আ.লীগ নেতাকে হাতুড়িপেটায় মাথা ফাটাল যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দল নেতারা
Published: 15th, January 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে হাতুড়ি ও লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে যুবদল - স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের যদুবয়রা পুরাতন বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
আহত আওয়ামী লীগ নেতার নাম আব্দুল লতিফ লাইফা (৬০)। তিনি যদুবয়রা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি। ভয়ে তিনি নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আজ বুধবার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নিজ বাড়ির একটি কক্ষে শুয়ে আছেন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল লতিফ লাইফা। মাথায় ব্যান্ডেজ, পায়ে ও শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের ক্ষত। তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে বাজারে চা পান করছিলাম। সে সময় হঠাৎ যদুবয়রা ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক শামিম হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক ও ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনিসুর রহমান, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রিপন আলীসহ ১৫-২০ লাঠিসোঁটা ও হাতুড়ি নিয়ে হামলা চালান।
তার ভাষ্য, আবারও হামলা হতে পারে, সেই ভয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাননি। থানাতেও লিখিত অভিযোগ করেননি।
তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে যদুবয়রা ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক শামিম হোসেন বলেন, ৫০-৬০ জনের একটি মোটরসাইকেল বহর ছিল মঙ্গলবার রাতে। বহর নিয়ে এনায়েত বাজারে পৌঁছে শুনলাম মারামারি হয়েছে। কে বা কারা করেছে তা জানি না।
অভিযোগ অস্বীকার করে যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আনিসুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে ছিলাম না। কারা মারামারি করেছে তা জানি না।
অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রিপন আলী বলেন, বাজারে গিয়ে দেখি স্থানীয় লোকজন একজনকে মারধর করছে। কাউকে মারছে চিনি না।
রাতে যদুবয়রাতে উত্তেজনা ছিল, তবে মারামারির খবর জানা নেই বলে জানিয়েছেন কুমারখালী থানার ওসি মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ব এনপ য বদল ম রধর আওয় ম য বদল
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির এমপি প্রার্থী বললেন, ‘সকলকে তো আমি বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিতে পারব না’
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার বিএনপিতে যোগ দেওয়াকে স্বাগত জানিয়ে ফরিদপুর-৪ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বলেছেন, ‘সকলকে তো আমি বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিতে পারব না।’
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ভাঙ্গা মহিলা ডিগ্রি কলেজ মাঠে ভাঙ্গা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি আয়োজিত যোগদান সভা ও উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শহিদুল ইসলাম এ কথা বলেন।
সভায় ভাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ভাঙ্গা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি সহিদুল হক, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য লাভলু মুন্সীসহ আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বিএনপিতে যোগ দেন। তাঁদের আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান বিএনপির প্রার্থী শহিদুল ইসলাম ওরফে বাবুল। তিনি জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক।
বক্তব্যে শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক মানুষ আছে এই এলাকায়, যারা আওয়ামী লীগ করে, তাদের সকলকে তো আমি বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিতে পারব না। দেওয়া যাবে? সব মানুষ কি অন্যায় করেছে? যারা অন্যায় করেছে, তারা কেউ কেউ পালিয়ে গিয়েছে। কেউ কেউ গর্তে লুকিয়ে আছে।’
যোগদানকারী নেতা সহিদুল হক প্রসঙ্গে বিএনপির প্রার্থী শহিদুল আরও বলেন, ‘যাকে কেন্দ্র করে আমাদের আজকের এই সভা, সহিদুল হক সাহেব সম্পর্কে আমি অনেককে জিজ্ঞাসা করেছি, সকলে ওনার সম্পর্কে ভালো বলেছেন। কেউ বলে নাই, উনি আওয়ামী লীগের নামে, দলের নামে কোনো অন্যায় করেছে, কোনো অনিয়ম করেছে, কারও ওপর জুলুম করেছে। যদি একজন লোকও বলত, তবে তাকে এই মুহূর্তে এ জায়গায়, এভাবে গ্রহণ করতাম না। এটা আমার নীতিবিরুদ্ধ।’
পুলিশ ও প্রশাসনের উদ্দেশে শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘যারা অন্যায় করেছে, তাদের আপনারা গ্রেপ্তার করেন। যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের আপনারা গ্রেপ্তার করেন।’
বিগত সরকারের সমালোচনায় বিএনপির প্রার্থী বলেন, ‘অনেক উন্নয়নের গল্প শুনেছি। বিগত ১৭ বছরে এ এলাকায় কোনো উন্নয়ন হয়নি। গোপালগঞ্জে বিভাগ করতে পারেন নাই, সে জন্য ফরিদপুরেও বিভাগ দেন নাই। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ফরিদপুরে বিভাগ হবেই। দেশে এমন কোনো পুরোনো জেলা খুঁজে পাবেন না, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় নেই। এমনকি গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, কিন্তু ফরিদপুরে হয়নি।’
আগামী দিনের পরিকল্পনা তুলে ধরে শহিদুল ইসলাম বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ভাঙ্গা মহিলা কলেজকে সরকারীকরণ করা হবে এবং ভাঙ্গায় একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আকরামুজ্জামান। বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব মোল্লা, ভাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদুল হক, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য লাভলু মুন্সী প্রমুখ।
মুঠোফোন বন্ধ থাকায় আওয়ামী লীগ নেতা সহিদুল হকের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে তিনি গতকাল ওই যোগদান অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘আমি ১৯৬৮ সাল থেকে ছাত্রলীগে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হই। ধাপে ধাপে আমি সর্বশেষ ভাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। আমি আজীবন নিষ্ঠার সঙ্গে রাজনীতি করেছি। রাজনীতিকে কখনো আর্থিক উন্নয়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করিনি। রাজনীতি ছিল আমার নেশা। তবে আজ থেকে আমি আর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নই। আমি আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। উপস্থিত সাংবাদিক ভাইয়েরা আপনারা শুনুন, আমি আজ থেকে আর আওয়ামী লীগ করছি না। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমার সকল সম্পর্কের ইতি ঘটাচ্ছি। আজ থেকে আমি বিএনপির রাজনীতি সঙ্গে যুক্ত হলাম এবং বিএনপিতে যোগ দিয়েছি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ের পক্ষে আমি সাধ্যমতো কাজ করে যাব।’