জুলাই সনদে কী কী সংস্কার প্রস্তাব থাকছে
Published: 17th, August 2025 GMT
ঐকমত্য কমিশন জুলাই জাতীয় সনদের সমন্বিত খসড়া গতকাল গণমাধ্যমে পাঠিয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় ৮৪টি বিষয়ে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়। এগুলো সনদে উল্লেখ থাকবে। এর মধ্যে প্রথম পর্বে ঐকমত্য হওয়া বিষয়ের মধ্যে আছে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন, জেলা সমন্বয় কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা, রাজনৈতিক দলকে তথ্য অধিকার আইনের আওতায় আনা, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস প্রতিষ্ঠা, আইনজীবীদের আচরণবিধি, গণহত্যা ও ভোট জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন, তথ্য অধিকার আইনের সংশোধন, দুর্নীতিবিরোধী কৌশলপত্র প্রণয়ন, নির্বাচনী অর্থায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে সংশোধন, দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার নিয়োগ পদ্ধতি, আয়কর আইনের সংশোধন ইত্যাদি।
আরও পড়ুনজুলাই সনদের খসড়া দলগুলোর কাছে ৮ ঘণ্টা আগেদ্বিতীয় পর্বে ভিন্নমত ছাড়া ১১টি মৌলিক সংস্কার প্রস্তাব ঐকমত্য হয়। সেগুলো হলো ১.
যেসব গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবে নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) আছে, সেগুলো হলো:
১. রাষ্ট্রের মূলনীতি: এই প্রস্তাবে ভিন্ন আছে বাংলাদেশ জাসদ, সিপিবি, বাসদ, বাসদ (মার্ক্সবাদী), গণফোরামের।
২. রাষ্ট্রপতির নির্বাচনপদ্ধতি: ভিন্নমত আছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের।
৩. রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব: কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নমত আছে বিএনপি, এনডিএম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ১২–দলীয় জোট, এলডিপির।
৪. প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান: ভিন্নমত আছে বিএনপি, এনডিএম, ১২–দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের।
৫. তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা: বিএনপি (গঠনপ্রক্রিয়া সংসদের হাতে ন্যস্ত করার পক্ষে), কিছু অংশে ভিন্নমত আছে বাংলাদেশ লেবার পার্টি, এনডিএম, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২–দলীয় জোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির।
৬. উচ্চকক্ষে পিআর: বিএনপি, এনডিএমের ভিন্নমত।
৭. উচ্চকক্ষের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ: বিএনপি, এনডিএমের ভিন্নমত।
৮. উচ্চকক্ষের দায়িত্ব ও ভূমিকা: সিপিবি, এনডিএম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, আম জনতার দলের ভিন্নমত।
৯. নারী আসনের বিধান: সিপিবি, বাসদ, আম জনতার দলের ভিন্নমত।
১০. ন্যায়পাল নিয়োগ, সরকারি কর্ম কমিশনে নিয়োগ, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক নিয়োগ ও দুর্নীতি দমন কমিশনে নিয়োগ: বিএনপি, এনডিএম, ১২–দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের ভিন্নমত।
১১. ওপেন গভর্নমেন্ট পার্টনারশিপের পক্ষভুক্ত হওয়া: জামায়াতে ইসলামী, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, জাকের পার্টি, জেএসডি ও বিএসপির ভিন্নমত আছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ভ ন নমত প রস ত ব ঐকমত য ব এনপ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্য কমিশন বলছে, শরিয়াহ নিয়ে প্রশ্ন ছিল না, মামুনুল হক বললেন অসতর্কতায় অন্য জরিপের কথা বলেছেন
প্রথম আলোয় প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে শরিয়াহ আইন নিয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হকের একটি মন্তব্য নিয়ে বক্তব্য দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গত সোমবার মামুনুল হকের সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়।
‘আফগানিস্তানে যেতে আইনি বাধা নেই’ শিরোনামে প্রকাশিত ওই সাক্ষাৎকারের একটি অংশে মামুনুল হক উল্লেখ করেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন বিষয়ে জরিপ চালানো হয়েছিল। সেখানে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ শরিয়াহ শাসন চেয়েছে।’
এ বিষয়ে প্রথম আলোকে দেওয়া বক্তব্যে ঐকমত্য কমিশন বলেছে, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন স্পষ্টভাবে জানাচ্ছে যে কমিশনের পক্ষ থেকে যে জরিপ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছিল, সেখানে শরিয়াহ আইন বা শরিয়াহ শাসনসংক্রান্ত কোনো প্রশ্নই অন্তর্ভুক্ত ছিল না। ফলে উক্ত জরিপ থেকে এ ধরনের মতামত বা ফলাফল পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
অন্যদিকে এ বিষয়ে মামুনুল হক প্রথম আলোকে বলেছেন, ২০১৭ সালে ‘রিজলভ নেটওয়ার্ক’ পরিচালিত একটি জরিপকে তিনি অসতর্কতাবশত ঐকমত্য কমিশনের জরিপ বলে উল্লেখ করেছেন। ‘ডেমোক্রেসি অ্যান্ড শরিয়াহ ইন বাংলাদেশ: সার্ভেয়িং সাপোর্ট’ শীর্ষক ওই জরিপ প্রতিবেদন লিখেছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ও সৈয়দা সেলিনা আজিজ। ওই জরিপে ৯১ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের একটি মর্মবস্তু হচ্ছে নির্বাচিত প্রতিনিধিত্ব। তবে ৮০ শতাংশের বেশি মনে করেন, শরিয়াহ আইন মৌলিক সেবা, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি দুর্নীতিকে নিরুৎসাহিত করে।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে তিনটি বিষয় নজর কেড়েছে, নারী শিক্ষার বিষয় আপত্তিকর ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫