জাবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বন্ধুর ফোন চুরি করে ইয়াবা সেবনের অভিযোগ
Published: 11th, October 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বন্ধুর মোবাইল ফোন চুরি করে বিক্রির টাকা দিয়ে ইয়াবা সেবনের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। পরে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে বাঁচাতে ছাত্রদলের একজন নেতা তদবির করছেন বলে জানা গেছে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী হলেন, জাবির নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৫৩ ব্যাচের সামিউল আজীম।
আরো পড়ুন:
আন্দোলনে যাচ্ছেন না শিক্ষক-কর্মকর্তারা, রাকসু নির্বাচনে বাধা নেই
জাবিতে অনুষ্ঠিত হবে দুই দিনব্যাপী বিজ্ঞান উৎসব
গত বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের ১০০৮ নম্বর কক্ষে ফোন চুরির ঘটনাটি ঘটে। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে অভিযুক্তকে হল অফিসে আনা হলে তাকে প্রশাসনিক ব্যবস্থা থেকে বাঁচাতে তদবির করেন কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রদলের সভাপতি মেহেদি হাসান ইমন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাগর গোলজার জানান, বৃহস্পতিবার ঘুম থেকে উঠে তিনি তার ফোন খুঁজে পাননি। পরে হলের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা যায়, পাশের রুমের ছাত্র সামিউল আজীম তার কক্ষে প্রবেশ করে কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে যায়। সে সময় কক্ষে ভুক্তভোগী ছাড়া আর কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
ফুটেজ দেখে বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞেস করলে সামিউল মোবাইল চুরির কথা স্বীকার করেন। তিনি জানান, ফোনটি টুঙ্গীতে নিয়ে বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে ইয়াবা সেবন করেছে।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর সন্ধ্যায় যখন অভিযুক্ত সামিউলকে হল অফিসে আনা হয়, তখন সেখানে উপস্থিত হন ওই হলের ছাত্রদলের সভাপতি মেহেদি হাসান ইমন। তিনি হল ওয়ার্ডেন সহযোগী অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার মন্ডলের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টিকে ‘সিম্পল’ ও নিজেদের মধ্যে সমাধানযোগ্য বলে উল্লেখ করেন।
এর জবাবে ওয়ার্ডেন বলেন, “আমরা অভিযুক্তের বিষয়ে আগেও কিছু ইস্যু পেয়েছি। তোমরা তো সেগুলো জানো। এটাকে কিভাবে সিম্পল বলো?”
সাংবাদিকরা বিষয়টি ভিডিও করতে চাইলে ইমন তার সুর পালটে বলেন, “আমি জানতাম না এখানে মাদকের বিষয় আছে। ভেবেছিলাম শুধু ফোন চুরির ঘটনা।”
এ বিষয়ে ওয়ার্ডেন সহযোগী অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার মন্ডল বলেন, “অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে এটাই প্রথম এ ধরণের ঘটনা নয়। এর আগেও তাকে মাদক সংশ্লিষ্টতার কারণে আমরা আটক করেছিলাম। পরবর্তীতে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিছুদিন পর তার প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, ফর্ম পূরণ করার জন্য তার মা তাকে হলে রেখে গেছে। এ সময়ের মধ্যেই আবার এই ধরনের ঘটনা ঘটলো।”
ছাত্রদল নেতার তদবিরের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা যখন হল অফিসে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছিলাম, তখন নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান ইমন সেখানে আসে। সে বলে, ‘স্যার ও তো আমার বিভাগের জুনিয়র। আমার কাছে বলেছে, তাদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল, তাই সে ফোনটা নিয়েছে। এটা তো ছোটখাটো একটা ঘটনা।’ তখন ইমনকে আমি বলি, দেখো ইমন, তুমি এটাকে তুচ্ছ ঘটনা বলছো, কিন্তু চুরি হওয়া ফোনটি এখনো উদ্ধার হয়নি। ভুক্তভোগী জানিয়েছে, ফোনে তার অনেক ডকুমেন্টস আছে। তাই ফোনটা তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া অভিযুক্তের মাদক সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে আমরা আগে থেকেই ওয়াকিবহাল ছিলাম। তাই এটিকে তুচ্ছ ঘটনা বলে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।”
তদবিরের বিষয়ে জানতে ছাত্রদল নেতা মেহেদি হাসান ইমনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “যেখানে ফোনটি বিক্রি করা হয়েছে, সেখানে প্রতিদিন হাজারখানেক মানুষ ইয়াবা সেবন করতে যায়। সেখান থেকে ফোন উদ্ধার করা কঠিন হতে পারে। আমরা ফোনটির বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেব। অভিযুক্ত মাদকাসক্ত ছেলেটিকে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দেখছেন এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ স ন ইমন ছ ত রদল স ম উল তদব র র ঘটন ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
হংকংয়ে আবাসিক ভবনে আগুনে মৃত্যু বেড়ে ৪৪, নিখোঁজ ২৭৯
হংকংয়ের উত্তরাঞ্চলীয় তাই পো এলাকায় আবাসিক ভবনে ছড়িয়ে পড়া অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ২৭৯ জন।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিবিসির লাইভ রিপোর্টে বলা হয়, আগুন ১৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জ্বলছে। ৮০০ জনেরও বেশি অগ্নিনির্বাপক কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
আরো পড়ুন:
কড়াইল অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা নিশ্চিতের আশ্বাস প্রধান উপদেষ্টার
করাইল বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড: ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটি
বুধবার হংকংয়ের উত্তরাঞ্চলীয় তাই পো জেলার ওয়াং ফুক কোর্টে আগুনের সূত্রপাত। এটি আটটি ব্লক নিয়ে গঠিত দুই হাজার ইউনিটের একটি আবাসিক কমপ্লেক্স। স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৫১ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় দমকল বিভাগ।
আগুন নেভাতে গিয়ে ৩৭ বছর বয়সী এক অগ্নিনির্বাপক কর্মী মারা গেছেন। সরকার তাকে ‘নিষ্ঠাবান ও সাহসী’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
বিল্ডিংগুলোর ভেতর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া আত্মীয়দের খোঁজে সহায়তা চেয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করছেন বাসিন্দারা।
বিবিসিতে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা কালো হয়ে যাওয়া টাওয়ারগুলোতে পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন। দমকল সদস্যরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে আগুনের তীব্রতা কমাতে কাজ করে যাচ্ছেন।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৩টি স্কুল আজ ক্লাস স্থগিত করেছে।
এদিকে, এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ‘হত্যার’ অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে দুজন একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও একজন প্রকৌশল পরামর্শক।
পুলিশের মুখপাত্র বলেন, “আমাদের বিশ্বাস, কোম্পানির দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা গুরুতর অবহেলার পরিচয় দিয়েছেন। তাদের অবহেলাই এই দুর্ঘটনার কারণ এবং আগুন অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে।”
ঢাকা/ইভা