কিয়েভে রাশিয়ার হামলায় নিহত ৩, আহত ৩১
Published: 26th, October 2025 GMT
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাতে রাশিয়ার ড্রোন হামলায় কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ছয় শিশুসহ ৩১ জন আহত হয়েছেন।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
আরো পড়ুন:
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা
যুক্তরাজ্যের ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় ‘সফল’ হামলার দাবি ইউক্রেনের
ভয়াবহ এই হামলার ঘটনায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার মিত্রদের রাশিয়া বিরুদ্ধে নতুন করে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে বলেন, এই হামলায় দুটি বহুতল ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। দুই শিশুসহ আহতদের মধ্যে সাতজনকে শহরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মেয়র জানান, ভূপাতিত রুশ ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ ডেসনিয়ানস্কি জেলায় একটি নয় তলা ভবনের উপর পড়ায় বেশ কয়েকটি তলায় আগুন ধরে যায়।
তিনি বলেন, “প্রতিটি রাশিয়ান হামলা বেসামরিক মানুষদের যতটা সম্ভব ক্ষতি করার চেষ্টা। রাশিয়া এবং এর যুদ্ধ অর্থনীতিকে সহায়তাকারী দেশগুলোর বিরুদ্ধে অবশ্যই অতিরিক্ত শুল্ক ও নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত।”
কিয়েভের কর্মকর্তাদের মতে, রাজধানী ও এর আশেপাশের অঞ্চলে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে বিমান হামলার সাইরেন বাজানো হয়েছিল।
ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তারা টেলিগ্রামে বলেন, রাশিয়া রাতভর ইউক্রনজুড়ে ১০১টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে ৯০টি ভূপাতিত করা হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, রাশিয়া গত সাত দিনে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে প্রায় ১ হাজার ২০০টি আক্রমণাত্মক ড্রোন, ১ হাজার ৩৬০টিরও বেশি নির্দেশিত বিমান বোমা এবং ৫০টিরও বেশি বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন উভয় পক্ষই একে অপরের ভূখণ্ডে তাদের হামলায় বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার কথা অস্বীকার করে আসছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রার আক্রমণের মাধ্যমে শুরু হওয়া যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন, বেশিরভাগই ইউক্রেনীয়।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ য় ইউক র ন য দ ধ ইউক র ন ইউক র ন র
এছাড়াও পড়ুন:
রাবি নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন, অনশন অব্যাহত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে প্রশাসন।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
রাজশাহী বোর্ডে ৮২ হাজার খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন
গোবিপ্রবির সায়েন্স ফেস্টে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সাফল্য
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যেসব সংবাদ ও ফোনালাপের অডিও প্রকাশ হয়েছে, সেটা তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এম আসাদুল হককে এই কমিটির আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিকে দ্রুততম সময়ে প্রতিবেদন ও সুপারিশ প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।
এদিকে, তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও আমরণ অনশন অব্যাহত রেখেছেন দুই শিক্ষার্থী। তাদের দাবি- সুষ্ঠু তদন্ত করে তারপর সিন্ডিকেট মিটিং করতে হবে।
অনশনরত শিক্ষার্থীরা হলেন, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী সাদেক রহমান ও দর্শন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফুয়াদ রাতুল।
এর আগে, শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলের দিকে তারা অনশন শুরু করেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা রাকসুর সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অ্যলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কাছে তিন দফা দাবি পেশ করেন।
অনশনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের স্পষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বিভাগীয় চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তারা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন—তদন্ত শেষে রিপোর্ট পেশ করে নিয়োগ দিতে। কিন্তু এর পরিবর্তে প্রশাসন সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে নিয়োগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। অনশন শুরুর পর ২৪ ঘণ্টা পার হলেও প্রশাসন থেকে কোনো আশানুরূপ প্রতিক্রিয়া পাননি তারা।
এ বিষয়ে অনশনরত শিক্ষার্থী সাদেক রহমান বলেন, “২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কোনো পানি বা খাবার না খেয়ে এই তীব্র রোদে অবস্থান করছি। কেন আমরা এখানে বসে আছি? কারণ বারবার প্রশাসন ও নিজ বিভাগের কাছে গিয়েও কোনো সমাধান পাইনি। আমাদের একটাই দাবি—শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, তার তদন্ত রিপোর্ট আমরা দেখতে চাই।”
তিনি বলেন, “আমরা রাকসুতে জানিয়েছি, উপ-উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছি, উপাচার্যকেও জানিয়েছি। তিনি বলেছেন ‘আস্থা রাখুন’। কিন্তু আমরা কীভাবে আস্থা রাখব? আস্থা রাখলে আজ আমরণ অনশনে বসতাম না। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট—জুলাইয়ের পর কোনো দুর্নীতিপূর্ণ নিয়োগ হতে পারবে না; যদি হয়, তা হবে আমাদের লাশের ওপর দিয়ে।”
রাবি প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “যদি এভাবে নিয়োগ সিন্ডিকেটের প্রভাব চলতে থাকে, তাহলে আপনাদের শিক্ষার্থীদেরই লাশ পড়ে থাকবে এখানে। আমরা শুধু চাই, স্বচ্ছ তদন্ত হোক এবং দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা হোক। কালকের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত করা সম্ভব হলে সিন্ডিকেট মিটিং হবে, না হলে তা বাতিল করতে হবে।”
অনশরনত আরেক শিক্ষার্থী ফুয়াদ রাতুল বলেন, “প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে আমরা অনশনে বসে আছি। প্রশাসন এখনো আমাদের আশানুরূপ কিছু জানায়নি। উপাচার্য স্যার একবার এসেছিলেন, তিনি তাদের উপর আস্থা রাখতে বলে গেলেন। কিন্তু কোনো প্রক্রিয়ার কথা জানাননি এবং বিতর্কগুলো সামনে নিয়ে যে নিয়োগগুলো হচ্ছে এবং সিন্ডিকেট মিটিং এ চূড়ান্ত হতে চলেছে- এ বিষয়ে নাকি আমাদের কথা বলার এখতিয়ার নেই।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক লেনদেন এর মাধ্যমে, দলীয়করণ এর মাধ্যমে যে নিয়োগগুলো হচ্ছে এর ভুক্তভোগী শুধু নাট্যকলা বিভাগ না, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের। আগে মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হত, এখন লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের যে অভিযোগগুলো আছে, সেগুলো তদন্ত করা হোক এবং জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনা হোক। যতক্ষণ পর্যন্ত না এর কোনো সমাধান না হবে, আমরা আমরণ অনশন চালিয়ে যাব।”
এ বিষয়ে উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব বলেন, “আমরা তাদের বিষয়টি বিবেচনা করছি। ইতোমধ্যে আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। আর সিন্ডিকেটের বিষয় সিন্ডিকেট দেখবে।”
আগামীকাল সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাবিতে সিন্ডিকেট মিটিং অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী