ঝালকাঠির রাজাপুরে একই সময়, তারিখ ও স্থানে বিএনপি নেতাকর্মীরা পাল্টা-পাল্টি সমাবেশ ডাকায় সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাত ১০ টায় ০৫. ১০. ৮২৮৪. ০০১. ০৬. ০০১. ২৫-৯০৮ নম্বর স্মারকে এ আদেশ জারি করেছেন রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ।

ইউএনও স্বাক্ষরিত আদেশে লেখা রয়েছে, ‘‘ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাজাপুর উপজেলা পরিষদ মার্কেট চত্ত্বর ও সংলগ্ন এলাকায় ১৩ আগস্ট বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ মার্কেট চত্ত্বর ও সংলগ্ন এলাকায় সভা সমাবেশ, মিছিল, মিটিং সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হলো।”

রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জারিকৃত এমন আদেশের কারণ হিসেবে বলা হয় যে, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর রাজাপুর উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নুর হোসেন কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি পত্রে জানানো হয় ১৩ আগস্ট বুধবার বিকেল ৩টায় উপজেলা পরিষদ মার্কেট চত্বরে র‍্যালি ও সমাবেশ করবেন।

অন্যদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল রাজাপুর উপজেলা শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক মো.

জাকির হোসেন কর্তৃক স্বাক্ষরিত আরেকটি পত্রে একই তারিখ, একই সময় এবং একই স্থানে সমাবেশ করবেন বলে জানানো হয়েছে।

একই স্থানে একই সময় পাল্টা-পাল্টি সমাবেশের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটতে পারে বিধায় উক্ত অবস্থা প্রতিরোধকল্পে ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক বলে উপজেলে প্রশাসন বরাবরে একটি পত্র দাখিল করেন রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন।

পরে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহুল চন্দ কর্তৃক ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে উপজেলা পরিষদ মার্কেট চত্ত্বর ও সংলগ্ন এলাকায় এ আদেশ জারি করা হয়।

ঢাকা/অলোক/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জ প র উপজ ল কর মকর ত ১৪৪ ধ র একই স

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশের লাঠি নিয়ে তরুণকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল, ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলা

নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুয়েল সাংমার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছ থেকে লাঠি কেড়ে নিয়ে দুর্জয় (১৮) নামের এক তরুণকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। মারধরের একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

এ ঘটনায় রায়হান কবীর নামের যুবদলের এক নেতা গত রোববার আটপাড়া আমলি আদালতে ইউএনওর বিরুদ্ধে একটি মামলার আবেদন করেন। পরে আদালতের বিচারক আবেদন আমলে নিয়ে ঘটনা তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কাছে মামলা করতে অনুমতি চান রায়হান।

মারধরের শিকার দুর্জয় উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় দিনমজুর। বাদী রায়হান কবীর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং মোবারকপুর গ্রামের প্রয়াত ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে।

এলাকাবাসী, ইউএনও কার্যালয় ও মামলার আরজি সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ২৪ মার্চ দুপুরে বানিয়াজান ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়। ইউনিয়নের ২ হাজার ৩৭ জন উপকারভোগীর মধ্যে জনপ্রতি ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। সেখানে চাল নিতে আসা উপকারভোগীরা সিরিয়াল না মানায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া চাল পাচারের খবর পেয়ে ইউএনও রুয়েল সাংমা সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় ইউএনও পুলিশের কাছ থেকে লাঠি নিয়ে উপকারভোগী দুর্জয় নামের এক তরুণকে মারধর করেন।

ঘটনার পাঁচ মাস পর রোববার যুবদল নেতা রায়হান কবীর এ নিয়ে আদালতে মামলার আবেদন করেন। মামলায় ইউএনওকে একমাত্র বিবাদী করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন বলে জানান বাদীর আইনজীবী মিজানুর রহমান।

এ বিষয়ে বাদী রায়হান কবীর বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। ইউএনও ওই দিন দুপুরে পুলিশ নিয়ে পরিষদে উপস্থিত হয়ে পুলিশের কাছ থেকে লাঠি নিয়ে দুর্জয়কে মারধর করে একপর্যায়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে যান। আমরা চেষ্টা করেও তাঁকে প্রতিহত করতে পারিনি। একজন নিরীহ নাগরিককে সরকারি আমলা হয়ে তিনি মারধর করতে পারেন না। বিষয়টি এলাকায় ক্ষোভ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হওয়ায় ন্যায়বিচারের দাবিতে আমি ছয়জনকে সাক্ষী করে মামলা করেছি। মারধরের একটি ভিডিও সংযুক্ত করা হয়েছে।’

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী দুর্জয় মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার মা হুসনা আক্তার অসুস্থ থাহনে আমি সেই দিন সাড়ে ১২টার সময় ভিজিএফের চাউল আনতাম যাই। ফরে লোকজনের ঠেলাধাক্কায় পরিষদের সামনে দেওয়া বাঁশের বেড়া খুইল্লা গেলে আমি সামনে গিয়া পইড়া যাই। এ সময় ইউএনও স্যার আইয়া আমারে মারধর করেন। পরে আমারে চারটা পর্যন্ত আটকাইয়া রাইখা একটা কাগজে স্বাক্ষর কইরা ছাইড়া দিছে। আমি কোনো চাউল লুটপাট করার লোক না।’

অভিযোগের বিষয়ে ইউএনও রুয়েল সাংমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কাউকে মারধর করিনি। এটা আমাকে নিয়ে বিভিন্ন মহলের চক্রান্ত চলছে। রমজানের ঈদের সময় কিছু বিশৃঙ্খল জনতা ভিজিএফের মালামাল লুট করে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন কিছু উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে আমরা ধরছি, ধরার পরে তারা আমার সঙ্গে উদ্ধত আচরণ করে। আমি তো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তাকে ক্যাপচার করছি। ওখানে পুলিশ বা অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছিল না। তবে আমি কাউকেই কোনো মারধর করিনি।’

পিবিআইয়ের ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. রকিবুল আক্তার বলেন, ‘এ রকম একটি বিষয় শুনেছি। তবে আদালতের আদেশটি এখনো অফিশিয়ালি পাইনি।’

জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাসের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ আজ মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, রোববার এ নিয়ে একটি ডাক ফাইল কার্যালয়ে এসেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুলিশের লাঠি নিয়ে তরুণকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল, ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলা
  • নবাগত সদর ইউএনও তাছলিমা শিরিনকে ফুলেল শুভেচ্ছা
  • ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত নবাগত সদর ইউএনও তাছলিমা শিরিন