যারা নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক করছে, তারা গণতন্ত্রের শত্রু
Published: 19th, September 2025 GMT
নির্বাচিত সরকার ছাড়া আজকে বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে না। তাই যারা সামনের নির্বাচন নিয়ে নানা কৌশলে বিতর্ক তুলছে এবং জাতীয় সংগীত পাল্টে দিতে হবে, ৭২ এর সংবিধান বাতিল করতে হবে, চার মূলনীতি বাতিল করতে হবে বলে দাবি করছে, তারাই এখন গণতন্ত্রের শত্রু। কথাগুলো বলেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় সিপিবির চার দিনব্যাপী ত্রয়োদশ কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শাহ আলম। এর আগে বিকেল ৩টায় জাতীয় সংগীত ও আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে কংগ্রেসের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য দেন সিপিবি সভাপতি।
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা উপভোগ করছে উল্লেখ করে মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘নির্বাচন যদি না হয়, এই খেলা (নির্বাচন না দেওয়া) চলতে থাকবে। আর নির্বাচন হলে একটা সেন্টারে ক্ষমতা আসবে। তাই আমাদের বর্তমানের স্লোগান হল, “অতি সত্ত্বর দরকার, নির্বাচিত সরকার”। নির্বাচিত সরকার ছাড়া আজকে বাংলাদেশের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে না, নির্বাচিত সরকার ছাড়া আজকে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ হবে না।’
গত বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনার সরকার গণতন্ত্রের শত্রু ছিল উল্লেখ করে সিপিবি সভাপতি বলেন, বর্তমানে গণতন্ত্রের শত্রু হলো সাম্প্রদায়িক শক্তি ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি। প্রতিক্রিয়াশীল, মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক শক্তি নানা উসিলায় এই নির্বাচনের বিরোধিতা করছে উল্লেখ করে তিনি সতর্ক করেন যে, নির্বাচন না হলে দেশের রাজনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট হবে এবং মৌলবাদী শক্তির আরও বেশি উত্থান হবে।
মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্র ক্ষমতার, শ্রেণি চরিত্রের কোনো পরিবর্তন হয় নাই। দেশে দ্বিতীয় স্বাধীনতা হয় নাই, বিপ্লব হয় নাই। একটি গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচারি সরকারের বিরুদ্ধে।’
দেশের বামপন্থী, কমিউনিস্ট-প্রগতিশীলদের দ্বন্দ্বের কারণে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির উত্থান ঘটছে উল্লেখ করে সিপিবির সভাপতি বলেন, ‘বামদের সুবিধাবাদ, বিভেদ এবং হটকারিতা আর রাজনীতির দেউলিয়াত্বের কারণেই আজকে রেডিক্যাল ইসলামের উত্থান হয়েছে বাংলাদেশে।’ সেজন্য কৃষক, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষকে নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ বিকল্প গণতান্ত্রিক ঐক্যবদ্ধ শক্তি গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) ত্রয়োদশ কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দলের সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ব চ ত সরক র ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব