লিটন বললেন, টেস্ট অধিনায়কত্ব পেলে কেউই ‘না’ করবে না
Published: 26th, October 2025 GMT
তিন সংস্করণেই বাংলাদেশের হয়ে অধিনায়কত্ব করেছেন লিটন দাস। তবে পূর্ণ মেয়াদে তিনি দায়িত্ব পেয়েছেন শুধু টি-টোয়েন্টির জন্য। এই সংস্করণে তাঁর অধীনে সর্বশেষ ৪টি সিরিজে জিতেছে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপেও ফাইনালের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিল তাঁরা। সব মিলিয়ে লিটনের অধীনে টি-টোয়েন্টি দল ভালোই করছে বলা যায়।
লিটন বাংলাদেশের টেস্ট দলের নিয়মিত সদস্য। গত জুনে শ্রীলঙ্কা সিরিজের পর নাজমুল হোসেন টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর কে হবেন টেস্ট অধিনায়ক এই আলোচনায় তাই লিটনও আছেন। আগামী মাসের শুরুতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের আগেই অধিনায়ক খুঁজে নিতে হবে বিসিবিকে।
তবে এ নিয়ে এখনো তাঁর সঙ্গে বিসিবির আলাপ হয়নি বলে জানিয়েছেন লিটন। আজ চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে সংবাদ সম্মেলনে টেস্ট অধিনায়কত্ব নিয়ে লিটন বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে নিয়ে আমি কিছু জানি না। তাঁরা যদি যোগ্য মনে করে, অবশ্যই তাঁরা আমার সঙ্গে কথা বলবে। দেখা যাক, কী সিদ্ধান্ত হয়।’
২০২৩ সালে সাকিব আল হাসান চোট পেলে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একটি ম্যাচে নেতৃত্ব দেন লিটন। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ রেকর্ড ৫৪৬ রানে জয় পায়। ২০২৩ সালের শেষদিকে লিটন আলোচনায় থাকলেও তখন নেতৃত্ব দেওয়া হয় নাজমুলকে।
নতুন করে টেস্ট অধিনায়কত্বের ভার এলে তা নিতে যে আগ্রহ আছে সেটি স্পষ্ট লিটনের কথাতেও, ‘খেলোয়াড় হিসেবে আপনি যখন খেলবেন, টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব (আপনার কাছে) অনেক বড় পাওয়া। আমার মনে হয় না কেউ ‘না’ করবে। কিন্তু তাঁদের (বিসিবি) পক্ষ থেকে এখনো কিছু বলা হয়নি।’
অধিনায়কত্ব খোঁজার কাজটা বিসিবির। লিটনের জন্য আপাতত চ্যালেঞ্জটা টি-টোয়েন্টিতে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই সিরিজ মিলিয়ে ৬টি ম্যাচ হাতে আছে বাংলাদেশের।
এই দুই সিরিজে লক্ষ্যের কথা জানতে চাইলে লিটন বলেছেন, ‘সত্য কথা বলতে আমি দুইটা সিরিজে চাই আমাদের খেলোয়াড়রা যেন খুব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। সেটা ব্যাটিংয়ে হতে পারে, বোলিংয়ে হতে পারে। আমি চাই যে, এই ছয়টা ম্যাচ থেকে আমরা যতটা পিছিয়ে থাকব, ততটাই ভালো। পিছিয়ে থাকার মানে ম্যাচে না, চ্যালেঞ্জের কথা বলছি। আমি চাই যে, বোলাররা যখন বল করবে, তারা যেন চাপের মধ্যে থাকে। যে জিনিসগুলো ভবিষ্যতে আমাদের অনেকটাই সাহায্য করবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল টন ব
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে আওয়ামী লীগের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রোববার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (মানি লন্ডারিং-১) আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় সিলেটে মামলাটি করেন।
সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারির পরও হিসাব দাখিল না করার পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলা হয়েছে বলে দুদক দূত্রে জানা গেছে। মামলায় সাবেক মেয়রের বিরুদ্ধে প্রায় ১ কোটি টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। দুদক সিলেটের উপপরিচালক রাফী মো. নাজমুস্ সা’দাৎ আজ সোমবার রাত আটটার দিকে প্রথম আলোকে মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাফী মো. নাজমুস্ সা’দাৎ জানান, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে। এ জন্য তাঁকে নিজের সম্পদ ঘোষণার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে নির্ধারিত সময়ে সম্পদের তথ্য না দেওয়ায় কিংবা সময় বাড়ানোর আবেদন না করায় কমিশনের অনুমোদনের ভিত্তিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলাটি (নন-সাবমিশন) দায়ের করেছেন। বিধি অনুযায়ী তদন্ত ও পরবর্তী কার্যক্রম নেওয়া হবে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আনোয়ারুজ্জামান ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রায় আট মাস দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি নির্বাচনী হলফনামায় লন্ডনে তাঁর নিজ নামে থাকা ৪ হাজার বর্গফুটের একটি বাড়ি, ১ হাজার ৮০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট এবং একটি রেস্টুরেন্টের তথ্য উল্লেখ করেননি। এ ছাড়া ঢাকার পূর্বাচলে রাজউক বরাদ্দ করা পাঁচ কাঠা জমির তথ্যও গোপন করেছেন।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ২০২২-২০২৩, ২০২৩-২০২৪ এবং ২০২৪-২০২৫ সালে দাখিল করা আয়কর রিটার্ন অনুসারে আনোয়ারুজ্জামানের মোট ৮৪ লাখ ৪৪ হাজার ৯৮ টাকার সম্পদ রয়েছে। তবে এ সম্পদ তিনি কীভাবে অর্জন করেন, এর কোনো সঠিক তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি ৯৩ লাখ ৪৪ হাজার ৯৮ টাকার অগ্রহণযোগ্য নিট সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন করেছেন বলে দুদক প্রাথমিক অনুসন্ধানে নিশ্চিত হয়েছে। তবে এ নিট সম্পদের হিসাবে যুক্তরাজ্যে থাকা ফ্ল্যাট, বাড়ি ও রেস্তোরাঁর মূল্য আনা হয়নি।
দুদক বলছে, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী আয়কর রিটার্নে বা নির্বাচনী হলফনামায় তাঁর সম্পদের উৎস, ধরন, সময় ও মূল্য উল্লেখ করেননি। এ ছাড়া দুদক সম্পদ বিবরণী আদেশ জারির ২১ কার্যদিবসের মধ্যে দাখিল না করায় তিনি দুদক আইন অনুযাযী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
এদিকে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী লন্ডনে চলে যান। মামলার বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুদকের আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভুয়া। জীবনে কখনো একটি পয়সাও আমি অবৈধভাবে অর্জন করিনি। রাষ্ট্রীয় মদদে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার সম্পর্কে মিথ্যাচার ছড়ানো হচ্ছে।’
আনোয়ারুজ্জামান দাবি করেন, ‘হলফনামায় বিদেশের সম্পদ দেখানোর কোনো অপশন ছিল না, তাই বিদেশের সম্পদ দেখাতে পারিনি। এসব আমার বহু আগে অর্জিত সম্পদ। এ ছাড়া রাজউকের প্লটটি বৈধভাবে বরাদ্দ পেলেও সেটি আমাকে এখন পর্যন্ত রেজিস্ট্রারি করে দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। তাই সেটি সম্পদ হিসেবে দেখানোর সুযোগও ছিল না। আর আইএফআইসি ব্যাংকে আমি স্বাধীন পরিচালক ছিলাম।’
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ২০২৩ সালের ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র হন। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ১৯ আগস্ট সিলেটসহ দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়রকে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দেয় সরকার।