির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সপ্তম সম্মেলন আগামী বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দিল্লির হায়দরাবাদ হাউজে অনুষ্ঠিত হবে। সকালে জোটের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সম্মেলন শুরু হবে। আর মধ্যহ্নভোজের পর তা শেষ হবে। ওই দিন বিকেলেই খলিলুর রহমানের ঢাকার উদ্দেশে দিল্লি ছাড়ার কথা রয়েছে।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এমন এক সময়ে দিল্লিতে গেলেন যখন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের জন্য ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.

তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রত্যপর্ণ চুক্তি অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর জন্য অনুরোধ করে ভারতকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের দিল্লি অবস্থানকালে তাঁর সঙ্গে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয় কি না তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে।

অজিত দোভাল কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সম্মেলনে যোগ দিতে গত মাসে খলিলুর রহমানকে আমন্ত্রণ জানান। তাঁর এই সফর নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের বেশি সময়ে মাত্র দুজন উপদেষ্টার ভারত সফর হচ্ছে। এর আগে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইন্ডিয়া এনার্জি উইকে অংশ নিতে জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ভারত সফরে যান।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট দ র

এছাড়াও পড়ুন:

আইনি ব্যবস্থা নারীর প্রতি সহিংসতা কমাতে পারছে না

নারী নির্যাতন প্রতিরোধে নানা আইনি ব্যবস্থা থাকলেও তা কার্যত নারীর প্রতি সহিংসতা কমাতে খুব বেশি কাজে আসছে না। নারীর প্রতি সহিংসতার ধরন ও মাত্রা বর্তমানে বদলেছে। সহিংসতা প্রতিরোধে প্রতিবাদ করতে হবে, নিজেদের সচেতন হতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে গণমাধ্যমের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ-২০২৫ পালন শুরুর আগে গণমাধ্যমের নারী পাতার সম্পাদক এবং নারী বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আনোয়ারা বেগম মুনিরা খান মিলনায়তনে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

সভাপতির বক্তব্যে মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘বর্তমানে নানা পশ্চাৎপদ অবস্থার মধ্যে মানুষের মধ্যে যে তার স্বাধীনতা ও মুক্তির আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, এটি আমাদের জন্য একটি বড় অর্জন। পরিবারে নারী-পুরুষের প্রতি পারিবারিক আচরণ পরিবর্তিত হবে, এটি স্বাভাবিক। তবে এই পরিবর্তন যেন মানুষকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।’

এ সময় পারিবারিক ও সামাজিক পরিবর্তনের দিকগুলো গণমাধ্যমকে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরার জন্য আহ্বান জানান মহিলা পরিষদের সভাপতি। তিনি বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আমাদের প্রতিবাদের রূপ ও ধরন বদলাবে। প্রতিবাদ করেই নারীর অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে হবে।’

সভায় স্বাগত বক্তব্যে মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, আন্তর্জাতিক ও জাতীয়ভাবে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বিভিন্ন নীতিমালা গৃহীত হলেও বাস্তবে নারীর প্রতি সহিংসতা কমেছে, এমনটি বলা যাবে না। এই পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালনের একটি গুরুত্ব আছে।

মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালনকালে সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে আমরা নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে যে বার্তা দেব, যে কথাগুলো বলব এবং যে কর্মসূচিগুলো নেব ও বাস্তবায়ন করব, তা বৈশ্বিক পর্যায়ে প্রতিবেদন আকারে প্রকাশিত হবে। এর মধ্য দিয়ে আগামীর জন্য আবারও প্রতিরোধ ও প্রতিকারমূলক কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে। এবারের পক্ষের বিষয়বস্তু হচ্ছে সাইবার সহিংসতা প্রতিরোধ করা।’

সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতার ধরন ও মাত্রা বর্তমানে বদলেছে। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে শক্তিশালী নারী আন্দোলন গড়ে তুলতে গণমাধ্যম সব সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সে জন্য গণমাধ্যমের সঙ্গে আজকের কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মহিলা পরিষদের প্রচার ও গণমাধ্যম সম্পাদক মাহফুজা জেসমিন। তিনি বলেন, দেশে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে নানা আইনি ব্যবস্থা থাকলেও তা কার্যত নারীর প্রতি সহিংসতা কমাতে খুব বেশি কাজে আসছে না। এ পর্যায়ে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে গণমাধ্যমের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কেননা গণমাধ্যমই পারে অন্যায়ের প্রতিকারে সত্যকে সামনে নিয়ে আসতে।

সভায় মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন দৈনিক সংবাদের নাসরিন গীতি, আমার দেশ পত্রিকার এমরানা আহমেদ, উইমেন আই ২৪ ডটকমের রীতা ভৌমিক, আজকের পত্রিকার অর্চি হক, দৈনিক ইত্তেফাকের রাবেয়া বেবী, দেশ রূপান্তর পত্রিকার তাপসী রাবেয়া, মহিলা পরিষদের প্রচার ও গণমাধ্যম উপপরিষদ সদস্য তাসকিনা ইয়াসমিন, খবরের কাগজের মারওয়া জান্নাত মাইশা ও দৈনিক ভোরের ডাকের আবদুর রহমান মল্লিক। সভা সঞ্চালনা করেন মহিলা পরিষদের প্রচার ও গণমাধ্যম উপপরিষদ সদস্য সেবিকা দেবনাথ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ