এক দিনে পড়া যায় এমন পাঁচটি বাংলা উপন্যাস
Published: 27th, November 2025 GMT
বাংলা মননশীল কথাসাহিত্যের এক নতুন আঙ্গিক সৌষ্ঠবের যুগ একুশ শতক। এই সময়ে পাঠক ও লেখক উভয়ই বৃহদায়তনের আখ্যানের চেয়ে অল্প পরিসরের গভীর মনোবিশ্লেষণী বইয়ের প্রতি বেশি আগ্রহী। ২০০০ সালের পর থেকে প্রকাশিত বহু বিশিষ্ট উপন্যাসই নিছক কাহিনি বা চরিত্রের বহুমাত্রিক বিস্তার নয়, বরং পাঠকের ব্যক্তিগত মনোজগৎ ও অস্তিত্বসংকটের গভীরবোধ প্রকাশে সচেষ্ট হয়েছে। দ্রুতগতির জীবন ও তথ্যের আধিক্যের কারণে দীর্ঘ উপন্যাসের ভার বহনে নিরুৎসাহী পাঠক দ্রুত একটি গভীর দার্শনিক বা মনস্তাত্ত্বিক অভিজ্ঞতা চায়। ফলে এই সময়ের সাহিত্য চিরায়ত আখ্যান কাঠামো ভেঙে নিরীক্ষার আশ্রয়ে বর্তমানের বিচ্ছিন্নতা, স্বপ্নভঙ্গ এবং নৈতিক জটিলতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে।
১.আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু
শহীদুল জহিরের (১৯৫৩-২০০৮) মরণোত্তর প্রকাশিত (২০০৯) সর্বশেষ উপন্যাস ‘আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু’। এটি তৎকালীন স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলের পটভূমিতে রচিত একটি নাতিদীর্ঘ কিন্তু গভীর ব্যঞ্জনাসমৃদ্ধ আখ্যান, যা মাত্র ৬৪ পৃষ্ঠার পরিসরে মধ্যবিত্ত জীবনের নৈতিক সংকট ও মনস্তাত্ত্বিক জটিলতাকে উন্মোচন করেছে। উপন্যাসের কাহিনি শুরু এবং শেষ হয় সরকারি কর্মকর্তা আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু দিয়ে, যিনি পেশাগত জীবনে সত্য-মিথ্যা আর ভালো-মন্দের দ্বন্দ্বে জর্জরিত এক অসুখী মানুষ। তার মৃত্যুর পর বিধবা স্ত্রী মমতার স্মৃতিচারণার মধ্য দিয়ে ইব্রাহীমের জীবনের নিরুপায় মিথস্ক্রিয়াগুলো যেমন স্ত্রী, কন্যা, সহকর্মী, ঘুষদাতা ব্যবসায়ী খালেদ জামিল এবং পুরোনো প্রেমিকা হেলেনের সঙ্গে তার সম্পর্কের মতো বিষয়গুলো উপজীব্য হয়ে ওঠে। উপন্যাসের মূল সংকটটি তৈরি হয় আবু ইব্রাহীমের সততার বিপরীতে খালেদ জামিলের কাছ থেকে আসা টেন্ডার-কমিশনের প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে, যা একজন সাধারণ মানুষের আত্মসংঘাতময় নৈতিক টানাপোড়েনকে সূক্ষ্মভাবে তুলে ধরে। ঢাকার বেইলি রোডের সরকারি কলোনি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয় ও সিরাজগঞ্জের মতো পরিচিত পটভূমিতে রচিত এই উপন্যাসে লেখকের স্বতন্ত্র ভাষাবোধ এবং কথ্য ভাষার আঞ্চলিক প্রয়োগ (যেমন ‘একটা কথা কই তোমাক’) এক বিশেষ ‘ঘোর’ তৈরি করে, যা আখ্যানের চরিত্রগুলোকে বিশ্বাসযোগ্যতা দেয়। উপন্যাসটির এই প্রকরণগত স্বকীয়তার কারণে এটি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিরীক্ষামূলক কাজ হিসেবে বিবেচিত এবং কেউ কেউ এর কাঠামোগত মিল গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের ‘ক্রোনিকা দে উনা মুয়ের্তে আনুন্সিয়াদা’-এর সঙ্গে খুঁজে পান।
উপন্যাসের উৎসর্গপত্রে চীনা সাহিত্যিক সিমা ছিয়েন-এর উদ্ধৃতিতে মানুষের মৃত্যুর ভিন্ন তাৎপর্যের কথা বলা হয়েছে—‘মানুষের মৃত্যু অনিবার্য, কিন্তু তার তাৎপর্য হবে থাই পাহাড়ের চেয়েও ভারী বা বেলে হাঁসের পালকের চেয়েও হালকা’, যা ইব্রাহীমের মৃত্যুর গভীরতাকেই নির্দেশ করে। জীবন ও নৈতিকতার প্রশ্নকে শিল্পরূপে তুলে ধরে মমতার দ্বিতীয় বিয়েতে কাহিনির পরিসমাপ্তি ঘটে, যা প্রমাণ করে মনস্তত্ত্ব প্রকাশের জন্য শৈলীর স্বাতন্ত্র্য এবং লেখকের নিপুণ পর্যবেক্ষণই যথেষ্ট।
২. আমাদের খনজনপুরমঈনুল আহসান সাবেরের (জন্ম–১৯৫৮) ছোট কলেবরের উপন্যাস ‘আমাদের খনজনপুর’ (২০০৪), যার পৃষ্ঠা সংখ্যা মাত্র ৮৭। মফস্সল–জীবনের স্নিগ্ধ আবেগকে ধারণ করে চিরায়ত ‘না-বলা প্রেম’কে মহিমান্বিত করতে চাওয়া এক বিষণ্ন ও কাব্যিক রোমান্টিক আখ্যান এই উপন্যাসটি। উপন্যাসের কাহিনি সরলরৈখিকভাবে অগ্রসর না হয়ে বরং কাব্যিকতার এক মন্থর ঘোরে মফস্সলি জীবনের সুখ, দুঃখ, অনুভূতিতে গ্রাস করে। কাহিনির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে নোমান এবং রেবেকা, যারা শৈশবের সুন্দর ও মায়াময় ছোট শহর ‘খনজনপুর’ এবং তার রোদ-ছায়ামাখা পাড়া ‘রোদভাঙা’র স্মৃতিতে বাঁধা। নোমানের সাহস না হওয়ায় সে রেবেকাকে কখনো মুখ ফুটে ভালোবাসার কথা বলতে পারেনি। যদিও রেবেকা বর্তমানে একটি ‘সফল’ বৈবাহিক জীবন যাপন করছে, তাদের স্মৃতিবিজড়িত খনজনপুর অবশ্য দুজনের কাছেই মধুর, যার অলিগলি, চেনা পরিচিত মুখগুলো যেন তারা আজও হাতড়ে বেড়ান। খনজনপুর যেন কিছু চরিত্র, কিছু অতীত স্মৃতি কিংবা সম্পর্কের টানাপোড়েনের সাক্ষী হয়ে আছে।
প্রধান চরিত্র নোমান ও রেবেকা ছাড়াও এই আখ্যানে পুশকিন ভাই, নায়লা, নাঈমা, শামীম, অন্তু, সবুজ, ফরিদসহ বেশ কিছু চরিত্র পাওয়া যায়, যারা প্রত্যেকেই খনজনপুরের সঙ্গে জড়িত। কেন্দ্রীয় চরিত্রদের মনোজগতে এক গভীর দ্বন্দ্ব কাজ করে—নোমান একজন ‘অতি সাধারণ’ রূপে উপস্থাপিত নায়ক, যে প্রথাগত উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতি বিতৃষ্ণ, আর রেবেকা তার বৈবাহিক জীবনে থেকেও সেই ‘সাধারণ’ প্রেমিকের কথাই স্মরণ করে। লেখকের ‘একটা দুইটা লাইন দিয়া স্কেচ আঁকার মতন’ মসৃণ ও সংক্ষিপ্ত শৈলী এবং প্রমিত গদ্যের বিপরীতে কাব্যিক ও কথ্যভঙ্গির মিশ্রণ এটিকে একটি স্বতন্ত্র শিল্পরূপ দেয়। এই গ্রন্থ এক নিভৃতচারী লেখকের প্রথাবিরোধী মনোভাব এবং মফস্সলি প্রেমের চিরন্তন কাব্যিকতাকে আধুনিক সাহিত্যের প্রেক্ষাপটে প্রতিষ্ঠিত করে, যা পাঠককে মনে করিয়ে দেয় যে সত্যিকারের আবেগ মফস্সলের নিভৃত কোণেই সবচেয়ে খাঁটি রূপে বিরাজ করে।
৩. বিসর্গতে দুঃখবাংলাদেশি কথাসাহিত্যিক ও চিকিৎসা নৃবিজ্ঞানী শাহাদুজ্জামানের (জন্ম–১৯৬০) ব্যতিক্রমী ও নিরীক্ষাধর্মী উপন্যাস বিসর্গতে দুঃখ (২০০৩)। প্রথাগতভাবে এটি উপন্যাস, প্রবন্ধ বা ছোটগল্পের কোনো নির্দিষ্ট সংজ্ঞায় আবদ্ধ নয়; বরং এটি হলো ঢাকা শহরের এক অন্যমনস্ক, বেকার যুবক শফিকের ব্যক্তিগত বর্ণমালা বা ‘বিষণ্ন বিশ্বকোষ’। মাত্র ৯১ পৃষ্ঠার কলেবরের এ শিল্পকর্মটিতে বাংলা সাহিত্যের প্রচলিত আখ্যানের কাঠামো ভেঙে নতুন এক মনোজাগতিক দিগন্ত উন্মোচন করা হয়েছে। এতে কাহিনি বিন্যস্ত হয়েছে বাংলা বর্ণমালার প্রতিটি বর্ণের বিপরীতে শফিকের জীবনের অনিবার্য একেকটি শব্দকে কেন্দ্র করে—যেমন ‘অ-তে অন্যমনস্কতা;, ‘ক-তে কম্যুনিজম’, ‘এ-তে একাকিত্ব’ এবং শেষাংশে ‘ঃ-তে দুঃখ’।
শফিকের এই বর্ণকেন্দ্রিক টুকরো টুকরো বর্ণনা বা ‘মন্তাজ’গুলো কোলাজের মতো জুড়ে গিয়ে তার পারিবারিক ঐতিহ্য এবং জাতীয় উত্তরাধিকারের সঙ্গে তার তারুণ্যের অস্থিরতা এবং স্বপ্নভঙ্গের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে। শফিক এমন এক ব্যর্থ প্রজন্মের প্রতীক, যাদের যৌবন শুরু হয়েছিল সমাজতান্ত্রিক পৃথিবীর স্বপ্ন নিয়ে, কিন্তু বিশ্বাস চূর্ণ হওয়ার বেদনা যাদের জীবনকে ঘিরে ধরে। বন্ধু আতিকের করপোরেট দাসত্ব অথবা কম্যুনিস্ট গুরু মাহবুব ভাইয়ের প্রস্থান শফিকের জীবনে হতাশার গভীরতা বাড়ায়। তার ভালোবাসা (রুবিনা) ও সাম্যের স্বপ্ন—দুটোই তার কাছ থেকে সমান দূরত্বে অবস্থান করে তাকে সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের বিষণ্ন তৃতীয় বিন্দুর বেদনায় জীবন যাপন করতে বাধ্য করে। ভাষা ও শৈলীর দিক থেকে বইটি আখ্যানের চেয়ে মনোজগৎ ও অনুভূতির জগৎকে প্রাধান্য দেয়, যেখানে লেখকের গভীর মননশীলতা ও চিকিৎসা নৃবিজ্ঞানে অধিকারের ছাপ স্পষ্ট হয়ে ওঠে কলেরা বা ওষুধের মতো বিষয়গুলোর বর্ণনায়। এর দার্শনিক গভীরতা এবং প্রতীকী ভাষা পাঠককে এক অভূতপূর্ব পাঠের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করে।
আরও পড়ুন বিংশ শতকে প্রকাশিত এক দিনে পড়া যায় এমন পাঁচটি উপন্যাস
৪. স্বরচিত আত্মার পরিত্রাণ৭১ পৃষ্ঠার কলেবরে রচিত মামুন হুসাইনের (জন্ম-১৯৬২) এই উপন্যাসটি (২০২৫) আধুনিক মানুষের বিচ্ছিন্নতা এবং ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডিকে কেন্দ্রে রেখে রচিত। এটি মূলত এক নিঃসঙ্গ শিল্পীর আত্মহননের মনস্তাত্ত্বিক প্রস্তুতি ও তার পেছনের কারণ নিয়ে আবর্তিত। প্রধান চরিত্র, একজন শিল্পী, তার মনোজগতে রবীন্দ্রনাথের মতো উচ্চাঙ্গের মানবিক আদর্শ ধারণ করেও বৈপরীত্যে ভরা আধুনিক জীবনানন্দের ধূসর পৃথিবীতে খেই খুঁজে পায় না, যার ফলস্বরূপ সে স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নিতে চায়। এই আত্মহননের প্রস্তুতি লেখকের গভীর মনস্তত্ত্ব-প্রধান গদ্যের মাধ্যমে অত্যন্ত সংবেদনশীলতার সঙ্গে বর্ণিত হয়েছে। কাহিনিটি সরলরৈখিক ঘটনার বর্ণনা নয়, বরং প্রধানত এই চরিত্রের স্বগতোক্তি (মনোলগ) এবং গভীর বিশ্লেষণধর্মী ভাবনার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়। এখানে তার ব্যক্তিগত হতাশা ধীরে ধীরে বৃহত্তর মানব-অভিজ্ঞতার সঙ্গে একাকার হয়ে যায়—যেমন তার নিঃসঙ্গতা এবং নিজের ভেতরের শূন্যতাবোধ, সমসাময়িক মুক্তিযুদ্ধ বা গাজা যুদ্ধের মতো বৈশ্বিক হত্যালীলা এবং নৃশংসতার বৃহত্তর মানব-অভিজ্ঞতার সঙ্গে একই মনস্তাত্ত্বিক কাঠামোয় স্থান পায়।
মামুন হুসাইনের গদ্যে বিশ্লেষণাত্মক ও মনস্তত্ত্ব-প্রধান এক বিশেষ ভঙ্গি দেখা যায়; তিনি সরল কাহিনি বলার চেয়ে ঘটনার গভীরে প্রবেশ করে সামগ্রিক সত্য উদ্ঘাটনে আগ্রহী, যার ফলে তাঁর ভাষা হয় অত্যন্ত চিন্তাশীল ও সংবেদনশীল। এই রচনাটি চিরায়ত উপন্যাসকাঠামোর বাইরে গিয়ে নতুন গদ্য ও আখ্যানশৈলীর পরীক্ষা–নিরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হয়, যা প্রমাণ করে যে ছোট পরিসরেও আধুনিক মানুষের বিচ্ছিন্নতা, ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি এবং সমসাময়িক রাজনৈতিক সংঘাতকে একই মনস্তাত্ত্বিক ফ্রেমে আনা সম্ভব। লেখক দেখিয়েছেন কীভাবে একজন সংবেদনশীল শিল্পী তার ব্যক্তিগত যন্ত্রণা এবং পৃথিবীর নৃশংসতার মধ্যে কোনো পার্থক্য খুঁজে পায় না, যার চূড়ান্ত পরিণতি স্বেচ্ছামৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়।
৫. সিসেম দুয়ার খোলোনাসরীন জাহানের (জন্ম-১৯৬৪) সিসেম দুয়ার খোলো (২০১৩), উপন্যাসটি মাত্র ৮০ পৃষ্ঠার ক্ষুদ্র পরিসরের রচনা হলেও এর চরিত্রগুলোর জটিল মনস্তাত্ত্বিক বিন্যাস গভীর। এটি শৈশবে দেখা এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ফলস্বরূপ সৃষ্ট ‘ঘোর’-এ ভোগা ‘মুনতাসির’ নামক এক যুবককে কেন্দ্র করে আবর্তিত। উপন্যাসের মূল কাহিনিতে, মুনতাসির বাস্তবতা ও স্বপ্নের মধ্যকার সীমারেখা হারিয়ে ফেলে—বাস্তবের ঘটনাকে ভ্রম এবং ভ্রমকে বাস্তব মনে করে। এই মনস্তাত্ত্বিক ঘোরের শিকার হয়ে সে এক সময় তার স্ত্রীকে খুন করে এবং ঘর ছেড়ে অজানার পথে বেরিয়ে পড়ে। মুনতাসিরের অস্থিরতা আধুনিক মানুষের শিকড়চ্যুতি এবং আত্মবিচ্ছিন্নতার প্রতীকী রূপক হিসেবে কাজ করেছে উপন্যাসে। ট্রেনে চেপে এক পোড়ো বাড়িতে তার দেখা হয় শশীকলার সঙ্গে। এই বাড়িটি প্রতীকী অর্থে মুনতাসিরের বিচ্ছিন্ন মানসিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি। এখানে রঘু কাকার মাধ্যমে মুনতাসিরের রাজনীতিক-মন্ত্রী বাবার লুকানো রূপ প্রকাশ পায়। পরে শশীকলা কবি চন্দ্রাবতীর গ্রামে গিয়ে নিজের জন্ম-ইতিহাসের গভীর সত্যের মুখোমুখি হয়।
উপন্যাসটির ভাষা কাব্যিক ধরনের গদ্য ব্যবহার করে এক ঘোরগ্রস্ত আবহ তৈরি করে। এটি কেবল প্রেমের আখ্যান নয়, বরং মানসিক টানাপোড়েন এবং অস্তিত্বের সংকটের দলিল। মুনতাসিরের চরিত্রটি শৈশবের ট্রমা থেকে সৃষ্ট এক জটিল মনস্তত্ত্বের প্রতীক, আর শশীকলা হলো সেই শক্তি, যে তাকে জীবনের কঠোর সত্যের সামনে দাঁড় করায়। লেখক এখানে মানুষের শিকড়, জন্ম-ইতিহাস ও পারিবারিক রাজনীতির গভীর প্রভাব অনুসন্ধান করেছেন। তাঁর দর্শন হলো, মানুষকে তার অতীত ও শিকড়ের সত্য জানতে হয়, কারণ সেই সত্যই বর্তমানকে প্রভাবিত করে। উপন্যাসের রুদ্ধশ্বাস সমাপ্তি—‘পালাবে, নাকি আরেকটি খুন করবে?’—পাঠককে কেবল মুনতাসিরের দ্বিধার সামনেই দাঁড় করায় না, বরং মানব-অস্তিত্বের এক চূড়ান্ত সত্য উন্মোচনের মুখোমুখি করে তোলে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মনস ত ত ত ব ক ব চ ছ ন নত ম নত স র র উপন য স র ব পর ত জ বন র প রক শ প রস ত র প রস র জ বন চর ত র
এছাড়াও পড়ুন:
মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা : মানবিক গুণাবলির প্রশ্ন-১
দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ এমবিবিএস ভর্তিতে আবেদন শেষ হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১২ ডিসেম্বর।
লিখিত পরীক্ষার বিষয় থাকবে: জীববিজ্ঞান-৩০, রসায়ন-২৫, পদার্থবিজ্ঞান-১৫, ইংরেজি-১৫ এবং সাধারণ জ্ঞান, প্রবণতা ও মানবিক গুণাবলি মূল্যায়ন-১৫ নম্বরের।
১. একজন চিকিৎসক তার রোগীর সঙ্গে সহানুভূতিশীল আচরণ করছেন। রোগীর কথা চিকিৎসক মনোযোগ দিয়ে শুনছেন। প্রয়োজনে মানসিক সাপোর্টও দিচ্ছেন। এটি একজন চিকিৎসকের কোন মানবিক গুণাবলির উদাহরণ?
ক. সততা
খ. সহানুভূতি
গ. ন্যায়বিচার
ঘ. আত্মনিয়ন্ত্রণ
২. ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে একটি বড় দুর্ঘটনা ঘটল। সেখানে আপনার একজন আপনজন আহত হলেন। তখন আপনি কী করবেন?
ক. শুধু তারই চিকিৎসা করবেন
খ. নিয়ম মেনে সবচেয়ে ক্রিটিক্যাল রোগীকে আগে চিকিৎসা করবেন
গ. অন্য ডাক্তারকে ডাকবেন
ঘ. আতঙ্কিত হবেন
৩. একজন চিকিৎসক, তার রোগীর ব্যক্তিগত অনেক তথ্য গোপন রাখেন। এটি সেই চিকিৎসকের কোনো মানবিক গুণের প্রকাশ?
ক. সততা
খ. দায়িত্বশীলতা
গ. গোপনীয়তা রক্ষা
ঘ. শৃঙ্খলা
৪. সাংস্কৃতিক পার্থক্যের কারণে অনেক রোগী কোনো কোন ধরনের চিকিৎসা প্রত্যাখ্যান করে থাকে, আপনি সেই রোগীকে কী করবেন?
ক. তাকে একটু জোর করবেন
খ. তার সিদ্ধান্তকে সম্মান করবেন
গ. পরিবারের ওপর চাপ দেবেন
ঘ. সংস্কৃতির প্রেক্ষাপট বোঝে নিয়ে বিকল্প ব্যাখ্যা দেবেন
৫. হাসপাতালে একজন রোগীর মৃত্যু হলো। তার পরিবারকে এই সংবাদটি জানানোর সময় আপনি তাকে কোথায় নিয়ে গিয়ে বলবেন?
ক. ব্যস্ত করিডরে ডেকে
খ. প্রাইভেট রুমে নিয়ে গিয়ে
গ. ফোনে জানাব
ঘ. পরে বলব