অনিবন্ধিত এজেন্সির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা
Published: 16th, October 2025 GMT
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন কিংবা ট্রাভেল এজেন্সির নিবন্ধন সনদ ছাড়া ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করলে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে সরকার। আগামী ৬ নভেম্বর মধ্যেই নিবন্ধন আবেদন দাখিল করতে হবে। এরপরে লাইসেন্স ছাড়া কার্যক্রম চালালে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে আটাবসহ সংশ্লিষ্টদের চিটি দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
এতে বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে দেশে বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন বা ট্রাভেল এজেন্সির নিবন্ধন সনদ ছাড়া ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার ফলে আকাশপথে পরিবহন সংক্রান্ত অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি ও প্রতারণা সংক্রান্ত অপরাধের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ইতঃপূর্বে মন্ত্রণালয় হতে বিভিন্ন সময়ে অনিবন্ধিত ট্রাভেল এজেন্সিসমূহকে আইন ও বিধি অনুযায়ী নিবন্ধনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলেও যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩, বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০২১ এবং বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২২ অনুযায়ী নিবন্ধন সনদ গ্রহণ ছাড়া এবং মেয়াদোত্তীর্ণ নিবন্ধন সনদ নবায়ন ছাড়া ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা পরিচালনা করা আইনের লঙ্ঘন ও অপরাধ।
এ অবতাবস্থায়, অনিবন্ধিত ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা পরিচালনাকারী সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে (www.
নির্ধারিত তারিখ অতিক্রান্তের পর নিবন্ধন ছাড়া কোনো ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা পরিচালনা করলে বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩, বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০২১, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এবং মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ অনুযায়ী কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ফ্রিল্যান্সিং করে ২২ বছরের তানিয়ার মাসে আয় লাখ টাকা
অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছিল তানিয়া খলিলের (২২)। বিয়ের বছরখানেক পরই মা হন তিনি। এরই মধ্যে সংসার আর শিশুসন্তান সামলিয়েই তিনি হয়ে ওঠেন ফ্রিল্যান্সার। নিজে ফ্রিল্যান্সিং শিখে অন্যদেরও এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। এখন তাঁর মাসে আয় প্রায় এক লাখ টাকা।
তানিয়ার বাড়ি খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা পৌরসভার বাজারপাড়া এলাকায়। ২০২১ সালে মাটিরাঙ্গা কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় তাঁর বিয়ে হয়। স্বামী ইব্রাহিম খলিল পেশায় ফ্রিল্যান্সার। সেই সুবাদে তানিয়ারও এ জগতে চলা শুরু। ২০২৩ সালের শুরুতে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই খাগড়াছড়ি সদরে চলে আসেন। সেখানেই এখন দুজন ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণকেন্দ্র চালান।
তানিয়া জানান, বিয়ের পর পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারের দায়িত্বে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন তিনি। এর মধ্যেও ঘরে বসে কিছু করতে চাইতেন। এরপর স্বামী ইব্রাহিম খলিল তাঁকে ফ্রিলান্সিং শেখার জন্য উৎসাহ দিতে থাকেন। তিনিও সে সুযোগ হাতছাড়া করেননি।
প্রথম আয় আমাকে অসম্ভব আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। মনে হয়েছিল, সত্যিই কিছু করার সামর্থ্য আছে আমার।—তানিয়া খলিল, ফ্রিল্যান্সারতানিয়া খলিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি প্রথমে গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ শেখা শুরু করি। রং, লে আউট, টাইপোগ্রাফি—সবই আমার কাছে নতুন ছিল। নিজের আগ্রহ থাকায় দ্রুত শিখে ফেলি। কয়েক মাসের মধ্যেই নিজেকে ফ্রিল্যান্সিং বাজারের জন্য তৈরি করে ফেলতে সক্ষম হয়েছি।’
ফ্রিল্যান্সিং শেখার মধ্যেই ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রথম কাজ পেয়েছেন তানিয়া। লোগো ডিজাইন করে সে মাসে তিনি ১৩ ডলার আয় করেছিলেন। এর পর থেকে আর থেমে থাকতে হয়নি তাঁকে। সেই স্মৃতি মনে করে তানিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথম আয় আমাকে অসম্ভব আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। মনে হয়েছিল সত্যিই কিছু করার সামর্থ্য আছে আমার।’
তানিয়া বলেন, লোগো ডিজাইনের পর ব্র্যান্ড আইডেনটিটি, বিজনেস কার্ড, লেটারহেড তৈরিসহ নানান ধরনের কাজে দক্ষ হয়ে ওঠেন তিনি। গ্রাহকদের খুশি করতে পারায় দ্রুতই আন্তর্জাতিক বাজারে সুনাম বাড়ে তাঁর। এরপর একের পর এক কাজ আসতে থাকে। আয়ও সমানতালেই বাড়তে থাকে। বর্তমানে তিনি ফাইভারের পাশাপাশি আপ ওয়ার্কে ফ্রিল্যান্সের কাজ করেন।
সম্প্রতি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, তিনতলা ভবনের দোতলায় প্রায় ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৫ ফুট প্রস্থের বিশাল কক্ষে সারিবদ্ধভাবে ল্যাপটপ নিয়ে বসে রয়েছেন কয়েকজন তরুণী। তানিয়া তাঁদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। একটু শুনতেই বোঝা গেল তানিয়া তরুণীদের গ্রাফিক ডিজাইন কীভাবে করতে হয়, তা নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন।তানিয়ার জন্য এসব কাজ অবশ্য খুব একটা সহজ ছিল না। সময়মতো কাজ জমা দেওয়া, গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ, সন্তানকে দেখাশোনা—সব মিলিয়ে প্রতিদিনই ছিল চ্যালেঞ্জের। তানিয়া বলেন, ‘পরিবারের সাপোর্ট না থাকলে এটা সম্ভব হতো না। আমার স্বামী এখনো আমার সবচেয়ে বড় সহযোগী।’
খাগড়াছড়ি শহরে নারীদের ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তানিয়া খলিল। সম্প্রতি তোলা