নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, ‘‘যারা নিহত হয়েছেন, আমরা তাদের আর ফিরে পাব না। তবে তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা সর্বদা তাদের সার্বিক সহায়তা ও সহযোগিতার জন্য পাশে থাকব।’’

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আড়াইহাজার উপজেলায় নিহত-আহতদের পরিবারে মাঝে আর্থিক সহায়তা ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদে অডিটরিয়ামে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন জেলা প্রশাসক। সেখানে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

এ সময় আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তঅ সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন, আড়াইহাজার উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নঈম উদ্দীন, গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক এবং আড়াইহাজার পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

আরো পড়ুন:

কিশোরগঞ্জে পাওনা টাকা নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১

রাঙ্গুনিয়ায় আহত আ.

লীগ নেতার মৃত্যু

একইদিন অনুষ্ঠান শেষে জেলা প্রশাসক ইউনাইটেড স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্লাব ‘ইউনাইটেড ওয়েলফেয়ার ক্লাব’ আয়োজিত ‘স্বপ্নের দোকানের’ শুভ উদ্বোধন করেন।

এ উদ্যোগের মাধ্যমে মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদের নতুন পোশাক বিতরণ করা হবে। সেখানে উদ্বোধনী বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘‘মানুষ তখনই আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে পরিগণিত হবে, যখন সে তার মানবতার হাত প্রসারিত করবে।’’ 

এছাড়াও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা আড়াইহাজার শহর বাইপাস সড়কের শুভ উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি জেলা প্রশাসনের গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন নারায়ণগঞ্জ কর্মসূচির গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং পরিবেশ সংরক্ষণে নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে আলোকপাত করেন। 

ঢাকা/অনিক/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হত গণঅভ য ত থ ন দ র পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

জকসু: ছাত্রদলের প্যানেল থেকে লড়বেন জুলাইয়ে গুলিবিদ্ধ অনিক

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে ছাত্র রাজনীতির অঙ্গনে আলোচিত এক নাম অনিক কুমার দাস। ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে ৩ মাস জীবন-মৃত্যুর লড়াই পেরিয়ে ওঠা এই শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল থেকে।

অনিক ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সম্মুখসারির কর্মী। ১৬ জুলাই ঢাকার সিএমএম কোর্টের সামনে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন। গুলিটি তার খাদ্যনালী ভেদ করে শরীরের অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। প্রথমে ন্যাশনাল মেডিকেলে, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয়।

আরো পড়ুন:

তারেক রহমানের জন্মদিনে ছাত্রদলের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

জবি ছাত্র জোবায়েদ হত্যা মামলায় ২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ

কিন্তু ৩১ জুলাই তাকে হাসপাতাল থেকে জোর করে বের করে দেওয়া হলে অবস্থার আরো অবনতি হয়। ১১ আগস্ট ভর্তি করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিজের ভূমিকা সম্পর্কে অনিক বলেন, “আন্দোলনের প্রথমদিন থেকেই উন্মুক্ত লাইব্রেরি থেকে আমরা কার্যক্রম শুরু করি। পরে ১১ জুলাই সিনিয়রদের সরে যাওয়ার ঘোষণার পর আমরা কয়েকজন নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট ভেঙে শাহবাগে পৌঁছাই। ১৪ ও ১৫ জুলাই পুলিশের ব্যারিকেড পেরিয়ে টিএসসিতে অবস্থান নিই, সেদিন ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলারও শিকার হই।”

তিনি বলেন, “১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে এগোতেই সিএমএম আদালতের সামনে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বন্দুক দিয়ে হামলা করে। পাল্টা ধাওয়া দিতে গেলে একটি গুলি এসে আমার পেটে লাগে। এরপর টানা ৩ মাস মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেছি।”

ছাত্রদলের প্যানেলে যুক্ত হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা, জবিকে নিয়ে তাদের ইতিবাচক চিন্তা এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের অঙ্গীকার তাকে অনুপ্রাণিত করেছে।

নির্বাচনে জয়-পরাজয় নিয়ে অনিক বলেন, “এটা সম্পূর্ণ শিক্ষার্থীদের বিশ্বাসের বিষয়। আমি সবসময় তাদের ন্যায্য দাবির পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব। শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি, বাকিটা তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।”

বিজয়ী হলে করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, “শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাসমুক্ত করে শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করাই হবে প্রথম দায়িত্ব। ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০-এর গণ-অভ্যুত্থান এবং ২০২৪-এর ফ্যাসিস্ট হাসিনাবিরোধী গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের জানাবো, যেন ভবিষ্যতে কোনো স্বৈরাচারী শক্তি শিক্ষাজীবন বিপন্ন করতে না পারে।”

গত ৫ নভেম্বর ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১২ নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ২৪৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

১৯–২০ নভেম্বর ছিল বাছাই, ২৩ নভেম্বর প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। ২৪–২৬ নভেম্বর আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি, ২৭ ও ৩০ নভেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে। ৩ ডিসেম্বর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর ৪, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ থাকবে। 

৯ থেকে ১৯ ডিসেম্বর চলবে প্রচারণা। ২২ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে ২২–২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশ করা হবে ফলাফল।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসু: ছাত্রদলের প্যানেল থেকে লড়বেন জুলাইয়ে গুলিবিদ্ধ অনিক