গাইবান্ধায় হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৪ জন কারাগারে
Published: 12th, October 2025 GMT
গাইবান্ধা সদর উপজেলার বালুয়া বাজারে ব্যবসায়ী রোকনুজ্জামান ওরফে রোকন সরদার হত্যা মামলায় রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোসাব্বির হোসেনসহ ৪ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে গাইবান্ধার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর আলম এই আদেশ দেন। এ নিয়ে একই মামলায় দ্বিতীয় দফায় কারাগারে গেলেন মোসাব্বির হোসেন।
আরো পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জে হত্যা মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন
ময়মনসিংহে হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
আদালতের পেশকার হাফিজুর রহমান জানান, ‘‘রবিবার রোকন সরদার হত্যা মামলার চার্জশিট শুনানির দিন নির্ধারিত থাকায় মোসাব্বিরসহ এজাহারনামীয় ১৬ আসামির মধ্যে ১৪ জন আদালতে হাজির হন। শুনানি শেষে বিচারক আসামি সুলভ মিয়া খাজা, শাহআলম, লিটন ও চেয়ারম্যান মোসাব্বিরের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’’
এর আগে, ২০২১ সালে উচ্চ আদালত থেকে আট সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান মোসাব্বির। তবে ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফেরদৌস ওয়াহিদ তাকে প্রথম দফায় কারাগারে পাঠান।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ১৭ জুন গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের বালুয়া বাজারে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাইকেল পার্টস ব্যবসায়ী রোকন সরদারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ইউপি সদস্য আশিকুজ্জামান ও জিল্লুর রহমান আহত হন। নিহত রোকন সরদার ওই ইউনিয়নের ভগবানপুর গ্রামের আবদুর রউফ সরদারের ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই রোমান সরদার বাদী হয়ে চেয়ারম্যান মোসাব্বিরসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরো ১০-১২ জনকে আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঢাকা/মাসুম/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সম্পদ ও সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা
জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন মনে হয়, সবকিছু যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। আয়ের উৎস শুকিয়ে যাওয়া, পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকা বা জীবনে বরকতের অভাব—এসব চাপে মানুষের মন ভারী হয়ে ওঠে। ইসলামে এমন সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এমন একটি দোয়া মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সেবক আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর জন্য করেছিলেন। এই দোয়া শুধু ধন-সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি চায় না, বরং সবকিছুতে আল্লাহর বরকত কামনা করে।
দোয়ার উৎস ও প্রেক্ষাপটহাদিসে বর্ণিত, আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইম নবীজিকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার এই সেবক আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’ তখন নবীজি (সা.) দোয়া করেন: ‘আল্লাহুম্মা আকসির মালাহু ওয়া ওয়ালাদাহু, ওয়া বারিক লাহু ফীমা আ'তাইতাহু।’
এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং পৌত্রাদি মিলিয়ে তিনি ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তার ধন-সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দাও এবং তুমি যা দান করেছ, তাতে তার জন্য বরকত দান করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৪)
আনাস (রা.) তখন মাত্র দশ বছরের একটি ছেলে, যিনি নবী (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং তাঁর তিনি পৌত্রাদি মিলিয়ে ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।
দোয়ার উদ্দেশ্য শুধু ধন নয়, বরকতএই দোয়ার সৌন্দর্য এতে যে এটি ধন-সম্পদের পাশাপাশি বরকতের জন্য প্রার্থনা করে। ইসলামে ধনকে শুধু সঞ্চয় নয়, বরং আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯)
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে ধর্মের দাবি১৯ মে ২০২৫ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি। অর্থনৈতিক সংকট, চাকরির অনিশ্চয়তা বা পরিবারের চাপে অনেকে কষ্ট পান। কিন্তু এই দোয়া স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যিকারের সমৃদ্ধি আল্লাহর রহমতে। সন্তানের ক্ষেত্রেও তাই—সন্তান লাভের সঙ্গে তাদের সুস্থতা, শান্তি ও ইমানের বরকত চাওয়া জরুরি।
আজকের দিনে, যখন পরিবারের আকার ছোট হচ্ছে এবং অর্থের চাপ বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুশীলন (যেমন দোয়া) মানসিক চাপ কমায় এবং জীবনে ইতিবাচকতা বাড়ায়। ইসলামি ঐতিহ্যে এই দোয়া শুধু ব্যক্তিগত নয়, পরিবারের জন্যও ব্যবহার করা যায়।
দোয়ার সঙ্গে সদকা দেওয়া, কোরআন তিলাওয়াত এবং হালাল উপার্জনের চেষ্টা করুন—এগুলো বরকতের দরজা খোলে।
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫