‘কিছু দল জাতীয় ঐকমত্যের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে’
Published: 17th, October 2025 GMT
কিছু রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐকমত্যের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানীর বাংলা মোটরে ইস্কাটন নেভি কলোনিতে ‘জাতীয় শ্রমিক শক্তি‘র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
নাহিদকে পরিষ্কার করতে হবে, কারা ‘সেফ এক্সিট’ চায়: রিজওয়ানা
শাপলাই কেন লাগবে, যে ব্যাখ্যা দিল এনসিপি
নাহিদ ইসলাম বলেছেন, "যে দিনে কিছু রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐকমত্যের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে একটি কাগজে সই করছে, সেই দিনে জাতীয় শ্রমিক শক্তি রাজপথে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। আমরা জানি, রাজপথের শক্তি জয়ী হয়। ইনশাআল্লাহ, জাতীয় শ্রমিক শক্তিও জয়ী হবে। জাতীয় নাগরিক পার্টি শ্রমিকদের পক্ষে রাজনীতি করবে।”
রাজনৈতিক দলের ঐক্য জাতীয় ঐক্য নয়, উল্লেখ করে এনসিপির আহ্বায়ক বলেছেন, “জাতীয় ঐক্য তখন হয়, যখন সমাজের সব অংশের মানুষ দেশপ্রেমের ভিত্তিতে এক হয়ে লড়াই করে, যেটা আমরা দেখেছিলাম জুলাই গণঅভ্যুত্থানে। সে সময় কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানার দেখিনি, শুধু দেখেছিলাম ছাত্র-শ্রমিক এবং নানা পেশাজীবী। আমরা সেই জাতীয় ঐক্যের দিকে এগোচ্ছি, যেখানে ছাত্র-শ্রমিক কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংগ্রাম করবে, লড়াই করবে।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “বিগত ১৬ বছরে শেখ হাসিনার যে স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা ছিল, সেখানে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছেন শ্রমিকরা। ন্যায্য মজুরির জন্য চব্বিশের শুরুর দিকেও আন্দোলনে নামতে হয়েছিল তাদের। পুলিশের গুলিতে শ্রমিক মারা গিয়েছিলেন। সে সময় শ্রমিকের অধিকার ছিল না।”
তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে অনেকগুলো কমিশন গঠিত হয়েছে। কিন্তু, শ্রম কমিশন নিয়ে কোনো আলোচনা দেখা যায়নি। স্বাস্থ্য কমিশন নিয়েও কোনো আলাপ নেই। মানুষের জীবনের সঙ্গে যে গণসেবামূলক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান জড়িত, তার সংস্কার নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। শুধু নির্বাচনকেন্দ্রিক ছয়টি সংস্কার কমিশন নিয়ে ঐকমত্য কমিশন গঠন হয়েছে। সেখানেও গণতন্ত্রের জন্য ভালো কিছু দেখতে পাচ্ছি না।”
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, “যেই মাফিয়ারা শ্রমিকদের শোষণ করে গেছে, লুটপাট করে গেছে, তাদেরকে এখনো বিচারের আওতায় আনা হয়নি, তাদেরকে এখনো প্রটেকশন দেওয়া হচ্ছে।”
জাতীয় শ্রমিক শক্তির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, “জাতীয় শ্রমিক শক্তি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবে। বাংলাদেশে সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সব প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের প্রতি অসম্মানের আচরণ করা হয়। রাষ্ট্রীয়ভাবেও এ বৈষম্য চালানো হচ্ছে।”
ঐক্য, সংগ্রাম, মর্যাদা ও মুক্তির পতাকা হাতে শ্রমিকের রাষ্ট্রক্ষমতা প্রতিষ্ঠার সুদূরপ্রসারী অঙ্গীকার নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অঙ্গসংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘জাতীয় শ্রমিক শক্তি’। সংগঠনটির আহ্বায়ক হয়েছেন মাজহারুল ইসলাম ফকির, সদস্য সচিব রিয়াজ মোরশেদ ও মুখ্য সংগঠক আরমান হোসেন।
ঢাকা/রায়হান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হ দ ইসল ম জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প ঐকমত য ইসল ম এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
আইনি ভিত্তি ছাড়া জুলাই সনদ স্বাক্ষর করব না: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “আমরা আইনি ভিত্তি এবং অর্ডারের ব্যাপারে নিশ্চয়তা ছাড়া যদি জুলাই সনদে স্বাক্ষর করি, সেটা মূল্যহীন হবে। পরের সরকার এলে কীসের পরিপ্রেক্ষিতে দেবে, কী টেক্সট হবে, সে নিশ্চয়তা আমরা চাই। সেই বিষয়টা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা জুলাই সনদের স্বাক্ষরের যেই অনুষ্ঠান বা যেই আয়োজনটা চলছে, সেখানে আমরা নিজেরা অংশীদার হব না।”
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বাংলা মোটরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেছেন।
নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ সনদ স্বাক্ষরের আগেই প্রকাশ করতে হবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জনগণের সার্বভৌম অভিপ্রায় অনুসারে প্রধান উপদেষ্টা জারি করবেন। জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আগেই সনদ বাস্তবায়নের যে আদেশটা হবে, সে আদেশের খসড়ায় আমাদের ঐকমত্য হতে হবে। তার ওপর ভিত্তি করে আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষরের বিষয়টা বিবেচনা করব।”
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, “আদেশের টেক্সট যেটা, তার খসড়া আমরা আগে দেখতে চাই। ড. ইউনূস তিনি যেহেতু জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শক্তিতে সরকার গঠন করেছেন, সেই জায়গা থেকে সেটা প্রেসিডেন্ট নয়, বরং গভর্মেন্ট হিসেবে ড. ইউনূস জারি করবেন।”
তিনি আরো বলেন, “জুলাই সনদের ৮৪টি সংস্কারের বিষয় একত্রে গণভোটে যাবে। গণভোটে নোট অব ডিসেন্টের আলাদা কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। গণভোটের প্রশ্ন কী হবে, তা আগেই চূড়ান্ত করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে সেটা দেখাতে হবে।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম এই নেতা বলেন, “গণভোট দ্বারা জনগণ সনদ অনুমোদন করলে অর্থাৎ সনদের পক্ষে ভোট দিলে পরের সংসদকে কনস্টিটিউট পাওয়ার ডেলিগেট করা হবে। সনদ অনুযায়ী সংবিধান সংস্কার করার জন্য এই দাবির সঙ্গে মোটামুটি সবাই এখন একমত। আমাদের কাছে কিন্তু এখনো স্পষ্ট হয়নি, এটার কী সংশোধনী হবে?”
ঢাকা/রায়হান/রফিক