দেশের ৩১ হাজার ৫৭৬টি পূজামণ্ডপের গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রতিটিতে ৪ থেকে ৮ জন করে আনসার সদস্য নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁরা সেখান থেকে যেকোনো পরিস্থিতিতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তথ্য চালু হওয়া শারদীয় সুরক্ষা অ্যাপে পাঠালে এ–সংক্রান্ত নোটিফিকেশন তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিবর্গ, সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্টরা পান। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী দ্রুত এ ঘটনায় পদক্ষেপ নিতে ও তদন্ত করতে পারছেন।

শারদীয় দুর্গাপূজা মণ্ডপ শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্নে উদ্‌যাপন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শারদীয় সুরক্ষা আপ চালু করা নিয়ে মঙ্গলবার ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লা রাজধানীর তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। এনটিএমসির নিজস্ব দক্ষ জনবল ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তির মাধ্যমে শারদীয় সুরক্ষা নামের ওয়েব ও মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়। অনুষ্ঠানে নৌবাহিনীর কমান্ডার সাইফুর রহমান ভূঁইয়া শারদীয় সুরক্ষা অ্যাপের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

সাইফুর রহমান বলেন, অ্যাপে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, আনসার, কোস্টগার্ড, বর্ডার গার্ড, র‍্যাব, ডিজিএফআই, এনএসআই ও এসবি যৌথভাবে কাজ করছে। এ ছাড়া উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে প্রায় ১ হাজার কর্মকর্তা পর্যবেক্ষক হিসেবে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, শারদীয় দুর্গাপূজা-২০২৫ উপলক্ষে পূজামণ্ডপে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার রিপোর্ট ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এনটিএমসি ‘শারদীয় সুরক্ষা অ্যাপ’ চালু করেছে। অ্যাপের মাধ্যমে পূজামণ্ডপ থেকে পাঠানো যেকোনো ঘটনার তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যবেক্ষক ও ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তারা সরাসরি পাচ্ছেন। তাঁরা প্রয়োজন অনুযায়ী নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং মাঠপর্যায়ের তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করছেন। এনটিএমসির গঠিত সমন্বয় সেলে সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা একযোগে কাজ করছেন।  

এনটিএমসির মহাপরিচালক আবদুল কইয়ুম জানান, গুজব প্রতিরোধে সমন্বয় সেল এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রাপ্ত সব তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৩১ হাজার ৫৭৬টি পূজামণ্ডপের সঙ্গে যুক্ত আছি। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। পূজামণ্ডপে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা লাইভ ভিডিও বা ছবি তুলে আমাদের পাঠাতে পারবেন।’

মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘২০১৮ সালের একটি পূজামণ্ডপে দুর্গার হাত ভাঙার ছবি গত বছরের ছবি বলে প্রচার করা হয়েছিল। পরে যাচাই করে দেখা গেছে, এটি আসলেই ২০১৮ সালের ছবি।’

তিনি জানান, সুরক্ষা অ্যাপের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো পূজামণ্ডপে কে কী করছেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী করছে—সবকিছুই সবার কাছে দৃশ্যমান। দেশের পূজামণ্ডপে দুই লাখের বেশি আনসার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যও সরাসরি অ্যাপে তথ্য দিচ্ছেন।

মতবিনিময় শেষে এনটিএমসির মহাপরিচালক সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এক প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাষ্ট্র অ্যাপে নিরাপত্তা মনটরিংয়ের দায়িত্ব দিলে এনটিএমসি তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সারা দেশে ১৩২টি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় পুলিশ (অ্যাকশন) পদক্ষেপ নিয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনট এমস র র সদস য করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বুড়িগঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন, সদরঘাটে ভক্তদের ঢল

আনন্দ আর অশ্রু মিশ্রিত আবেগে রাজধানীর সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিদায় জানালেন দেবী দুর্গাকে। বুড়িগঙ্গার বুকে প্রতিমা বিসর্জন দেখতে হাজারো ভক্ত ও পুণ্যার্থীর ঢল নামে।

এদিকে, ভক্তদের এই মিলনমেলা নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে রয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ও সর্বাত্মক সহযোগিতা।

আরো পড়ুন:

প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

ছুটোছুটির মধ্যে কাটছে মিমের পূজা

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর থেকে পুরান ঢাকার সদরঘাটের ওয়াইজ ঘাট পরিণত হয় ভক্ত-অনুরাগীর মিলনমেলায়।

ঢাক-ঢোল, কাঁসর-ঘণ্টা ও নাচ-গানের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গা, গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী, সরস্বতী ও কলা বৌকে একে একে নামানো হয় পিকআপ ভ্যান থেকে। এরপর প্রতিমাগুলো নৌকায় তুলে নিয়ে বুড়িগঙ্গার বুকে নিরঞ্জনের মাধ্যমে করা হয় বিসর্জন।

প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে ঢাকা মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির পক্ষ থেকে সদরঘাট টার্মিনালের কাছে বিনা স্মৃতি স্নান ঘাটে নির্মাণ করা হয় অস্থায়ী বিসর্জন মঞ্চ। সার্বিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।

প্রতিমা বিসর্জন দেখতে লক্ষ্মীবাজার থেকে আসা ভক্ত পায়েল সরকার বলেন, “মা দুর্গা শান্তির বার্তা নিয়ে কৈলাস ছেড়ে মর্ত্যে আসেন। আজ তাকে বিদায় দিতে কষ্ট হচ্ছে, তবে এ অপেক্ষাটাও মধুর যে, আগামী বছর তিনি আবার আসবেন।”

কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন কমিটির কোতোয়ালি থানার আহ্বায়ক শ্রীকান্ত দত্ত বলেন, “খুব সুন্দরভাবে এবারের পূজা উদযাপন সম্পন্ন হয়েছে। মানুষের জীবনে শান্তি ফিরে আসুক, এই কামনা করি। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও এবার ছিল প্রশংসনীয়।”

কোতোয়ালি থানার সহকারী কমিশনার ফজলুল হক বলেন, “শুধু স্থলেই নয়, নদীপথেও বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক ট্রলার ও স্পিডবোটে নদীতে টহল দিচ্ছে।”

বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ইসমাইল হোসেন বলেন, “প্রতিমা বিসর্জন যাতে নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে সম্পন্ন হয়, সেজন্য আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সব ধরনের সহযোগিতা করছে।”

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন, “বিসর্জন কার্যক্রম নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে ওয়াইজ ঘাটে সুশৃঙ্খল পুলিশি ব্যবস্থাপনা রাখা হয়েছে। প্রতিমাগুলো নিরাপদে ঘাটে পৌঁছাতে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত কর্মকর্তা কাজ করছেন। সন্ধ্যার মধ্যে বাকি প্রতিমাগুলো বিসর্জন দেওয়া হবে।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈরী আবহাওয়ায়ও উৎসবের আমেজ, এক ঘণ্টায় ১২৭ প্রতিমা বিসর্জন
  • টেকনাফের পাহাড়ে পাচারের উদ্দেশ্যে জিম্মি রাখা আরও ২১ নারী ও শিশু উদ্ধার
  • বুড়িগঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন, সদরঘাটে ভক্তদের ঢল
  • অনীষাদের পূজার আনন্দ বাড়িয়ে দিলেন প্রধান উপদেষ্টার সহকারী
  • চার দিন পর স্বাভাবিক যান চলাচল, জনজীবনে স্বস্তি
  • দুর্গাপূজা যাতে শান্তিপূর্ণ না হতে পারে, সে জন্যই খাগড়াছড়ির ঘটনা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • খাগড়াছড়িতে আজও অবরোধ চলছে, স্থবির জনজীবন
  • খাগড়াছড়িতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উত্তরণে কাজ করছে বিজিবি
  • `কিছুই নাই, সব ছাই, ছাইয়ের ভেতরে ঢুকে যেতে ইচ্ছে করছে'