নতুন আমদানি নীতিতে পাঁচ বছরের বেশি পুরোনো গাড়ি আমদানির সুযোগ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যমান আমদানি নীতি অনুযায়ী, পাঁচ বছরের বেশি পুরোনো গাড়ি আমদানি করা যায় না।

এ ছাড়া তিন বছরের বেশি পুরোনো ও ১৬৫ সিসির ইঞ্জিন ক্ষমতার বেশি সব ধরনের মোটরসাইকেল আমদানির সুযোগ রাখারও প্রস্তাব করা হয়েছে নতুন আমদানি নীতিতে। শর্ত সাপেক্ষে এসব সুযোগ দিয়ে তিন বছরের জন্য (২০২৫-২৮) আমদানি নীতি আদেশের খসড়া চূড়ান্ত করার কাজ চলছে।

বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে গতকাল বুধবার সচিবালয়ে এ নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়নি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যবসা-বাণিজ্য সহজীকরণকে মাথায় রেখে আমদানি নীতি আদেশ করা হচ্ছে। শিগগির আমরা এ আদেশের খসড়া চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাব।’ আলাদা করে বাণিজ্যনীতি অর্থাৎ আমদানি ও রপ্তানি নীতির ওপর একটি খসড়াও তৈরি করা হচ্ছে বলে জানান বাণিজ্যসচিব।

স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হতে আর এক বছর সময় বাকি। নতুন আমদানি নীতি আদেশ করার ক্ষেত্রে এ বিষয়টিকেও মাথায় রাখা হচ্ছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বিদ্যমান আমদানি নীতি আদেশের ২০২১-২৪ মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২৪ সালের জুন মাসে। নতুন আদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যমান আদেশটি বজায় থাকে, এটাই নিয়ম। নতুন আদেশ জারির কাজ এক বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। বিদ্যমান নীতি আদেশও প্রণয়ন করা হয়েছিল আগেরটির (২০১৫-১৮) নিয়মিত মেয়াদ শেষ হওয়ার সাড়ে চার বছর পর অর্থাৎ ২০২২ সালের মে মাসে।

নতুন আমদানি নীতি আদেশে হাইড্রোলিক হর্ন নিষিদ্ধের প্রস্তাব থাকতে পারে। শর্ত সাপেক্ষে আমদানির সুযোগ দেওয়া হতে পারে সাড়ে ৪ সেন্টিমিটারের কম ব্যাস বা দৈর্ঘ্যের মাছ ধরার কারেন্ট জাল। এ ছাড়া পাম অলিন আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) থেকে মান উত্তীর্ণের প্রত্যয়ন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া হতে পারে।

বাংলাদেশ রিকন্ডিশনস ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি আবদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, যুক্তরাজ্যে যেমন গাড়ির বয়সসীমার বালাই নেই। পাকিস্তানও তা তুলে দিচ্ছে। মানুষ যাতে কম দামে গাড়ি ব্যবহার করতে পারে, সে জন্য আমরা পাঁচ বছরের বেশি পুরোনো গাড়ি আমদানির সুযোগের দাবি জানিয়েছিলাম।

পুরোনো গাড়ি পরিবেশদূষণ করতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল হক বলেন, পরিবেশদূষণে গাড়ির বয়স কোনো বিষয় নয়। নতুন গাড়িও দূষণ করতে পারে, আবার পুরোনো গাড়ি সেটি না–ও করতে পারে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আমদ ন র স য গ চ বছর র ব শ প রস ত ব

এছাড়াও পড়ুন:

জোহরান মামদানির জয়: নিউইয়র্কের ইহুদিদের ইসরায়েলে চলে আসতে বলছেন ইসরায়েলি মন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানিকে হামাসের (ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন) সমর্থক আখ্যা দিয়ে সেখানে বসবাসকারী ইহুদিদের ইসরায়েলে চলে আসার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির এক মন্ত্রী।

গত মঙ্গলবার নিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হয়। স্বতন্ত্র প্রার্থী নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোকে বিপুল ভোটে হারিয়ে নতুন মেয়র হয়েছেন জোহরান মামদানি। পরদিন গতকাল বুধবার ইসরায়েলের কট্টর দক্ষিণপন্থী ওই মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

৩৪ বছর বয়সী দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত ও অভিবাসী পরিবারের সন্তান জোহরান মামদানি নিউইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনি আন্দোলনের পক্ষে কথা বলে আসছেন। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় তিনি যেমন স্পষ্টভাবে ইহুদিবিদ্বেষের নিন্দা জানিয়েছেন, তেমনি নিজে ইসলামবিদ্বেষের শিকার হওয়া নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন।

যে শহর (নিউইয়র্ক) একসময় বৈশ্বিক স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত ছিল, সেই শহর এখন নিজের নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়েছে এক হামাস সমর্থকের (জোহরান মামদানি) হাতে।আমিখাই চিকলি, ইসরায়েলের মন্ত্রী

ইসরায়েলের প্রবাসী ও ইহুদিবিদ্বেষ প্রতিরোধবিষয়ক মন্ত্রী আমিখাই চিকলি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লেখেন, ‘যে শহর (নিউইয়র্ক) একসময় বৈশ্বিক স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত ছিল, সেই শহর এখন নিজের নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়েছে এক হামাস সমর্থকের হাতে।’

এই মন্ত্রী আরও বলেন, ‘নিউইয়র্ক কখনো আর আগের মতো থাকবে না, বিশেষ করে ইহুদি সম্প্রদায়ের জন্য। আমি নিউইয়র্কের ইহুদিদের ইসরায়েলের ভূখণ্ডে নিজেদের নতুন বসতি গড়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার আমন্ত্রণ জানাই।’

আরও পড়ুনজোহরান মামদানিকে বেছে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে: ডোনাল্ড ট্রাম্প১ ঘণ্টা আগে

ইসরায়েলকে নিয়ে কথা বলার সময় জোহরান মামদানি দেশটিতে ‘বর্ণবৈষম্যমূলক শাসনব্যবস্থা’ চলছে বলে মন্তব্য করেন। এ ছাড়া তিনি ইসরায়েলে গাজা যুদ্ধকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে বর্ণনা করেছেন। এসব কারণে ইহুদি সম্প্রদায়ের একাংশের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। যদিও নিউইয়র্কে ইহুদিদের একাংশ তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন এবং তাঁর পক্ষে ভোটের প্রচার চালিয়েছেন।

জয় নিশ্চিত হওয়ার পর বিজয় ভাষণের মঞ্চে স্ত্রী রামা দুয়াজিকে নিয়ে জোহরান মামদানি। ৫ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ