দেশে ২ দশক ধরে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা কার্যক্রম চালানো হলেও প্রতিরোধ এবং প্রাথমিক পর্যায়ে স্ক্রিনিং সেবা এখনো যথাযথভাবে গড়ে ওঠেনি। প্রতি বছর কত নারী এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং কতজন মারা যাচ্ছেন- এর সঠিক তথ্য সরকারের কাছে নেই। ফলে বাংলাদেশকে এখনো আন্তর্জাতিক সংস্থার পরিসংখ্যানে নির্ভর করতে হচ্ছে।

শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘ব্রেস্ট ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেস সেমিনার ২০২৫’-এ এসব কথা বলেন বক্তারা।

আরো পড়ুন:

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: ক্যানসার প্রতিরোধে ভুল ধারণা ও বাস্তবতা

ক্যান্সার আক্রান্ত ছরোয়ারের পাশে উপজেলা প্রশাসন

কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা.

মো. আব্দুল হকের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, কুমিল্লা জেলার সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশীর আহম্মেদ এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. রেজা মো. সারোয়ার আকবর।

এ সময় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কনসালটেন্ট ডা. কাজী ইশরাত জাহান, ডা. কামরুল ইসলাম মামুন (ময়নামতি মেডিকেল কলেজ) এবং ডা. এম.এম.এম. আরিফ হোসেন (ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালাইড সায়েন্সেস)। স্বাগত বক্তব্য দেন ট্রমা সেন্টারের প্রধান উপদেষ্টা মো. জহিরুল ইসলাম।

বক্তারা বলেন, স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে সামাজিক ট্যাবু ও ভয় দূর করতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে এই রোগ থেকে মুক্তি সম্ভব। আমরা চাই কুমিল্লা থেকে শুরু হোক ক্যান্সারবিরোধী সচেতনতার নতুন ধারা।

এদিকে বিশ্বব্যাপী অক্টোবর মাসকে ‘ব্রেস্ট ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেস মান্থ’ হিসেবে পালন করা হয়। এ বিষয়ে বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, অনুষ্ঠানটি নারীদের স্বাস্থ্য সচেতনতায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

বক্তারা জানান, প্রতি আটজন নারীর মধ্যে একজন স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে রয়েছে। ২০২০ সালে বিশ্বে নতুন রোগীর সংখ্যা ২২ লাখ ছাড়িয়েছে এবং মারা গেছেন প্রায় ৬ লাখ ৮৫ হাজার নারী। একই বছরে বাংলাদেশে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার নারী এবং মারা গেছেন ৬ হাজার ৭৮৩ জন। অর্থাৎ দেশে প্রতিদিন গড়ে ৩৬ জন নারী নতুন করে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন।

বক্তাদের দাবি, প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত হলে চিকিৎসায় সাফল্যের হার অনেক বেশি। তবে দেশে স্ক্রিনিং ও প্রাথমিক সেবা সীমিত। সারাদেশে ব্যাপক স্ক্রিনিং কর্মসূচি নেওয়া এখন সময়ের দাবি।

ঢাকা/রুবেল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বক ত র

এছাড়াও পড়ুন:

যে ১৫ কারণে করদাতার আয়কর রিটার্নের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়

অনেক করদাতার আয়কর রিটার্ন নিরীক্ষায় পড়ে যায়। এতে করদাতারা বিপাকে পড়ে যান। নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাঁদের।

অবশ্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়কর ফাইল আপাতত নিরীক্ষায় ফেলছে না। তবে করদাতার ফাইলের বিষয়ে জানতে চেয়ে নানা ধরনের নোটিশ দিচ্ছে।

আয়কর রিটার্ন অডিটে বা নজরদারিতে পড়ার বেশ কিছু কারণ আছে। সেখান থেকে বাছাই করা ১৫টি কারণ নিয়ে আলোচনা করা হলো:

১. রিটার্নের তথ্য ও উৎসে কর কাটার তথ্যের অসামঞ্জস্য থাকলে নিরীক্ষায় পড়তে পারে। বিশেষ করে করদাতাদের আয়-ব্যয়, উৎসে কর কর্তন, ব্যাংক লেনদেনের সঙ্গে রিটার্নের তথ্যের মিল না থাকলে এমন নজরদারিতে পড়তে পারেন।

২. আগের বছরের তুলনায় হঠাৎ অস্বাভাবিক বেশি সম্পদ দেখালে কর কর্মকর্তাদের সন্দেহ হতে পারে। সম্পদ অর্জনের অর্থের উৎস ব্যাখ্যা না থাকলে সন্দেহ আরও গভীর হয়।

৩. আয় কম দেখানো হলো। কিন্তু রিটার্নে বাড়ি-গাড়ি, সম্পদ বেশি দেখালেও নিরীক্ষায় পড়তে পারেন করদাতা।

৪. কোনো ব্যবসায়ী করদাতার ব্যবসায় ব্যয় অস্বাভাবিক বেশি দেখানো হলেও নিরীক্ষায় পড়ার সম্ভাবনা আছে। কারণ, খরচ অনেক বেশি দেখিয়ে লাভ কম দেখান অনেকে।

৫. উৎসে কর কাটা থাকলেও রিটার্নে দাবি না করা বা ভুল দাবি করলে নিরীক্ষায় ফেলতে পারেন কর কর্মকর্তারা। তাই উৎসে কর কর্তনের ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য দেওয়া যাবে না।

৬. রিটার্ন দাখিলের কাগজপত্র অসম্পূর্ণ থাকলেও বিপাকে পড়তে পারেন। যেমন আয়, বিনিয়োগ, ব্যয়, সম্পদের দলিল, প্রমাণপত্র না থাকা বা ভুল কাগজপত্র না দেওয়া।

৭. নগদ অর্থ অস্বাভাবিক বেশি দেখানো হলে কর কর্মকর্তাদের সন্দেহের তালিকায় পড়তে পারেন। যেমন রিটার্নে হাতে নগদ টাকা (ক্যাশ ইন হ্যান্ড) বেশি দেখালে সন্দেহ হয়।

৮. ঋণ বা দায় অস্বাভাবিক বেশি দেখানো হলে নিরীক্ষায় জালে পড়বেন। তাই ঋণের উৎস ঠিকমতো ব্যাখ্যা দিতে হবে।

৯. উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ খাতের করদাতাদের দিকে বেশি নজর থাকে কর কর্মকর্তাদের। যেমন নির্মাণ, ঠিকাদার, সরবরাহকারী, জমি ক্রয়-বিক্রয় ব্যবসায়ী, গাড়ি ব্যবসায়ী ইত্যাদি।

১০. ব্যাংকে বড় অঙ্কের লেনদেন করলেও আপনি নিরীক্ষার মতো বিপাকে পড়তে পারেন। দেখা গেল, ওই নির্দিষ্ট বছরে ব্যাংকে বড় পরিমাণ টাকা জমা বা উত্তোলন আছে। কিন্তু রিটার্নে উল্লেখ নেই।

১১. সম্পদ ক্রয়-বিক্রয়ের তথ্য গোপন করলে নিরীক্ষায় পড়বেন। তাই রিটার্নে জমি, ফ্ল্যাট, গাড়ি ইত্যাদি দেখিয়ে দেবেন।

১২. বিনিয়োগের ভুল তথ্য দেওয়া যাবে না। অতিরিক্ত বিনিয়োগ দেখানো বা ভুল বিনিয়োগ দেখিয়ে অনেকে বিভিন্ন সুবিধা নেন।

১৩. কর কর্মকর্তারা দৈবচয়ন ভিত্তিতে নিরীক্ষা করে থাকে। তাই কোনো ভুল না থাকলেও দৈবচয়ন পদ্ধতির কারণে কেউ কেউ নিরীক্ষায় পড়ে যান।

১৪. প্রথমবার রিটার্নে অতিমাত্রায় সম্পদ দেখানো বা দীর্ঘদিন পরে রিটার্ন দেওয়া হলেও নজরে পড়তে পারেন।

১৫. আগের বছরের নিরীক্ষায় সমস্যা পাওয়া গেলে পরের বছরে সেসব করদাতার নথি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ