রাজশাহীতে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত বিএনপিকর্মীর মৃত্যু
Published: 15th, April 2025 GMT
রাজশাহীর দুর্গাপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত এক বিএনপিকর্মী মারা গেছেন। তার নাম মকবুল হোসেন (৩৮)। তিনি উপজেলার দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়নের আমগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এর আগে সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে ওই এলাকায় বিয়ের দাবিতে এক নারীর অবস্থানকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। নিহতের স্বজনেরা জানান, হামলার সময় মকবুলের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত লাগে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
মকবুলের মৃত্যুর পর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুজ্জামান আয়নাল ও সদস্য সচিব অধ্যাপক জোবায়েদ হোসেন যৌথ স্বাক্ষরে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, এই হামলায় কারা জড়িত তা দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে দেখা হবে। দলের কেউ এই হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে এ বিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
দুর্গাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইব্রাহিম হোসেন জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এলাকায় বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা/কেয়া/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মিয়ানমারের অনলাইন প্রতারণা কেন্দ্র থেকে ২ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে অবস্থিত একটি বড় অনলাইন প্রতারণা কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে দুই হাজারেরও বেশি মানুষকে আটক করেছে এবং বেশ কিছু স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট টার্মিনাল জব্দ করেছে। সোমবার দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম ‘মায়ানমা অ্যালিন’ এই খবর জানিয়েছে।
মায়ানমা অ্যালিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনলাইন প্রতারণা, অবৈধ জুয়া এবং সীমান্তপারের সাইবার অপরাধ দমনের অংশ হিসেবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে অভিযান শুরু করে। সেটার আওতায় কুখ্যাত সাইবার অপরাধ কেন্দ্র ‘কে কে পার্কে’ অভিযান চালানো হয়।
সংবাদমাধ্যমটি জব্দ করা স্টারলিংকের সরঞ্জাম এবং অভিযানে অংশ নেওয়া সেনাদের ছবি প্রকাশ করেছে। তবে সেগুলি ঠিক কখন তোলা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী জোরে দিয়ে বলেছে, কে কে পার্কের ২৬০টির বেশি ভবন অনিবন্ধিত। তাঁরা ৩০ সেট স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট টার্মিনালসহ বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম জব্দ করেছে। ২ হাজার ১৯৮ জনকে আটক করেছে। তবে তাঁরা কোন দেশের নাগরিক, তা জানানো হয়নি।
বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষকে প্রতারণার জন্য দায়ী নানা স্ক্যাম অপারেশন মিয়ানমার থেকে পরিচালিত হয়। সাধারণত অনলাইনে রোমান্টিক প্রলোভন এবং ভুয়া বিনিয়োগ প্রস্তাবের মাধ্যমে এসব করা হয়।
কেন্দ্রগুলো বিদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের সময় ভুয়া প্রতিশ্রুতি দেয়, তাঁদের বৈধ চাকরির প্রলোভন দেখায়, তারপর বন্দী করে রেখে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাতে বাধ্য করে।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য কম্বোডিয়ার একটি বড় সাইবার স্ক্যাম গ্যাংয়ের সন্দেহভাজন সংগঠকদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। নিউ ইয়র্কের একটি কেন্দ্রীয় আদালত সেই গ্যাংয়ের সন্দেহভাজন প্রধানকে অভিযুক্ত করেন। এরপর স্ক্যাম অপারেশনগুলো আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করে।
কে কে পার্ক মিয়ানমারের থাইল্যান্ড সীমান্তের কায়িন রাজ্যের মায়াওয়াড্ডি শহরে অবস্থিত। এই এলাকায় মিয়ানমারের সামরিক সরকারের তেমন একটা নিয়ন্ত্রণ নেই। এলাকাটিতে বরং ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র বাহিনীগুলোর প্রভাব রয়েছে।
সোমবার রাতে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন অভিযোগ করেন, কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়নের শীর্ষ নেতারা কে কে পার্ক পরিচালিত স্ক্যাম প্রকল্পগুলোর সঙ্গে জড়িত।
আগেও এই অভিযোগ করা হয়েছিল। অভিযোগের ভিত্তি ছিল, কারেন গ্রুপ সমর্থিত একটি কোম্পানি সেই জমি ইজারা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। মিয়ানমারের সামরিক সরকার-বিরোধী চলমান সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলনের অংশ কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
স্টারলিংক বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের স্পেসএক্স কোম্পানির একটি উদ্যোগ। এর টার্মিনালগুলো কোম্পানির উপগ্রহের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। মিয়ানমারে এই কোম্পানির লাইসেন্স নেই। তা সত্ত্বেও দেশটিতে অবৈধভাবে স্টারলিংকের শত শত টার্মিনাল প্রবেশ করেছে।
এই বিষয়ে জানতে সোমবার ইলন মাস্কের কোম্পানির সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে নীতিমালা অনুযায়ী তাদের টার্মিনাল ব্যবহার করে ‘মানহানিকর, প্রতারণামূলক, অশ্লীল বা বিভ্রান্তিমূলক কর্মকাণ্ড’ পরিচালনা নিষিদ্ধ।
চীনের চাপের মুখে গত ফেব্রুয়ারিতে স্ক্যাম কেন্দ্রে একবার অভিযান চালিয়েছিল থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার। স্থানীয় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র বাহিনীগুলোর সহযোগিতায় পরিচালিত সেই অভিযানের মাধ্যমে পাচারের শিকার কয়েক হাজার মানুষকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।