রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ভিপি ও এজিএসসহ ২৩টি পদের ২০টিতেই জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির–সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল। তবে জিএস, ক্রীড়া ও খেলাধুলাবিষয়ক সম্পাদক এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে তারা হেরেছে।

আজ শুক্রবার সকাল নয়টার দিকে রাকসু নির্বাচনের প্রধান কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে এই ফলাফল ঘোষণা করেন।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি ভবনের ১৭টি কেন্দ্রে ১৭ হলের শিক্ষার্থী ভোট দেন। দিনভর পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্যে বিকেলে ভোট গ্রহণ শেষ হয়। এর সাড়ে চার ঘণ্টা পর রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ভোট গণনা শুরু হয়। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে নারী হল দিয়ে ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়। রাতভর গণনা শেষে আজ সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

নির্বাচনে ১০টি প্যানেলসহ রাকসুর ২৩ পদে ২৪৭ জন, হল সংসদে ১৫ পদে ১৭টি হলে ৫৯৭ প্রার্থী এবং সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ৫টি পদে ৫৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। রাকসুতে ভিপি পদে ১৮ জন, জিএস পদে ১৩ জন ও এজিএস পদে ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৮ হাজার ৯০১। এর মধ্যে ছাত্রী ভোটার ১১ হাজার ৩০৫ জন ও ছাত্র ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৬ জন। নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৬৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এর মধ্যে ছয়টি নারী হলে ভোট পড়ার হার ৬৩ দশমিক ২৪ শতাংশ।

আরও পড়ুনডাকসু–জাকসু–চাকসুর পর রাকসুতেও শিবিরের জয় ১ ঘণ্টা আগে

শিবির প্যানেল যেসব পদে নির্বাচিত
ফলাফলে ছাত্রশিবির–সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের মোস্তাকুর রহমান (জাহিদ) ভিপি পদে ১২ হাজার ৬৮৭ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। একই পদে নিকটতম ছাত্রদল–সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দীন (আবীর) ভোট পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৯৭টি।

এজিএস পদে (সহসাধারণ সম্পাদক) শিবির–সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী এস এম সালমান সাব্বির ৬ হাজার ৯৭৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেলের জাহিন বিশ্বাস (এষা) পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৫১ ভোট।
সহকারী ক্রীড়া ও খেলাধুলাবিষয়ক সম্পাদক পদে আবু সাঈদ মুহাম্মাদ নুন (সামি), সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক পদে জায়িদ হাসান জোহা, সহকারী সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক মো.

রাকিবুল ইসলাম, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদে সাইয়িদা হাফছা, সহকারী মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদে সামিয়া জাহান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে বি এম নাজমুছ সাকিব, সহকারী তথ্য ও গবেষণা পদে সিফাত আবু সালেহ, মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে মো. মুজাহিদুল ইসলাম, সহকারী মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে আসাদুল্লাহ গালিব, সহকারী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে মুজাহিদুল ইসলাম সাঈম, বিতর্ক ও সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক পদে ইমরান লস্কর, সহকারী বিতর্ক ও সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক পদে মো. নয়ন হোসেন, পরিবেশ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক পদে আবদুল্লাহ আল মাসুদ, সহকারী পরিবেশ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক পদে মাসুমা ইসরাত। এ ছাড়া নির্বাহী সদস্যপদের চারটিতেই তারা জয়ী হয়েছে। তাঁরা হলেন মো. দীপ মাহবুব, সুজন চন্দ্র, মো. ইমজিয়াউল হক কামালি ও এ বি এম খালেদ।  

তিন পদে যাঁরা নির্বাচিত হলেন
শীর্ষ দ্বিতীয় পদ জিএস, শীর্ষ চতুর্থ পদ ক্রীড়া ও খেলাধুলাবিষয়ক সম্পাদক পদ এবং ১৪তম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদগুলোয় অন্যরা নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলের সালাহউদ্দিন আম্মার বড় ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি মোট ভোট পেয়েছেন ১১ হাজার ৪৯৭টি। তাঁর নিকটতম শিবিরের প্যানেলের জিএস প্রার্থী ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা পেয়েছেন ৫ হাজার ৭২৭ ভোট। আম্মার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক। ফাহিম রেজাও সাবেক সমন্বয়ক।

ক্রীড়া ও খেলাধুলাবিষয়ক সম্পাদক পদে জাতীয় নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড় নার্গিস খাতুন নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ছাত্রদল–সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের প্রার্থী হয়েছিলেন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে জয়ী হয়েছেন তোফায়েল আহমেদ (তোফা)।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ব চ ত হয় ছ ন সমর থ ত ল ইসল ম জ এস প ফল ফল সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

অভিযানকালে ডাকাতের কোপে আহত পুলিশের এসআই

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় অভিযানে গিয়ে ডাকাতের কোপে আহত হয়েছেন পুলিশের এক উপ-পরিদর্শক (এসআই)। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের জুমার পাড়ায় এ হামলা হয়। ডাকাতদলের সদস্যরা নুর ইসলাম নামের ওই এসআইর হাতে ও পায়ে কোপ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াসিম ফিরোজ।

পুলিশ জানিয়েছে, আমনুরা বাইপাস সড়কের জুমার পাড়া এলাকায় সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি করা হবে, এমন আশঙ্কায় স্থানীয় এক ব্যক্তি জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯-এর মাধ্যমে পুলিশকে খবর দেন। এ খবর পেয়ে আমনুরা তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক নুর ইসলাম এবং ওই এলাকায় পুলিশের চেকপোস্টে দায়িত্বে থাকা সদস্যদের বিষয়টি অবগত করলে তারা ঘটনাস্থলে রওনা দেন। নুর ইসলাম প্রথমেই ঘটনাস্থলেই পৌঁছে যাওয়ায় একা পেয়ে তার ওপর হামলা চালায় ডাকাতদলের সদস্যরা।

এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াসিম ফিরোজ বলেছেন, অভিযানে গিয়ে ডাকাতের দায়ের কোপে নুর ইসলাম নামের এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তিনি আমনুরা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে উপ-পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত। ওই পুলিশ সদস্যকে একা পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ডাকাতদলের সদস্যরা হাতে ও পায়ে এলোপাতাড়ি কোপ দেয়। এর মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। পরে ওই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছে, তিনি আশঙ্কামুক্ত।

ডাকাতদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন ওয়াসিম ফিরোজ।

ঢাকা/শিয়াম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ