চলন্ত বাসে ছিনতাইয়ের চেষ্টা, বাস চালিয়ে ছিনতাইকারীকে নিয়ে থানায় চালক
Published: 27th, October 2025 GMT
চলন্ত বাসে মুঠোফোন ছিনতাই করতে গিয়ে ধরা পড়েন যাত্রী বেশে ওঠা এক ছিনতাইকারী। এরপর নেমে যেতে চেষ্টা করেন তিনি, ছুরিকাঘাত করেন চালকের সহকারীকে। তবে তাঁকেসহ চালক বাস চালিয়ে নিয়ে যান নিকটবর্তী থানায়। সেখানে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
চট্টগ্রাম নগরের কাস্টমস মোড় এলাকায় গতকাল রোববার দিবাগদ রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। গ্রেপ্তার ছিনতাইকারীর নাম আকবর হোসেন (২৪)। এ ঘটনায় আকবরের তিন সহযোগী বাসের জানালা দিয়ে পালিয়ে যান।
ঘটনার শিকার বাসযাত্রী আরিফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সিটি সার্ভিসের একটি বাসে বাসায় ফিরছিলেন তিনি। এরপর নিজ আসনে বসে কানে হেডফোন দিয়ে মুঠোফোনে ইউটিউব দেখছিলেন। একপর্যায়ে তাঁর পাশে যাত্রী বেশে দাঁড়িয়ে থাকা একজন তাঁর মুঠোফোনটি নিয়ে নেন। এরপর বাসের দরজা বন্ধ করে সব যাত্রীর মুঠোফোন যাচাই করতে বলা হলে অভিযুক্ত আকবর মুঠোফোনটি এক যাত্রীর কাছে ফেলে নেমে যেতে চান। বাধা দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে আকবর ছুরি বের করে চালকের সহকারীকে ছুরিকাঘাত করেন। এ সময় চলন্ত অবস্থায় তাঁর তিন সহযোগী জানালা দিয়ে পালিয়ে যান। এরপরও বাস থামাননি চালক। তিনি বাস চালিয়ে বন্দর থানায় নিয়ে যান।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। পলাতক বাকি তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘করুণ অভিমানের’ মালা গাঁথেন যূথীরা, জানেন না ফুলের নাম
ফুলের নামই জানেন না যূথী খাতুন (২৫)। সেই ফুলেরই মালা গেঁথে চলেছেন। পাঁচ–ছয় হাত লম্বা একটি মালা গেঁথে পারিশ্রমিক পান এক টাকা। প্রায় প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে যান মহাজনের বাগানে, নিজের হাতে সংগ্রহ করেন ফুল। এরপর বাড়িতে বসে গাঁথেন মালা।
গ্রামের অন্য নারীরাও মালা গেঁথে যূথীর কাছে দিয়ে যান। বিকেলে তাঁর বাড়ি থেকে এসব মালা সংগ্রহ করেন মহাজন। এরপর ঢাকার শাহবাগ কিংবা কোনো ফুলের দোকানে মুগ্ধতা ছড়ায় তাঁদের গাঁথা মালাগুলো। এরপর হয়তো শোভা পায় কোনো নারী বা তরুণীর খোঁপায়। মালার ফুলের নাম গাজরা বা কাঠবেলি। তবে যূথীরা এ নাম জানেন না। ফুলের নাম নিয়ে তাঁদের কোনো মাথাব্যথা নেই।
উদ্ভিদবিষয়ক গবেষক মোকারম হোসেনের ভাষ্য অনুযায়ী, গাজরা ফুলের বাণিজ্যিক নাম কাঠবেলি। তবে এটি আসলে টগর। এই ফুলের সাদা কলি দিয়েই মালা গাঁথা হয়। কাজী নজরুল ইসলাম গানে গানে বলে গেছেন, ‘ফুল চাই-চাই ফুল-টগর চম্পা চামেলি/ ফিরি ফুলওয়ালী নিয়ে ফুল ডালি/ মল্লিকা মালতী জুঁই বেলি।’ গাজরা, টগর, কাঠ বেলি যে নামেই ডাকি না কেন, মালার কারিগরদের কাছে এর নাম শুধুই ফুল।
যূথী খাতুনের বাড়ি নাটোরের লালপুর উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের মনিহারপুর গ্রামে। গ্রামটির শতাধিক নারী নিজেদের কাজের ফাঁকে ফুলের মালা গেঁথে সংসারে বাড়তি আয়ের জোগান দিচ্ছেন। এ ছাড়া গণ্ডবিল রামকৃষ্ণপুর গ্রামের কয়েকজন নারী এই কাজের সঙ্গে জড়িত। ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে লালপুর উপজেলায় কাঠবেলি ফুলের চাষ হচ্ছে। বিশেষ করে উপজেলার নবীনগর গ্রামের ৮-১০ জন চাষি এই উদ্যোগ নিয়েছেন। তাঁরাই আবার মহাজন। এসব বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করেন নারী কারিগরেরা।
মালা গাঁথার জন্য বাগান থেকে ফুল তুলছেন কারিগরেরা