নরসিংদী সদর উপজেলার নজরপুর ইউনিয়নের বালুয়াঘাট বাজারের পুরনো সেতুটি এখন এলাকাবাসীর গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। ১৯৯৪ সালে নির্মাণের পর থেকে সংস্কার না হওয়ায় সেতুটির রেলিং ভেঙে গেছে, রড বেরিয়ে পড়েছে, লোহার অংশে মরিচা ধরেছে। প্রতিবার যানবাহন উঠলে কেঁপে ওঠে গোটা কাঠামো। খালের পানির স্রোতে মাটি সরে গিয়ে সেতুর পিলারগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে। 

এলাকাবাসী জানান, নজরপুর, করিমপুর, আলোকবালি ও চরদিঘলদী ইউনিয়নের মানুষ এই সেতুর ওপর নির্ভরশীল। বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় ৩১ বছর আগে নির্মিত এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করছে রিকশা ও অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। বর্তমানে তাদের কাছে এই সেতু ভয় ও আতঙ্কের নাম।

আরো পড়ুন:

যমুনা রেলসেতুর পিলারে হেয়ারক্র্যাকের ছবি ভাইরাল, যা বলল কর্তৃপক্ষ 

৬ বছরেও মেরামত হয়নি ব্রিজ, ৩০ গ্রামের মানুষের ভোগান্তি

স্থানীয় বাসিন্দা মো.

জব্বার মিয়া বলেন, “সেতু দিয়ে পার হওয়ার সময় বুধ ধড়ফড় করে। মনে হয়, কখন জানি নিচে পড়ে যাই। প্রতিদিন সকাল-বিকেল এই ভয় নিয়েই কাজে যেতে হয়।” 

অটোরিকশা চালক সোহেল মোল্লা বলেন, “একটা রিকশা উঠলেই সেতু কাঁপতে শুরু করে। যাত্রীরা ভয় পান, কেউ কেউ মাঝপথে নেমে যান। উপায় কী? এই রাস্তা ছাড়া তো কিছুই নেই।” 

দোকানি রোকন উদ্দিন বলেন, “প্রতিদিন এই সেতুর ওপর দিয়ে অন্তত দুই থেকে তিন হাজার মানুষ চলাচল করেন। স্কুলের শিশুরা ভয়ে কান্না করে, চালকরা খুবই ধীর গতিতে গাড়ি চালান। সেতুটির রেলিংও ভেঙে গেছে।” 

ঝঁকিপূর্ণ সেতুর ওপর দিয়ে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে অটোরিকশা

তিনি বলেন, “প্রশাসনের লোকজন আসেন, ছবি তোলেন, কথা বলেন এরপর চলে যান। গত পাঁচ বছর ধরে কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হেলেও তারা কিছুই করেননি। এই সেতু ভেঙে গেলে আমরা একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাব। রাতের বেলায় সেতু পার হওয়া যেন এক দুঃসাহসিক অভিযান।” 

নজরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুর রহিম বলেন, “আমরা তো সরকারকে ট্যাক্স দেই, ভোট দেই। একটা সেতু ঠিক করার মতো কেউ নেই? দুর্ঘটনা ঘটলে তখন সবাই দৌঁড়াবে, কিন্তু আগে কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না? সেতুর বিষয়ে বারবার স্থানীয় প্রশাসন ও প্রকৌশল দপ্তরে আবেদন জানানো হয়েছে। এখনো মেরামতের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।” 

নরসিংদী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজা-ই-রাব্বী বলেন, “আমরা সেতুর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা সম্পর্কে অবগত। ইতোমধ্যে সেতুটি নতুনভাবে নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। অনুমোদন পেলেই দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। এই সেতু চারটি ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থার মূলধারা। আমাদের অগ্রাধিকার তালিকায় এই প্রকল্পটি রাখা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরু করা হবে।” 

ঢাকা/হৃদয়/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ স ত র ওপর এই স ত

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় নিজের পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণ করলেন জামায়াতের প্রার্থী

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী সব প্রার্থীকে নিজ দায়িত্বে প্রচারিত পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণের বিধান রয়েছে। এ বিধান বাস্তবায়নে কুমিল্লা–৬ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কাজী দ্বীন মোহাম্মদ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে নিজ এলাকায় পোস্টার অপসারণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিজ নামে ছাপানো পোস্টারগুলো সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেন কাজী দ্বীন মোহাম্মদ। তিনি তার কর্মী–সমর্থকদের আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন নির্বাচনি আচরণবিধি ও নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত সময়সীমা অনুযায়ী নিজ ব্যয় ও দায়িত্বে অপসারণ করার জন্য দিকনির্দেশনা দেন।

আরো পড়ুন:

তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে ঢাবি ছাত্রদলের আনন্দ মিছিল

সিলেট বিভাগে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হলেন যারা

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা জামায়াতের আমির মো. মিজানুর রহমানসহ ইসলামী ছাত্র শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মীরা।

কাজী দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, “নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন আইনের (আরপিও) নির্দেশনা মেনে চলাই আমাদের গণতান্ত্রিক দায়িত্ব। আমরা সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতার সাথে নির্বাচনি কার্যক্রম পরিচালনা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। নির্বাচনি প্রচারের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন অপসারণ করা আইনগত বাধ্যবাধকতা, তাই আমরা তা যথাসময়ে বাস্তবায়ন করছি।”

স্থানীয় জনগণ ও ব্যবসায়ী সমাজ এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, “এর ফলে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনি পরিবেশ গড়ে উঠবে।”

ঢাকা/রুবেল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ