ইচ্ছাশক্তি, অধ্যবসায় ও আত্মত্যাগ থাকলে বয়স কোনো বাধা নয়—এ কথার জীবন্ত উদাহরণ হয়ে উঠেছেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাফেজ শামীম মৃধা। ৩৬ বছর বয়সে এসে তিনি এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করে নজির সৃষ্টি করেছেন।

এ বছর শামীম মৃধা সিটি ইনফরমেশন টেকনোলজি ইনস্টিটিউট থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৪.

৬৭ পেয়েছেন। তার এমন সাফল্যে প্রশংসার জোয়ার বইছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই তাকে অভিনন্দন জানিয়ে অনুপ্রেরণাদায়ী ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

শামীম মৃধা জীবনের শুরুর দিক থেকেই ছিলেন সংগ্রামী। অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়ে পরিবারের ভার কাঁধে তুলে নেন তিনি। ছোট চার ভাই-বোনের শিক্ষার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজের পড়াশোনা থেমে যায়।

তিনি বলেন, “আব্বা যদি আজ বেঁচে থাকতেন, সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন। তার স্বপ্নই আমাকে আবার পড়াশোনায় ফিরিয়ে এনেছে। আমি চাই, নিজের শিক্ষাকে সমাজসেবার শক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে।”

২০২৩ সালে এসএসসি পাস করার পর এবার এইচএসসি পাস করে তিনি শিক্ষার আরেক ধাপ অতিক্রম করলেন। ভবিষ্যতে ডিগ্রি পর্যায়ে ভর্তি হয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন এই জনপ্রতিনিধি।

মাওনা উত্তরপাড়া সামাদনগর মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা রেজাউল করিম বলেন, “রাজনীতির পাশাপাশি আত্মগঠনের যে নজির শামীম মৃধা স্থাপন করেছেন, তা সত্যিই অনুকরণীয়। হাফেজ হয়েও আধুনিক শিক্ষায় এগিয়ে যাওয়ার তার প্রচেষ্টা তরুণ সমাজের জন্য দৃষ্টান্ত।”

স্থানীয় বাসিন্দারাও তার এই সাফল্যে গর্বিত। তারা বলেন, শিক্ষা বয়সের সীমারেখা মানে না—এ সত্য প্রমাণ করেছেন ইউপি সদস্য শামীম মৃধা। তিনি শুধু একজন জনপ্রতিনিধি নন, বরং সমাজে অনুপ্রেরণার এক আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছেন। পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ ও অধ্যবসায় অন্যদেরও উৎসাহিত করবে।

ঢাকা/রফিক/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প স কর কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ফল খারাপের কারণ পর্যালোচনা করা হবে: শিক্ষা উপদেষ্টা

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল খারাপের প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে আগামী সপ্তাহে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ডাটাভিত্তিক পর্যালোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আববার। 

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ফল প্রকাশ উপলক্ষে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “এবারের ফল অস্বস্তিকর হলেও বাস্তবভিত্তিক। কেন এমন হলো, তার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে আগামী সপ্তাহে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ডাটাভিত্তিক পর্যালোচনা করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ দায় এড়াতে পারে না।” 

তিনি আরো বলেন, “দেশে একটি ভুল সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল, যেখানে ফলাফলের সংখ্যাই হয়ে উঠেছিল প্রধান মানদণ্ড। ফল ভালো দেখাতে গিয়ে শেখার সংকট আড়াল করার প্রবণতা আমরা বন্ধ করতে চাই।” 

তিনি জানান, পরীক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, বিশেষ করে সীমান্তরেখায় থাকা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে যেন ন্যায্যতা বজায় থাকে।

এ বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৫৮.৮৩ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় ১৯ শতাংশ কম। ২০২৪ সালে পাসের হার ছিল ৭৭.৭৮ শতাংশ।

বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল হক জানান, এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেন ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছেন ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন এবং ফেল করেছেন ৫ লাখ ৮ হাজার ৭০১ জন।

ঢাকা/এএএম/ইভা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টাঙ্গাইলের দুই বোন এইচএসসিতে জিপিএ-৫, হতে চান ম্যাজিস্ট্রেট
  • ভিকারুননিসায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমেছে
  • রাজশাহীতে পাসের হার ৫৯ দশমিক ৪০ শতাংশ 
  • এইচএসসিতে শতভাগ পাসের প্রতিষ্ঠান কমেছে হাজারের বেশি
  • এইচএসসিতে সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৫১ দশমিক ৮৬ শতাংশ
  • সিলেট বোর্ডে ১৯ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পাসের হার, কমেছে জিপিএ-৫
  • এইচএসসিতে শতভাগ জিপিএ-৫ পেল মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ
  • ২১ বছরে এইচএসসিতে সর্বনিম্ন পাস: শিক্ষায় ‘গলদ’ না অন্য কিছু
  • ফল খারাপের কারণ পর্যালোচনা করা হবে: শিক্ষা উপদেষ্টা