করিন্থ: অর্থনৈতিক উন্নতির শিখরে পৌঁছেছিলো যে নগর রাষ্ট্র
Published: 27th, November 2025 GMT
প্রাচীন গ্রীসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং সমৃদ্ধশালী নগর-রাষ্ট্র ছিলো করিন্থ। এটি তার কৌশলগত অবস্থান, বাণিজ্য এবং সাংস্কৃতিক অবদানের জন্য বিখ্যাত ছিল। এটি পেলোপোনিস এবং মূল গ্রীসের সংযোগকারী ইস্তমাস অফ করিন্থ নামক সংকীর্ণ ভূখণ্ডে অবস্থিত ছিল।
করিন্থ দুটি উপসাগর, করিন্থিয়ান এবং সারোনিক, উভয়ের সাথেই সংযুক্ত ছিল। এই অনন্য ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এটি স্থলপথ এবং সমুদ্রপথ, উভয় বাণিজ্যেরই প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল।
আরো পড়ুন:
নিম-হলুদ কী সত্যিই ত্বকের জন্য ভালো?
ইডিপাস: না জেনে নিজের মাকে বিয়ে করেছিলেন
খ্রিষ্টপূর্ব ৭ম এবং ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে করিন্থ অর্থনৈতিক উন্নতির শিখরে পৌঁছায়। এই সময়ে তারা মৃৎশিল্প, বিশেষ করে কালো রঙের মৃৎপাত্র তৈরিতে উদ্ভাবনী কৌশল ব্যবহার করে, যা ভূমধ্যসাগর জুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
প্রথমদিকে করিন্থ একটি রাজতন্ত্র ছিল, যা পরে ব্যাকিয়াড পরিবারের অভিজাতদের দ্বারা শাসিত হয়। পরবর্তীতে সাইপসেলাস এবং তার পুত্র পেরিয়ান্ডার -এর অধীনে নগরীটি স্বৈরশাসকদের দ্বারা শাসিত হয়েছিল (আনুমানিক ৬৫৭ থেকে ৫৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)।
করিন্থ তার রাজনৈতিক প্রভাব বাড়াতে কর্কিরা এবং সিসিলির সিরাকিউস এর মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে উপনিবেশ স্থাপন করেছিল, যা পশ্চিম ভূমধ্যসাগরে তাদের বাণিজ্যিক আধিপত্য নিশ্চিত করে।
এই নগরীতে অ্যাপোলোর মন্দিরসহ অসংখ্য স্মৃতিস্তম্ভ এবং স্থাপত্য নিদর্শন ছিল। এখানে অলিম্পিক গেমসের পরেই মর্যাদাপূর্ণ ইস্তমিয়ান গেমস অনুষ্ঠিত হতো, যা এর সাংস্কৃতিক গুরুত্ব তুলে ধরে।
১৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রোমান জেনারেল লুসিয়াস মুমিয়াস করিন্থ দখল ও ধ্বংস করে দেন। এর প্রায় এক শতাব্দী পরে, ৪৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে জুলিয়াস সিজার এটিকে একটি রোমান উপনিবেশ হিসেবে পুনর্নির্মাণ করেন এবং এটি গ্রীসের রোমান প্রদেশের রাজধানী হয়।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ন থ টপ র ব
এছাড়াও পড়ুন:
দৃষ্টিনন্দন হ্রদটি এখন ভাগাড়
সকালে সূর্যের আলো পড়তেই ঝলমল করত হ্রদের পানি। ছিল দৃষ্টিনন্দন ঘাট। সেই সঙ্গে হ্রদে ঘুরে বেড়ানো যেত নৌকা নিয়ে। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভিড় করতেন সেখানে। গল্পে-আড্ডায় খুঁজতেন প্রশান্তি। তবে এখন আর সেই দিন নেই। দীর্ঘদিনের অবহেলায় হ্রদটি নাব্যতা হারিয়েছে। প্রতিনিয়ত ময়লা–আবর্জনা ফেলায় পরিণত হয়েছে ভাগাড়ে। এ নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
চুয়েটের মূল ফটক পেরিয়ে ডান পাশে কিছু দূর গেলেই দেখা মিলবে হ্রদটির। সরেজমিন দেখা যায়, হ্রদের বিভিন্ন স্থানে জমেছে ময়লার স্তূপ। ঘোলাটে পানির ওপরে ময়লার স্তর, উড়ছে মশার ঝাঁক। সেই সঙ্গে দুর্গন্ধ তো রয়েছেই। এ কারণে মানুষজনের উপস্থিতিও দেখা যায়নি।
গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানের পর নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নিলে হ্রদটির সংস্কারের দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা। এরপর এটি সংস্কারের উদ্যোগও নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। তবে তা বাস্তবায়িত হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, হ্রদ সংস্কারের জন্য আলাদা কোনো প্রকল্প নেই। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত বছর জুনে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। আগামী বছর জুনে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। ব্যয় ধরা হয় ৮৮ লাখ টাকা। নির্মাণকাজটি করছে ঠিকাদার মোহাম্মদ রোকন উদ্দিনের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেসার্স আইএস ট্রেডিং ও জেজে ট্রেডার্স। এ পর্যন্ত প্রকল্পের ২০ ভাগ বাস্তবায়ন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন-অবহেলায় হ্রদটি পড়ে থাকায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন উপায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দৃষ্টিনন্দন হ্রদটির স্মৃতিচারণা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সাঈদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৯ সালে সুবর্ণজয়ন্তী ও সমাবর্তনের অনুষ্ঠান উপলক্ষে লেকের সংস্কারসহ আশপাশের এলাকা দৃষ্টিনন্দন করে তোলা হয়েছিল। আমরা লেকের পাশে বসে আড্ডা দিতাম, সময় কাটাতাম। এমনকি নৌকা নিয়ে লেকের এক পার থেকে আরেক পারে যেতাম। হ্রদের বিপরীত পাশে একটি পদ্মপুকুরও ছিল। তবে এখন আর সেই দিন নেই।’
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হ্রদের সৌন্দর্যবর্ধনের পর থেকে আর কোনো ধরনের সংস্কার বা রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হয়নি। এ জন্য আবর্জনা পড়ে ধীরে ধীরে হ্রদটি নষ্ট হয়ে গেছে।
হ্রদের চিত্র ছিল এ রকম। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তোলা