বিএসএফের ‘পুশ-ইন’ ঠেকাতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি খেলাফত মজলিসের
Published: 8th, May 2025 GMT
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক লোকজনকে জোরপূর্বক বাংলাদেশে পাঠানো (পুশ–ইন) ঠেকাতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে খেলাফত মজলিস। আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভারতীয় নাগরিকদের অনুপ্রবেশ ঠেকানোর জন্য দেশের সীমান্তবর্তী জেলা প্রশাসনের কার্যকর তৎপরতা চেয়েছে দলটি।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকের আলোচনার বিষয় আজ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে।
খেলাফত মজলিস দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা জোরদারসহ স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নের আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে দেশের সক্ষম সব নাগরিকের বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় দলটি।
ভারত–পাকিস্তান ‘যুদ্ধের’ প্রেক্ষাপটে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বৈঠকে খেলাফত মজলিসের নেতারা বলেন, ভারত প্রতিবেশী পাকিস্তানের মসজিদ-মাদ্রাসায় হামলা ও হত্যাকাণ্ড চালিয়ে সে দেশের সার্বভৌমত্বের পাশাপাশি ধর্মীয় অনুভূতিতেও আঘাত দিয়েছে। মূলত ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকার কাশ্মীরের পেহেলগামে নিরীহ পর্যটকদের নিরাপত্তা বিধানে ব্যর্থতার দায় এড়ানোর জন্যে এই আগ্রাসন চালিয়েছে। উপমহাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে উভয় দেশকে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তাঁরা।
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনকে ইসলামবিদ্বেষী আখ্যা দিয়ে খেলাফত মজলিস বলেছে, এ কমিশন বাতিলের উদ্যোগ না নিয়ে বরং বিতর্ক জারি রাখা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য সঠিক হচ্ছে না। দলটি বলেছে, এ কমিশনবিরোধী আলেম-ওলামা ও ইসলামী ব্যক্তিবর্গকে নারীর প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী হিসেবে চিত্রিত করার অপচেষ্টা চলছে। নারী-পুরুষকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে একদল অর্বাচীন এ বিষয়ে জল ঘোলা করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
অবিলম্বে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন এবং তাদের দেওয়া প্রস্তাব বাতিলের দাবি জানিয়ে খেলাফত মজলিস বলেছে, এ দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে আঘাত দিয়ে প্রণীত প্রস্তাবগুলো কোনোভাবেই এখানে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।
খেলাফত মজলিসের আমির আবদুল বাছিত আজাদের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদেরের সঞ্চালনায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, আবদুল্লাহ ফরিদ ও সৈয়দ ফেরদাউস বিন ইসহাক, যুগ্ম মহাসচিব জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, মোস্তাফিজুর রহমান ও আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান, কাজী মিনহাজুল আলম প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল
এছাড়াও পড়ুন:
এবার কমলগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে নারী, শিশুসহ ১৫ জনকে পুশইন
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের দলই সীমান্ত দিয়ে নারী, শিশুসহ ১৫ জনকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গত বুধবার ভোরে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে প্রবেশ করায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদের আটক করে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ, ৩ জন নারী ও ৩ শিশু রয়েছে।
এর আগে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যে বুধবার খাগড়াছড়ির তিন সীমান্ত দিয়ে ৮১ জন এবং কুড়িগ্রামের রৌমারি সীমান্ত দিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে ৩০ জনকে পুশ ইন করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, পাঁচ বছর ধরে তারা ভারতের আসামে বসবাস করছেন। হঠাৎ ভারতীয় পুলিশ তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়ে হেলিকপ্টারে করে ত্রিপুরার মানিক ভান্ডার এলাকায় নিয়ে এসে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। তাদের বাড়ি নড়াইল, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় বলে দাবি করেছেন।
আটক ব্যক্তিরা আরও জানান, তাদের সঙ্গে আরও অনেকে ছিলেন। এই সংখ্যা তিন শতাধিক হবে। বিএসএফ তাদের কয়েকজনকে কমলগঞ্জের দলই সীমান্ত দিয়ে গেট খুলে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেয়। তবে অন্যদের কোন সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে তোরা কিছু বলতে পারেননি।
মাধবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত নারী সদস্য বিনা রানী দেব জানান, আটক লোকদের প্রথমে বিজিবি ক্যাম্প থেকে থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়িতে তোলার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন। তবে পরবর্তীতে তাদের আর থানায় নেওয়া হয়নি।
মাধবপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শীব নারায়ন শীল বলেন, বিএসএফ ১৫ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করেছে। বিজিবি তাদের আটক করে নিয়ে গেছে। এদিকে সীমান্তে অনুপ্রবেশের জন্য অনেক লোক জড়ো হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
শ্রীমঙ্গলের ৪৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জাকারিয়া আজ বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিকদের জানান, আটক ব্যক্তিরা সবাই বাংলা ভাষায় কথা বলছেন। যাচাই-বাছাই করে তাদের বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনার পর মৌলভীবাজার জেলার সব সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, শুনেছি, বিজিবি ১৫ জনকে আটক করেছে। তবে এখনো পর্যন্ত থানায় হস্তান্তর করেনি।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাখন চন্দ্র সূত্রধর জানান, এ বিষয়ে আমাকে কেউ জানায়নি। আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।