রাকসু: চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচার, বাদ যাচ্ছে না মেস
Published: 12th, October 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের বাকি আর মাত্র চারদিন। আগামী ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন প্রার্থীরা।
ছুটির দিনগুলোতে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীর আনাগোনা কম থাকায় আবাসিক হল ও বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেসগুলোতে চলছে প্রচার। বিতরণ করছেন ছাপানো লিফলেট ও ইশতেহার।
আরো পড়ুন:
রাকসু নির্বাচন: ১০ দফা ইশতেহার দিল ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম
রাকসুর ভোট গণনায় সর্বোচ্চ ১৫ ঘণ্টা সময় লাগবে: রাবি উপাচার্য
জানা যায়, সকাল ১০টা থেকে আবাসিক হলগুলোতে বিভিন্ন প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ৩-৫ জন প্রতিনিধির একেকটি দল শিক্ষার্থীদের কক্ষগুলোতে গিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। বিকেলে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে ও সন্ধ্য়ায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর, কাজলা, মেহেরচন্ডীসহ আশপাশের মেসগুলোতে প্রচার চালাচ্ছেন তারা। আর সাধারণত রাত ১০-১২টা পর্যন্ত বিভিন্ন চায়ের দোকান ও রাস্তায় প্রচার চালাচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমীর আলী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী প্রণব কুমার সাহা বলেন, “ছুটি হওয়ায় আজ ক্যাম্পাসে যাইনি, হলেই ছিলাম সারাদিন। বিভিন্ন প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কক্ষে আসছেন। নিজেদের পরিচিতি তুলে ধরছেন। সাময়িকভাবে পড়াশুনায় একটু সমস্যা হলেও নির্বাচনের মৌসুমটা উপভোগ করছি।”
ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবীর বলেন, “সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমাদোর প্রচার চলছে। আবাসিক হল ও মেসগুলোতে বেশি ফোকাস করছি। বিকেলে শিক্ষার্থীরা হাটতে বের হন। তখন আমরা ক্যাম্পাসেও প্রচার চালাব। আচরণবিধি মেনে নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আমাদের প্রচার চলবে।”
ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “নির্বাচন খুবই সন্নিকটে। আমরা প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছি। প্যানেলের কয়েকজন প্রার্থীর সমন্বয়ে অনেকগুলো টিম করা হয়েছে। তারা শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে আমাদের ইশতেহার তুলে ধরছে। শিক্ষার্থীরা ভালো সাড়া দিচ্ছে।”
এদিক, রাবিতে মোট ভোটার প্রায় ২৯ হাজার। এর মধ্যে ৬৮ শতাংশই অনাবাসিক শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি আবাসিক হল ও একটি আন্তর্জাতিক ডরমিটরিতে আবাসিক সুবিধা আছে মাত্র ৯ হাজার ৬৭৩ শিক্ষার্থীর জন্য। বাকিরা আশপাশের এলাকা যেমন বিনোদপুর, কাজলা, ভদ্রা ও মেহেরচণ্ডীতে মেস বা ভাড়া বাসায় থাকেন। এসব অনাবাসিক ভোটারদের কাছে পৌঁছানো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রার্থীদের জন্য।
বড় সংগঠনগুলোর প্রার্থীরা তাদের দলীয় কর্মীদের মাধ্যমে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য এটি রীতিমতো কঠিন কাজ। কর্মী সংখ্যা কম থাকায় অনেক প্রার্থী নিজেরাই মেসে গিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন।
স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী মোহাম্মদ মুসা বলেন, “দলীয় প্রার্থীদের মতো আমাদের বিভাগে বিভাগে কর্মী নেই। তাই প্রতিটি মেসে যেতে অনেক সময় ও শ্রম লাগছে। তবুও যতটা পারি চেষ্টা করছি।”
রাকসুর প্রথম নারী ভিপি প্রার্থী তাসিন খান বলেন, “আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই, তাই আমাদের কর্মীও সীমিত। শহরের নানা এলাকায় থাকা ভোটারদের কাছে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে। যদি সব ভোটারের কাছে গিয়ে আমাদের পরিকল্পনা জানাতে পারতাম, ভালো ফল পেতাম।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল রহমান বলেন, “আমাদের মেসে রাজনৈতিক দলগুলোর প্যানেলের প্রার্থীরা একাধিকবার এসেছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে কয়েকজন মাত্র একবার এসেছেন। দলের প্রার্থীরা প্রচারে অনেক বেশি সক্রিয়।”
রাকসু নির্বাচনে ২৩টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৪৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ভিপি পদে ১৮, জিএস পদে ১৩ এবং এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৬ জন। ছাত্রদল ও শিবির সমর্থিতসহ মোট ১২টি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও, সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের পাঁচটি পদে ৫৮ জন প্রার্থী ও হল সংসদ নির্বাচনে ১৫টি পদে মোট ১৭টি হলে ৫৯৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
রাকসু ও সিনেট নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৮ হাজার ৯০১ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১১ হাজার ৩০৫ এবং পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৬ জন। পূনর্বিন্যস্ত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ। গণনা শেষে সেদিনই ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বতন ত র প র র থ জন প র র থ র জন য আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
হংকংয়ে আবাসিক ভবনে আগুনে মৃত্যু বেড়ে ৪৪, নিখোঁজ ২৭৯
হংকংয়ের উত্তরাঞ্চলীয় তাই পো এলাকায় আবাসিক ভবনে ছড়িয়ে পড়া অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ২৭৯ জন।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিবিসির লাইভ রিপোর্টে বলা হয়, আগুন ১৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জ্বলছে। ৮০০ জনেরও বেশি অগ্নিনির্বাপক কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
আরো পড়ুন:
কড়াইল অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা নিশ্চিতের আশ্বাস প্রধান উপদেষ্টার
করাইল বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড: ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটি
বুধবার হংকংয়ের উত্তরাঞ্চলীয় তাই পো জেলার ওয়াং ফুক কোর্টে আগুনের সূত্রপাত। এটি আটটি ব্লক নিয়ে গঠিত দুই হাজার ইউনিটের একটি আবাসিক কমপ্লেক্স। স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৫১ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় দমকল বিভাগ।
আগুন নেভাতে গিয়ে ৩৭ বছর বয়সী এক অগ্নিনির্বাপক কর্মী মারা গেছেন। সরকার তাকে ‘নিষ্ঠাবান ও সাহসী’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
বিল্ডিংগুলোর ভেতর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া আত্মীয়দের খোঁজে সহায়তা চেয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করছেন বাসিন্দারা।
বিবিসিতে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা কালো হয়ে যাওয়া টাওয়ারগুলোতে পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন। দমকল সদস্যরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে আগুনের তীব্রতা কমাতে কাজ করে যাচ্ছেন।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৩টি স্কুল আজ ক্লাস স্থগিত করেছে।
এদিকে, এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ‘হত্যার’ অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে দুজন একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও একজন প্রকৌশল পরামর্শক।
পুলিশের মুখপাত্র বলেন, “আমাদের বিশ্বাস, কোম্পানির দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা গুরুতর অবহেলার পরিচয় দিয়েছেন। তাদের অবহেলাই এই দুর্ঘটনার কারণ এবং আগুন অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে।”
ঢাকা/ইভা