স্কুল-কলেজের প্রশাসনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ শিক্ষাব্যবস্থায় বিপর্যয় এনেছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার। তিনি বলেন, এটি ঠিক করা এখন আমাদের সবচেয়ে জরুরি কাজগুলোর একটি। শুধু নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কোচিং বা গাইড বই বন্ধ হবে না। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা কেন এগুলোর ওপর নির্ভরশীল, সেটাই মূল প্রশ্ন।

গতকাল বুধবার রাজধানীতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার এ কথা বলেন। তিনি বলেন, শিক্ষার মান নিয়ে যে উদ্বেগ দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান, তা কাটাতে বাস্তবসম্মত ও নির্মোহ মূল্যায়ন ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই।

আরও পড়ুনহার্ভার্ড–অক্সফোর্ডসহ বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফ্রি অনলাইন কোর্স, যেভাবে আবেদন১ ঘণ্টা আগে

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, অভিভাবক, শিক্ষক সবাই মানের অবনতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। বহু উদ্যোগ নেওয়া হলেও তৃণমূল পর্যায়ের বাস্তব চ্যালেঞ্জগুলো আরও গভীরভাবে বুঝতে হবে। তিনি জানান, শিক্ষার মান উন্নয়নে যেসব তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়েছে, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং ভবিষ্যৎ নীতিমালার ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

অধ্যাপক আবরার জানান, বাংলাদেশের সেকেন্ডারি ও প্রাথমিক শিক্ষার মান আন্তর্জাতিক র‍্যাঙ্কিংয়ে কোথায় অবস্থান করছে, তা জানতে সরকার ইতিমধ্যে একটি আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন কাঠামোর সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা হয়তো নিচের দিকেই থাকব; তাতে সমস্যা নেই। অন্ততপক্ষে জানব আমরা কোথায় আছি, কী ঠিক করতে হবে।’

পূর্ববর্তী সময়ে ফলাফল প্রকাশের ভুল সিদ্ধান্তগুলোর সমালোচনা করে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘পরীক্ষা না নিয়ে নম্বর দেওয়া ছিল অগ্রহণযোগ্য। এটি শিক্ষাব্যবস্থাকে পেছনে ফেলে দিয়েছিল। আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছি।’

আরও পড়ুনকর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন কোর্স, জেনে নিন সব তথ্য২৬ নভেম্বর ২০২৫

উপদেষ্টা আরও জানান, মূল্যায়নে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের পাঠসক্ষমতা, গণিতে সক্ষমতা উভয় ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য দুর্বলতা রয়েছে। এগুলোকে আরও বড় পরিসরে মূল্যায়ন করার প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কোচিং, প্রাইভেট টিউশন ও গাইড বই প্রসঙ্গে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, শুধু নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কোচিং বা গাইড বই বন্ধ হবে না। কেন এগুলোর চাহিদা তৈরি হচ্ছে, তা আগে বুঝতে হবে। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা কেন এগুলোর ওপর নির্ভরশীল, সেটাই মূল প্রশ্ন।

প্রশাসনিক রাজনৈতিক প্রভাব দূর করার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, স্কুল-কলেজের প্রশাসনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ শিক্ষাব্যবস্থায় বিপর্যয় এনেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি ঠিক করা এখন আমাদের সবচেয়ে জরুরি কাজগুলোর একটি।’

আরও পড়ুনবিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রি অনলাইন কোর্স: ২০টির বেশি ভাষা শেখার সুযোগ২৪ নভেম্বর ২০২৫

শিক্ষা উপদেষ্টা জানান, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার দুটি মূল্যায়নপ্রক্রিয়ার সমন্বয় ভবিষ্যতে আরও কার্যকর হবে। কসরুজ্জামান আহমেদের নেতৃত্বে মাধ্যমিক শিক্ষার একটি বিস্তৃত মূল্যায়নের উদ্যোগ চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। গবেষকদের সঙ্গে পরবর্তী বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গবেষক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মন্ত্রণালয়ে এসে আমাদের আরও বিস্তারিত অবহিত করবেন। আমরা বিষয়টি অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে পর্যালোচনা করব।’

অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষা উপদেষ্টা আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানান।

আরও পড়ুনযে ১০ দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সবচেয়ে কঠিন২৫ নভেম্বর ২০২৫আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা, দুটি ইউনিটের প্রবেশপত্র প্রকাশ২৬ নভেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ক ষ ব যবস থ র জন ত ক উপদ ষ ট উল ল খ

এছাড়াও পড়ুন:

কাউখালীতে আঞ্চলিক দুই দলের গোলাগুলিতে নিহত ১,আহত ৪

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রাঙামাটির কাউখালী উপজেলায় আঞ্চলিক দুই দলের গোলাগুলিতে একজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন। বুধবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কাউখালী ও রাঙ্গুনীয়া উপজেলার দুর্গম রইশ্যাবিলি নামক এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। নিহত ও আহতদের নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ। 

গোলাগুলির ঘটনায় নিহত ও আহত হওয়ার সংবাদ পাওয়ার কথা গতকাল রাতে জানিয়েছেন কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুর রহমান সোহাগ।  

আরো পড়ুন:

মানিকগঞ্জে বাউলদের ওপর হামলায় মামলা, আসামি ২০০

ঝিনাইদহে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৫

তিনি স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) মধ্যে গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। নিহত ও আহতদের নাম জানাতে পারেননি বলে জানান তিনি।

স্থানীয় সূত্রগুলো থেকে জানা যায়, এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরে ইউপিডিএফের নিয়ন্ত্রণ করছিল। কিছুদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সন্তু লারমার দল সেটি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এলাকার আধিপত্যকে কেন্দ্র করে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি।

সহকারী পুলিশ সুপার (কাউখালী সার্কেল) মো. জাহেদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “উপজেলার দুর্গম মিতিঙ্গাছড়ি ইউপিডিএফ অধ্যুষিত এলাকা। আধিপত্য বিস্তারের জন্য জেএসএসের সশস্ত্র গ্রুপ সেখানে গেলে ইউপিডিএফের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে জেএসএসের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম পরিচয় জানা যায়নি। এলাকাটা দুর্গম হওয়ায় পুলিশ পৌঁছাতে সময় লাগছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ফিরে আসার পর বিস্তারিত জানা যাবে।”

ঢাকা/শংকর/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ