ময়মনসিংহে পুলিশ বক্সের সামনে যুবদলকর্মীকে হত্যা
Published: 27th, November 2025 GMT
ময়মনসিংহ নগরীতে সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে রেদুয়ান জাহান রিয়াদ (২৮) নামে এক যুবদলকর্মী নিহত হয়েছেন। বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে নগরীর পাটগোদাম বীজ মোড়ে পুলিশ বক্সের সামনে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি মারা যান।
নিহত রেদুয়ান জাহান রিয়াদ নগরীর ১৩১ নম্বর কালিবাড়ি এলাকার মো.
আরো পড়ুন:
গজারিয়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় যুবক নিহত
কুমিল্লায় ব্যবসায়ী আনোয়ার হত্যা: ২ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৫ জনের যাবজ্জীবন
নিহতের বাবা সাইদুল হক বলেন, “পাটগুদাম অস্থায়ী পুলিশ বক্সের ভেতরে আমার ছেলে আহত অবস্থায় অনেকক্ষণ পড়েছিল। কেউ তাকে বাঁচাতে আসেনি। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। আমার ছেলে যুবদল নেতা ইনছানের সঙ্গে রাজনীতি করত। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দোষীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।”
ময়মনসিংহ মহানগর যুবদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইনছান বলেন, “রেদুয়ান জাহান রিয়াদ যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। তিনি যুবদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারেএবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের (ইনচার্জ) শফিক উদ্দিন বলেন, “বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ছুরিকাঘাতে আহত এক যুবককে হাসপাতালে আনা হয়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি মারা যান। ওই যুবকের হাটুর ওপরে ছুরিকাঘাত করা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।”
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শিবিরুল ইসলাম বলেন, “ব্রিজ এলাকায় সক্রিয় ছিনতাইকারী একটি চক্রের মধ্যে বিরোধের জের ধরে এই ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ছুরিকাঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তদন্ত শেষে ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে।”
ঢাকা/মিলন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ব এনপ য বদল
এছাড়াও পড়ুন:
ভিক্টোরিয়ায় চিকিৎসা নিতে এসে মৃত্যু, স্বজনরা জানলো দুইদিন পর
শহরের নিতাইগঞ্জের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন এক পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তি। প্রথমে সে জরুরী বিভাগে থাকা ডাক্তারকে দেখান। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় ২১৫ নাম্বার ওয়ার্ডের কার্ডিওলজি ডাক্তারের কাছে।
কার্ডিওলজি ডাক্তার তাকে ইসিজি করতে বললে তিনি ইসিজি করে এসে ডাক্তারের সামনেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গত ২৪ নভেম্বর (সোমবার) সকালে এ ঘটনাটি ঘটে।
মৃত্যু ব্যক্তিটির নাম আব্দুল জব্বার। তিনি ফতুল্লা থানাধীন পূর্ব সস্তাপুর এলাকায় অস্থায়ী বাসিন্দা। তার গ্রামের বাসা ময়মনসিংহ জেলায়। পেশায় তিনি ছিলেন মাছ বিক্রেতা।
এদিকে তার মৃত্যুবরণ হাসপাতালে এক প্রকার হৈচৈ পড়ে যায়। কারণ, তার সাথে কোন স্বজন ছিলো না। ফলে কার কাছে লাশটি বুুঝিয়ে দিবেন সেই লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। ফলে শুরু হয় লাশটির স্বজনদের অনুসন্ধান। কিন্তু স্বজনদের সন্ধান না পেয়ে লাশটি রাখা হয় হিমঘরে।
গত দুইদিন ধরে সোস্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে লাশটির স্বজনদের অনুসন্ধান করা হয়। কিন্তু কোনভাবেই স্বজনদের সন্ধান না পেয়ে লাশটি অজ্ঞাতভাবে লাফন করার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদনের প্রস্তুতি নেয়া হয়।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে এ আবেদনটি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন হাসপাতালের অফিস সহায়ক সাউদ নূরে শফিউল কাদের। তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে যাওয়ার পর পরই তাকে হাসপাতাল থেকে কল করে বলা হয়, ‘লাশটির স্বজনদের সন্ধান পাওয়া গেছে। আপনি দ্রুত হাসপাতালে চলে আসুন।’
এদিকে জরুরী বিভাগের পাশে লাশকাটা ঘরের সামনে অশ্রুসিক্ত নয়নে দাঁড়িয়ে আছে মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে আমির হামজা। তিনি এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে, তারা পিতা মারা গেছে। একদম জলজ্যান্ত মানুষটি বাসা থেকে অনেকটাই সুস্থভাবেই বেড়িয়ে আসলেন, অথচ তিনি আজ মৃত। এসব ভেবেই তিনি অনেকটাই দুঃখে শোকে কাতর। এমন পরিস্থিতিতে তার বক্তব্য নেয়ার সুযোগ ছিলো না।
তবে এ বিষয়ে মৃত আব্দুল জব্বারের চাচাতো ভাই মো: মফিজুল ইসলাম বলেন, যথারীতি ২৪ নভেম্বর সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে আসেন আব্দুল জব্বার। তার পর থেকে তার আর কোন খোঁজ পাইনি। আমরা তাকে গত দুইদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করছি।
কিন্তু পাই নি। আজ সকালে আমাদের এলাকারই এক মহিলা বলে, ওনাকে নাকি এ হাসপাতালে দেখছে। তার কথা শুনে আমরা এ হাসপাতালে এসে তার খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করি। পরে জানতে পারি, এখানে চিকিৎসা নিতে এসে তিনি মারা গেছে।
তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ী ময়মনসিংহে নিয়ে যাবো এবং ওখানে দাফন করবো।
এ ব্যাপারে হাসপাতালটির ওয়ার্ড মাষ্টার শাহাদাৎ হোসেন বলেন, তিনি প্রথমে জরুরী বিভাগে আসেন। সেখান থেকে তাকে ২১৫ নাম্বার ওয়ার্ডের কার্ডিওলজি স্যারের কাছে পাঠানো হয়। স্যার তাকে ইসিজি করতে বললে তিনি ইসিজি করিয়ে নিয়ে আসেন। কিন্তু হঠাৎ করেই স্যারের রুমে মাটিতে পড়ে যান এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, আমরা তার স্বজনদের খোঁজ পেতে অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু পাই নি। আজ তাই ডিসি স্যারের কাছে লিখিত আবেদন নিয়ে পাঠিয়েছিলা যে, এ লাশটি এখন কি করবো। তার নির্দেশনা আসলে আমরা তাকে অজ্ঞাত লাশ হিসেবে দাফন করতাম।
আল্লাহ্’র রহমতে এর আগেই তার স্বজনরা চলে আসছে। আমরা মৃত ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য ও ছবির সাথে মিলিয়ে এবং যাচাই করে এ স্বজনদের হাতে লাশটি বুঝিয়ে দিচ্ছি।