ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে এক দিনে ভর্তি ৯৫৩ জন
Published: 12th, October 2025 GMT
দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু কমছেই না। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শনিবার সকাল আটটা থেকে আজ রোববার সকাল আটটা পর্যন্ত) ৫ জন মারা গেছেন এডিস মশাবাহিত এই রোগে। আর এ সময় নতুন করে ৯৬৩ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আজ বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গু নিয়ে দেওয়া প্রাত্যহিক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
জনস্বাস্থ্যবিদ অধ্যাপক বে–নজীর আহমেদ বলেন, ‘ডেঙ্গুতে মৃত্যু কমছে না। এখন যে বৃষ্টি হয়ে গেল, এরপর আগামী ১০ দিনের মধ্যে আবারও নতুন করে ডেঙ্গুর বিস্তার হতে পারে। চলতি বছর ঢাকার বাইরে যে বেশি রোগী হবে, তা আগে থেকেই ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু এর বিস্তার রোধে সরকার তেমন কোনো কিছুই করেনি। তাই আমাদের জন্য এক ভয়ানক সময় অপেক্ষা করছে বলা যায়।’
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় এবং একজন করে মারা গেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগে। দুজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, বাকি তিনজন মারা গেছেন রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশে মোট ৫৪ হাজার ৫৫৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ২৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৫১ হাজার ৭৮৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, নতুন আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৬২ শতাংশই পুরুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের সংখ্যা।
এদিন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বাদ দিয়ে এ বিভাগে সর্বোচ্চসংখ্যক ব্যক্তি ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর সংখ্যা ১৯৭ জন। ঢাকা বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন গাজীপুর জেলায়, ৮৪ জন। আর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল ২৬৯ জন। ঢাকা বিভাগের বাইরে বরিশাল বিভাগে রোগীর সংখ্যা বেশি ছিল, এ সংখ্যা ১৪১।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে গত সেপ্টেম্বর মাসে। তবে চলতি অক্টোবর মাসে এখন পর্যন্ত মৃত্যু ও সংক্রমণ আগের যেকোনো মাসের চেয়ে বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘস্থায়ী বৃষ্টিপাত ও অপর্যাপ্ত মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের কারণে সংক্রমণ পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জন র ম ত য
এছাড়াও পড়ুন:
সম্পদ ও সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা
জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন মনে হয়, সবকিছু যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। আয়ের উৎস শুকিয়ে যাওয়া, পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকা বা জীবনে বরকতের অভাব—এসব চাপে মানুষের মন ভারী হয়ে ওঠে। ইসলামে এমন সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এমন একটি দোয়া মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সেবক আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর জন্য করেছিলেন। এই দোয়া শুধু ধন-সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি চায় না, বরং সবকিছুতে আল্লাহর বরকত কামনা করে।
দোয়ার উৎস ও প্রেক্ষাপটহাদিসে বর্ণিত, আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইম নবীজিকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার এই সেবক আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’ তখন নবীজি (সা.) দোয়া করেন: ‘আল্লাহুম্মা আকসির মালাহু ওয়া ওয়ালাদাহু, ওয়া বারিক লাহু ফীমা আ'তাইতাহু।’
এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং পৌত্রাদি মিলিয়ে তিনি ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তার ধন-সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দাও এবং তুমি যা দান করেছ, তাতে তার জন্য বরকত দান করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৪)
আনাস (রা.) তখন মাত্র দশ বছরের একটি ছেলে, যিনি নবী (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং তাঁর তিনি পৌত্রাদি মিলিয়ে ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।
দোয়ার উদ্দেশ্য শুধু ধন নয়, বরকতএই দোয়ার সৌন্দর্য এতে যে এটি ধন-সম্পদের পাশাপাশি বরকতের জন্য প্রার্থনা করে। ইসলামে ধনকে শুধু সঞ্চয় নয়, বরং আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯)
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে ধর্মের দাবি১৯ মে ২০২৫ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি। অর্থনৈতিক সংকট, চাকরির অনিশ্চয়তা বা পরিবারের চাপে অনেকে কষ্ট পান। কিন্তু এই দোয়া স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যিকারের সমৃদ্ধি আল্লাহর রহমতে। সন্তানের ক্ষেত্রেও তাই—সন্তান লাভের সঙ্গে তাদের সুস্থতা, শান্তি ও ইমানের বরকত চাওয়া জরুরি।
আজকের দিনে, যখন পরিবারের আকার ছোট হচ্ছে এবং অর্থের চাপ বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুশীলন (যেমন দোয়া) মানসিক চাপ কমায় এবং জীবনে ইতিবাচকতা বাড়ায়। ইসলামি ঐতিহ্যে এই দোয়া শুধু ব্যক্তিগত নয়, পরিবারের জন্যও ব্যবহার করা যায়।
দোয়ার সঙ্গে সদকা দেওয়া, কোরআন তিলাওয়াত এবং হালাল উপার্জনের চেষ্টা করুন—এগুলো বরকতের দরজা খোলে।
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫