নামিরা আজম এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ–৫ পেয়েছেন। এইচএসসির দুই বছর তিনি নানা কারণে পড়ালেখা করতে পারেনি। টেস্ট ও প্রিটেস্টের ফলাফলও ভালো ছিল না। কিন্তু পরীক্ষা শুরুর আগে দুই মাস তিনি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন বলে জানান। আর তাতেই ফল এমন হয়েছে। নামিরা বলেন, ‘ঘণ্টা হিসাবে নয়, নিজের দুর্বলতা বুঝে পড়েছি।’

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ–৫ পেয়েছেন ৭৯৭ জন। নামিরা আজম তাঁদেরই একজন। তবে ফলাফল প্রকাশের দিনে শত শত শিক্ষার্থীর উচ্ছ্বাস আর প্রাণের উল্লাসের মধ্যে তাঁকে বিশেষভাবে চোখে পড়ার কারণ তাঁর ম্লান মুখ।

আরও পড়ুন২১ বছরে এইচএসসিতে সর্বনিম্ন পাস: শিক্ষায় ‘গলদ’ না অন্য কিছু১৭ ঘণ্টা আগে

বৃহস্পতিবার দুপুরে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে সহপাঠীদের সাহচর্য ছাড়া, গণমাধ্যমের ক্যামেরা এড়িয়ে মায়ের হাত ধরে একপাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলেন সদ্য এইচএসসি পাস করা নামিরা আজম। ম্রিয়মাণ দেখে সন্দেহ হয়েছিল, হয়তো অকৃতকার্য হয়েছেন। কিন্তু ফলাফল জানতে চাইলে বললেন, ‘আমি জিপিএ–৫ পেয়েছি। এসএসসিতেও জিপিএ–৫ ছিল।’ তাহলে এত মন খারাপের কারণ কী—জিজ্ঞেস করলে নামিরা বলেন, ‘আমার বাবা আমার এইচএসসি পাস করা দেখে যেতে পারলেন না।’

নামিরার বাবা মোহাম্মদ রফিকুল আজম চার বছর ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে মারা গেছেন ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে। নামিরার একমাত্র বড় ভাই মুশফিকুল আজম ডাউন সিনড্রোমের রোগী। রাজধানীর শাহজাহানপুরে ভাড়া বাসার খরচসহ মেয়ের পড়ালেখা চালিয়ে নিতে রীতিমতো সংগ্রাম চলছে নামিরার মা সালমা আক্তারের। বৃহস্পতিবার দুপুরে মেয়েকে নিয়ে তিনি উপস্থিত ছিলেন কলেজ মাঠে।

সালমা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘নামিরাকে নিয়ে কলেজে বা কোচিংয়ে যাওয়ার সময় বাসায় ২৫ বছরের ছেলেকে দরজায় তালাবদ্ধ করে বের হতে হয়। এই শহরে তিনজন মানুষের টিকে থাকার লড়াইটা অনেক কষ্টের। মেয়ে যে জিপিএ–৫ পেয়েছে, আমার কাছে তা–ই অনেক। ও শেষের দিকে খুব সিরিয়াস হয়েছে পড়ালেখায়।’

নামিরা ফলাফল নিয়ে মায়ের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফল ফল

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে দুই কলেজে শতভাগ ফেল

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে গোপালগঞ্জ জেলার দুই কলেজের শতভাগ শিক্ষার্থী ফেল করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) প্রকাশিত ফলাফলে এমন তথ্য জানা গেছে।

শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপালগঞ্জ আইডিয়াল কলেজ। এ কলেজ থেকে ৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই ফেল করেছেন।

অপরটি টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কবীর হোসেন আইডিয়াল কলেজ। এ কলেজ থেকে ৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। সবাই অকৃতকার্য হয়েছেন।

ফলাফল প্রকাশের পরে সরেজমিন গোপালগঞ্জ আইডিয়াল কলেজে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের গেটে তালা ঝুলছে। প্রায় এক ঘন্টা অবস্থান করেও কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর দেখা মেলেনি। একই অবস্থা দেখা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কবীর হোসেন আইডিয়াল কলেজের। তবে, এ কলেজের গেট খোলা থাকলেও পাওয়া যায়নি কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থীকে।

এ বিষয়ে জানতে দুই কলেজের অধ্যক্ষের মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তারা রিসিভ করেননি।

গোপালগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমীন বলেন, ‘‘এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে সারা দেশের মতো গোপালগঞ্জেও হতাশাজনক। এর মধ্যে, দুই কলেজ থেকে কেউ পাশ করেনি। ওই কলেজগুলোর বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হবে এবং ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হবে।’’

ঢাকা/বাদল/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এইচএসসির পর পড়তে পারেন আয়ুর্বেদ ও ইউনানি বিষয়ে
  • রংপুরে এবারো শীর্ষে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, দ্বিতীয় পুুলিশ লাইন্স
  • পাসের হারে পিছিয়ে কুমিল্লা বোর্ড, ভরাডুবি ২ বিষয়ে
  • এইচএসসি ফলাফল: নরসিংদীর দেশসেরা কলেজেও ধস
  • এইচএসসির ফলাফল: টাঙ্গাইলের ৭ কলেজে শতভাগ ফেল
  • এইচএসসির ফলের আড়ালে চোখের জল, শিক্ষায় কীসের সংকেত
  • এইচএসসির ফলে সেনাবাহিনী পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে অসাধারণ সাফল্য
  • কালীগঞ্জে এইচএসসি ফলাফলে পাসের চেয়ে ফেল বেশি
  • গোপালগঞ্জে দুই কলেজে শতভাগ ফেল