রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের এক নবীন শিক্ষার্থীকে র‍্যাগিং ও মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় ২৪ হলের ছাদে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আজ সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে আগামীকাল মঙ্গলবারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বিজয় ২৪ হলের প্রাধ্যক্ষ আমির শরীফ।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী দ্বীন ইসলাম বাংলা বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। আর যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর নাম আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি একই বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

কামরুল হাসান নামের বিজয় ২৪ হলের একজন শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত ১১টার দিকে হলের ছাদে কান্নার শব্দ পাওয়া যায়। পরে তিনিসহ হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী ছাদে গিয়ে দেখেন, ভুক্তভোগী দ্বীন ইসলাম কান চেপে ধরে কান্নাকাটি করছিলেন।

১৭তম ব্যাচের প্রত্যক্ষদর্শী একজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টার দিকে ১৬তম ব্যাচের বড় ভাইয়েরা আমাদের ব্যাডমিন্টন মাঠে ডাকে। আসতে আসতে আটটা বাজছে। আসার পর হলের ছাদে নিয়ে গেছে। ছাদে নিয়ে গিয়ে ও রকম বকাবকি ও গালাগালি করতেছে। ওই সময় ১৬তম ব্যাচের ১১ থেকে ১২ জন ছিল।’ দ্বীন ইসলামকে মারধরের বিষয়ে ওই শিক্ষার্থীর দাবি, ‘ভাই (মামুন) ওকে (দ্বীন) একবার ডাকছিল। ও পেছন গেছে। ভাই, হুট করি আসি কয়, কথা দিয়ে হচ্ছে না। এখন তোদের অন্য স্টেপ নিতে হবে। তারপর একটা চড় মারছে।’

এ ঘটনার পর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দ্বীন ইসলামকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি সেভেনটিন ব্যাচ। মামুন ভাই কল দিছে। আমি আটটার সময় এখানে আসছি। আমি বলে ওদের কথা অমান্য করি। আমারে ডাক দিছে, আমি এক দিন ভিসি মাঠে আসি নাই। পরে আজকা ডাইকা আইনা মামুন ভাই আমারে কানের মধ্যে মারছে। আমার কানের পর্দা ফেটে গেছে।’

তবে দ্বীন ইসলামকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ও আমার বিভাগের ছোট ভাই। ও রকম কিছু হয়নি। আমি ওর গায়ে হাত দেইনি। আমরা পিকনিক নিয়ে কথা বলতেছিলাম। ওই সময় একটু রাগ হইছিলাম, এটা সত্যি কথা। ও অভিনয় করে কান্নাকাটি শুরু করে।’

এদিকে শিক্ষার্থীকে র‍্যাগিং ও মারধরের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিজয় ২৪ হলের সহকারী প্রাধ্যক্ষ এ টি এম জিন্নাতুল বাসারকে আহ্বায়ক, সহকারী প্রাধ্যক্ষ সাইফুদ্দিন খালেদ ও সহকারী প্রক্টর ফয়সাল-ই-আজমকে তদন্ত কমিটির সদস্য করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বিজয় ২৪ হলের প্রাধ্যক্ষ আমির শরীফ প্রথম আলোকে বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ ব ন ইসল ম প রথম আল ক ম রধর র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমারে মারছে’ বলে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ, অভিযুক্ত বললেন ‘অভিনয় করে কান্নাকাটি’

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের এক নবীন শিক্ষার্থীকে র‍্যাগিং ও মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় ২৪ হলের ছাদে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আজ সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে আগামীকাল মঙ্গলবারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বিজয় ২৪ হলের প্রাধ্যক্ষ আমির শরীফ।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী দ্বীন ইসলাম বাংলা বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। আর যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর নাম আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি একই বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

কামরুল হাসান নামের বিজয় ২৪ হলের একজন শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত ১১টার দিকে হলের ছাদে কান্নার শব্দ পাওয়া যায়। পরে তিনিসহ হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী ছাদে গিয়ে দেখেন, ভুক্তভোগী দ্বীন ইসলাম কান চেপে ধরে কান্নাকাটি করছিলেন।

১৭তম ব্যাচের প্রত্যক্ষদর্শী একজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টার দিকে ১৬তম ব্যাচের বড় ভাইয়েরা আমাদের ব্যাডমিন্টন মাঠে ডাকে। আসতে আসতে আটটা বাজছে। আসার পর হলের ছাদে নিয়ে গেছে। ছাদে নিয়ে গিয়ে ও রকম বকাবকি ও গালাগালি করতেছে। ওই সময় ১৬তম ব্যাচের ১১ থেকে ১২ জন ছিল।’ দ্বীন ইসলামকে মারধরের বিষয়ে ওই শিক্ষার্থীর দাবি, ‘ভাই (মামুন) ওকে (দ্বীন) একবার ডাকছিল। ও পেছন গেছে। ভাই, হুট করি আসি কয়, কথা দিয়ে হচ্ছে না। এখন তোদের অন্য স্টেপ নিতে হবে। তারপর একটা চড় মারছে।’

এ ঘটনার পর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দ্বীন ইসলামকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি সেভেনটিন ব্যাচ। মামুন ভাই কল দিছে। আমি আটটার সময় এখানে আসছি। আমি বলে ওদের কথা অমান্য করি। আমারে ডাক দিছে, আমি এক দিন ভিসি মাঠে আসি নাই। পরে আজকা ডাইকা আইনা মামুন ভাই আমারে কানের মধ্যে মারছে। আমার কানের পর্দা ফেটে গেছে।’

তবে দ্বীন ইসলামকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ও আমার বিভাগের ছোট ভাই। ও রকম কিছু হয়নি। আমি ওর গায়ে হাত দেইনি। আমরা পিকনিক নিয়ে কথা বলতেছিলাম। ওই সময় একটু রাগ হইছিলাম, এটা সত্যি কথা। ও অভিনয় করে কান্নাকাটি শুরু করে।’

এদিকে শিক্ষার্থীকে র‍্যাগিং ও মারধরের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিজয় ২৪ হলের সহকারী প্রাধ্যক্ষ এ টি এম জিন্নাতুল বাসারকে আহ্বায়ক, সহকারী প্রাধ্যক্ষ সাইফুদ্দিন খালেদ ও সহকারী প্রক্টর ফয়সাল-ই-আজমকে তদন্ত কমিটির সদস্য করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বিজয় ২৪ হলের প্রাধ্যক্ষ আমির শরীফ প্রথম আলোকে বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ