অভিনব এক ঘোষণা দিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি রেস্তোরাঁ। একা খেতে গেলে কারও জন্য খাবার পরিবেশন করবে না তারা। রেস্তোরাঁটি বলছে, তারা ‘একাকিত্ব বিক্রি’ করে না।

এমনকি রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ যেসব গ্রাহক একা খেতে চান, তাঁদের জন্য চারটি শর্তও বেঁধে দিয়েছে। এগুলো হচ্ছে, দুজনের খাবারের দাম একাই পরিশোধ করা, দুজনের খাবার একাই খাওয়া, কোনো বন্ধুকে ডাকা অথবা পরেরবার আসার সময় স্ত্রীকে সঙ্গে আনা।

বিতর্ক তৈরি করা রেস্তোরাঁটি দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ জেওলা প্রদেশের ইউশা শহরে অবস্থিত।

কোরিয়ায় একা খাওয়ার প্রথাকে ‘হনবাপ’ নামে ডাকা হয়। সম্প্রতি এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেকেই একা খাওয়ার স্বাধীনতাকে নিজের জন্য বেছে নিচ্ছেন। যদিও কিছু রেস্তোরাঁ এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছে।

ওই রেস্তোরাঁর এমন সিদ্ধান্ত সামাজিক যোগাযোগের প্ল্যাটফর্মগুলোয় নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই একা খাওয়া মানে একাকিত্ব, রেস্তোরাঁটির এমন দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা করেছেন।

একটি বেলুনে রেস্তোরাঁটি লিখে রেখেছে, ‘আমরা একাকিত্ব বিক্রি করি না, দয়া করে একা আসবেন না।’

বিতর্ক তৈরি হওয়ার আরেকটি কারণ হলো, দক্ষিণ কোরিয়ায় একা থাকার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্ট্যাটিস্টিকস কোরিয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মোট বাসাবাড়ির ২৯ শতাংশেই একজনমাত্র মানুষ থাকেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন লিখেছেন, ‘রেস্তোরাঁমালিকের চিন্তাভাবনা সেকেলে মনে হচ্ছে।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘একা খাওয়াকে কেন একাকিত্বের সমান মনে করা হচ্ছে?’

আরেকজন লিখেছেন, ‘রেস্তোরাঁটি ক্রেতাদের গুরুত্ব দেয় না।’ এত সমালোচনার মধ্যেও রেস্তোরাঁটির পক্ষে দাঁড়িয়েছেন আরেকজন। তিনি লিখেছেন, ‘রেস্তোরাঁর মালিক যদি অর্থনৈতিক চাপ নিতে চান, তাহলে তাদের পছন্দকে সম্মান জানানো উচিত।’

এ ধরনের ঘটনা দক্ষিণ কোরিয়ায় বেশ কয়েকবার ঘটেছে। সবচেয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাটি গত জুলাই মাসের। ইয়োসুর একটি রেস্তোরাঁয় কর্মীরা একা খেতে আসা এক গ্রাহকের প্রতি রুক্ষ মন্তব্য করেন। তাঁরা নাকি বলেছিলেন, ‘তাড়াতাড়ি খেয়ে নিন, আরও লোক আসছে।’

এ বছরের শুরুর দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরেক রেস্তোরাঁর ঘটনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। কারণ সাইনবোর্ডে লেখা ছিল, একা খেতে আসা গ্রাহকদের খাওয়ার সময় কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দেখা নিষেধ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এক ক ত ব

এছাড়াও পড়ুন:

গিনি-বিসাউয়ে ক্ষমতা দখল করল সেনাবাহিনী, প্রেসিডেন্ট গ্রেপ্তার

গিনি-বিসাউয়ের একদল সেনা কর্মকর্তা দেশটির ‘সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ’ নিজেদের হাতে নেওয়ার দাবি করেছেন। এর এক দিন আগে দেশটির প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুই শীর্ষ প্রার্থীই নিজেদের বিজয়ী ঘোষণা করেছিলেন।

এই কর্মকর্তারা নিজেদের ‘হাই মিলিটারি কমান্ড ফর দ্য রিস্টোরেশন অব অর্ডার’ নামে পরিচয় দিয়েছেন। গতকাল বুধবার টেলিভিশনে দেওয়া এক বিবৃতিতে তাঁরা জানান, দেশের নির্বাচনপ্রক্রিয়া “পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত” তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।

সেনাবাহিনীর যে কর্মকর্তা অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সেই ডেনিস এন’কানহা প্রেসিডেন্ট গার্ডের প্রধান ছিলেন। যাঁর দায়িত্ব ছিল প্রেসিডেন্টকে রক্ষা করা, তিনিই প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তার করেছেন।নিকোলাস হক, আল-জাজিরার সংবাদদাতা

এ ছাড়া সেনা কর্মকর্তারা দেশের সব স্থল, আকাশ ও জলসীমা বন্ধ ঘোষণা করেন এবং রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেন।

এই ঘোষণার আগে রাজধানী বিসাউয়ে নির্বাচন কমিশনের দপ্তর, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে টানা গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।

সেনা কর্মকর্তারা দেশের সব স্থল, আকাশ ও জলসীমা বন্ধ ঘোষণা করেন এবং রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেন। এর আগে রাজধানী বিসাউয়ে নির্বাচন কমিশনের দপ্তর, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে টানা গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।

গত রোববার পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিল। নির্বাচনে মুখোমুখি ছিলেন প্রেসিডেন্ট উমারো সিসোকো এমবালো ও তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ফার্নান্দো দিয়াস।

‘আমাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে’, ফরাসি গণমাধ্যম ফ্রান্স২৪-কে ফোনে বলেন এমবালো। তিনি জানান, এখন তিনি ‘সেনাবাহিনীর প্রধান দপ্তরে’ আছেন।

গতকাল প্রতিবেশী সেনেগাল থেকে আল-জাজিরার নিকোলাস হক জানান, প্রেসিডেন্ট এমবালোকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রধান বিরোধী দল পিএআইজিসির নেতা ডোমিঙ্গোস সিমোয়েস পেরেইরাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান হক। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, সামরিক বাহিনী ইন্টারনেট বন্ধের চেষ্টা করছে। দেশে কারফিউ চলছে।’

আমাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে।উমারো সিসোকো এমবালো, গিনি-বিসাউয়ের প্রেসিডেন্ট

হক জানান, সেনাবাহিনীর যে কর্মকর্তা অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সেই ডেনিস এন’কানহা প্রেসিডেন্ট গার্ডের প্রধান ছিলেন। যাঁর দায়িত্ব ছিল প্রেসিডেন্টকে রক্ষা করা, তিনিই প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তার করেছেন।’

প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কাছে গোলাগুলির ঘটনার পর গাড়িতে তল্লাশি করছেন সেনাবাহিনীর সদস্য

সম্পর্কিত নিবন্ধ