বল এখন তালেবানের কোর্টে: পাকিস্তান
Published: 16th, October 2025 GMT
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ জানিয়েছেন, কাবুল যদি ইসলামাবাদের ‘ন্যায্য’ শর্ত পূরণে সম্মত হয়, তাহলে পাকিস্তান আলোচনায় প্রস্তুত। বৃহস্পতিবার তিনি এ কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে ডন অনলাইন।
সীমান্তে নতুন করে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর পাকিস্তান ও আফগানিস্তান বুধবার একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (এফও) জানিয়েছে, তালেবানের অনুরোধে এবং পারস্পরিক সম্মতিতে কার্যকর হওয়া এই যুদ্ধবিরতি ১৫ অক্টোবর স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে কার্যকর হয়েছে এবং ৪৮ ঘন্টা স্থায়ী হবে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ জানিয়েছেন, আফগান পক্ষ যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করেছে এবং একটি আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করেছে।
তিনি বলেন, “গতকাল আমরা ৪৮ ঘন্টার অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছি (এবং) বার্তা পাঠানো হয়েছে যে তারা যদি আলোচনার মাধ্যমে আমাদের ন্যায্য শর্ত পূরণ করতে চায়, তাহলে আমরা প্রস্তুত। বল তাদের কোর্টে।”
পাকপ্রধানমন্ত্রী জানান, যদি আফগান পক্ষ আন্তরিক হয় এবং গুরুত্ব দেয়, তাহলে পাকিস্তান আলোচনার জন্য পদক্ষেপ নেবে। পাকিস্তানের মিত্র দেশগুলো, বিশেষ করে কাতারও পরিস্থিতি সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, দুই দেশের মধ্যে সর্বশেষ পরিস্থিতি দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে সমাধান করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে আফগান মাটি থেকে ফিতনা আল-খাওয়ারিজ নির্মূল করা যাতে প্রতিবেশী দেশের ভূখণ্ড আর সন্ত্রাসীদের দ্বারা ব্যবহৃত না হয়।
ফিতনা-আল-খাওয়ারিজ শব্দটি রাষ্ট্র নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের সন্ত্রাসীদের জন্য ব্যবহার করে ইসলামাবাদ।
প্রসঙ্গত, বুধবার পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সীমান্তে আবারও সংঘাতের ঘটনা ঘটে। এতে পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় অন্তত ১২ জন আফগান বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে কাবুলের তালেবান প্রশাসন। এর আগে গত রবিবার আফগানিস্তানের উত্তর সীমান্তের একাধিক পাহাড়ি স্থানে পাকিস্তানি সেনাদের উপর আক্রমণ করেছিল তালেবান। এই হামলায় পাকিস্তানের ৫৮ সেনা নিহত হয়।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদে ‘ইতিহাস বিকৃতি ও পুনর্লিখনের’ নিন্দা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
জুলাই সনদের খসড়ায় ‘ইতিহাস বিকৃতি ও পুনর্লিখন’ ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাদের অভিযোগ, জুলাই সনদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ’২৪-এর জুলাই ছাত্র-জনতার ধারাবাহিক লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাস সম্পূর্ণভাবে অনুপস্থিত, যা জুলাইয়ের শহীদদের রক্তের সঙ্গে একধরনের বিশ্বাসঘাতকতা।
বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, ‘২৪-এর জুলাই ছাত্র-জনতার যে রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট ও খুনি হাসিনার পলায়ন ঘটেছিল, তা ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার ধারাবাহিক লড়াই-সংগ্রামের ফসল। যার সূচনা হয় ১ জুলাই ২০২৪-এ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গঠনের মধ্য দিয়ে, যা ক্রমে ৯ দফা থেকে এক দফায় রূপান্তরিত হয়। সেই এক দফা ছিল ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘এই যে ৯ দফা এবং পরবর্তী সময়ে এক দফা, যার মধ্য দিয়ে ছাত্র-জনতার অতি অভিপ্রায় স্পষ্ট হয়েছিল; সেই অভিপ্রায়ের ফলেই বাংলাদেশের আমূল সংস্কার, নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এবং একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নের বনিয়াদ স্থাপিত হয়েছিল। কিন্তু এই জুলাই সনদে সেই বনিয়াদকে ধ্বংস করার পাশাপাশি ছাত্র-জনতার অভিপ্রায়ের বিকৃতি ঘটেছে।’
সংস্কারপ্রক্রিয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জুলাইয়ের শহীদ পরিবার, আহত ব্যক্তি ও ছাত্রদের উপেক্ষা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
তাদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে রাষ্ট্রের ইতিহাসকে বিলীন করা হয়েছে, যার নজির পূর্বেও রয়েছে। অতীতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা ছাত্র-জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বারবার প্রতারণা করতে দেখেছি। এখনো সেই একই প্রবণতা আমরা লক্ষ করছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ ধরনের ইতিহাসবিকৃতির পুনরাবৃত্তিকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা আরও লক্ষ করেছি, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও নোট অব ডিসেন্টের সমাধান না করেই দ্রুত স্বাক্ষর সম্পন্ন করার টালবাহানা চলছে।
পূর্বেও জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে এমন টালবাহানা দেখা গেছে, অথচ সেই ঘোষণাপত্র এখনো আইনি বৈধতা পায়নি। অর্থাৎ ছাত্র-জনতা এখন আর কথার এসব ফুলঝুড়িতে বিশ্বাস করে না। তাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জুলাই সনদের স্বাক্ষর কার্যক্রম সম্পন্নের আগে এর আইনি ভিত্তি ও নোট অব ডিসেন্টের সমাধান নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে। একই সঙ্গে সব রাজনৈতিক দল, জুলাইয়ের শহীদ পরিবার ও আহত এবং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে ছাত্রদের মাধ্যমে জুলাই সনদের পরিপূর্ণতা ও বৈধতা নিশ্চিত করারও আহ্বান জানাচ্ছে।’