নোয়াখালীর হাতিয়ার নলচিরাঘাট থেকে চেয়ারম্যানঘাট আসার পথে উত্তাল মেঘনা নদীতে একটি স্পিডবোট ১৭ জন যাত্রী নিয়ে অচল হয়ে গেছে। বোটটি প্রায় এক ঘণ্টা নদীতে ভেসে ছিল। এ সময় যাত্রীরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। আজ বুধবার সকাল সোয়া আটটার দিকে হাতিয়ার মেঘনা নদীতে এই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে স্পিডবোটটি অচল হয়ে পড়ে। পরে চেয়ারম্যানঘাটে খবর দেওয়া হলে সেখান থেকে আরেকটি স্পিডবোট তেল নিয়ে এলে ওই অচল স্পিডবোটটি সচল হয়ে ঘাটে ফিরে আসে।

মাঝ নদীতে স্পিডবোট অচল হওয়ার ঘটনা জানার পর হাতিয়র নলচিরা নৌ পুলিশ স্পিডবোটচালক মো.

সাদ্দামকে আটক করে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন ওই চালককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

স্পিডবোটের যাত্রী মো. শামীমুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল আনুমানিক আটটার দিকে হাতিয়ার নলচিরাঘাট থেকে স্পিডবোটটি চেয়ারম্যানঘাটের উদ্দেশে রওনা হয়। স্পিডবোটটি আনুমানিক ১০ থেকে ১৫ মিনিট চলার পর মেঘনা নদীর মাঝে অচল হয়ে যায়। চালক সাদ্দাম হোসেন কয়েকবার চেষ্টা করেন বোটটির ইঞ্জিন চালু করার জন্য, কিন্তু সেটি চালু হচ্ছিল না। পরে এক পর্যায়ে দেখেন জ্বালানি তেল শেষ হয়ে গেছে। এ সময় উত্তাল ঢেউয়ের কারণে স্পিডবোট ভীষণভাবে দুলছিল। ওই অবস্থায় বোটটি এক ঘণ্টা মাঝ নদীতে ভেসে ছিল।

শামীমুজ্জামান আরও বলেন, যাত্রীদের পরনে লাইফ জ্যাকেট থাকলেও তাঁদের অনেকে কান্নাকাটি করতে থাকেন। পরে বোটচালক চেয়ারম্যানঘাটের একজনকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানালে সেখানে থেকে আরেকটি স্পিডবোট জ্বালানি নিয়ে আসে। জ্বালানি পেয়ে অচল স্পিডবোট আবার চালু হয়।

হাতিয়ার নলচিরা নৌ পুলিশের পরিদর্শক আশীষ চন্দ্র সাহা প্রথম আলোকে বলেন, নদীতে যাত্রীসহ স্পিডবোট অচল হওয়ার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর দুপুরে ইউএনও মো. আলাউদ্দিনের নির্দেশে বোটচালককে আটক করা হয়। পরে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে।

এদিকে হাতিয়ার নলচিরাঘাটের স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করেছেন, নলচিরা-চেয়ারম্যানঘাট রুটে স্পিডবোট চালানোর জন্য বিআইডব্লিউটিসির কোনো রুট পারমিট নেই। এরপরও দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিরা অবৈধভাবে প্রায় ১০০টি স্পিডবোট পরিচালনা করছেন। চলাচলকারী এসব স্পিডবোটের বেশির ভাগেরই ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই। মাসখানেক আগে চেয়ারম্যানঘাটের কাছে নদীতে একটি স্পিডবোটের তলা ফেটে গেলে ২৮ জন যাত্রী অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান।

এ বিষয়ে ইউএনও মো. আলাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, স্পিডবোট চলাচলে বিআইডব্লিউটিসির রুট পারমিট নেই। কিন্তু জনগণের অসুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে তাঁরা স্পিডবোট চলাচলের সুযোগ দিচ্ছেন। তবে শর্ত হিসেবে স্পিডবোটের ফিটনেস, রেজিস্ট্রেশন সনদ ও সার্ভে সনদ থাকতে হবে। যেসব স্পিডবোট ওই তিনটি সনদ দেখাতে পারবে না, সেটি নদীতে চলাচল করতে পারবে না। এ বিষয়ে নৌ পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া আছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ ত য় র নলচ র

এছাড়াও পড়ুন:

ধামইরহাটের ইউএনওর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ  

নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে তার কার্যালয় ঘেরাও করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করা হয়েছে। 

বুধবার (১ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন উপজেলার মঙ্গলকোটা গ্রামের বাসিন্দারা।

ওই অন্তঃসত্ত্বা নারীর স্বামীর আব্দুল কুদ্দুস বলেছেন, আজ সকাল ১১টায় ইউএনও মঙ্গলকোটা গ্রামে একটি খাস জায়গা দখলমুক্ত করে সেটিকে ধামইরহাট পৌরসভার বর্জ্য রাখার স্থান নির্ধারণ করেন। স্থানীয়রা ওই জায়গাকে বর্জ্য রাখার স্থান করতে বাধা দিলে ইউএনওর সঙ্গে হট্টগোল হয়। আমি মোবাইল ফোনে ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে ইউএনওর নির্দেশে আমাকে আটক করার চেষ্টা করেন আনসার সদস্য। এ সময় আমার স্ত্রী এসে আমাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলে ইউএনও নিজে আমার স্ত্রীর বুকে আঘাত করে মাটিতে ফেলে দেন এবং লাল নিশান টাঙানো বাঁশের লাঠি দিয়ে আমার স্ত্রীকে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট শুরু করেন। প্রতিবেশী সাবিনা ইয়াসমিন বাধা দিতে গেলে ইউএনও তাকেও মারপিট করেন। এতে গুরুতর আহত হয়ে আমার স্ত্রী ও সাবিনা ইয়াসমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাধীন আছেন।

এ বিষয়ে ধামইরহাট উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হানজালা বলেছেন, পৌরসভার বর্জ্য রাখার স্থান নির্ধারণ নিয়ে স্থানীয়দের সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ঝামেলা হয়। এর জের ধরে গ্রামবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ঘেরাও করেন। পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে জানতে পেরে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। 

এ বিষয়ে ইউএনও শাহারিয়ার রহমান বলেছেন, নারীর গায়ে হাত দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। গ্রামবাসী সরকারি কাজে বাধা দিয়েছে। এ থেকে বাঁচার জন্যই তারা নাটক করছে।

ঢাকা/সাজু/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মারধরের অভিযোগ, নওগাঁয় ইউএনওর অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন
  • ধামইরহাটের ইউএনওর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ  
  • আড়াইহাজারে পূজার নিরাপত্তায় ৩১ মন্ডপে রাতভর নির্ঘুম পরিদর্শন ইউএনও’র