অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টার সমালোচনায় হাসনাত আবদুল্লাহ
Published: 5th, November 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টার সমালোচনা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। এই দুই উপদেষ্টা হলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম ও মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক–ই–আজম।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় এনসিপির চট্টগ্রাম অঞ্চলের (মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ) সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সমালোচনা করেন। নগরের লালখান বাজার এলাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে এ সভা হয়। এ সভায় এনসিপি, যুবশক্তি, ছাত্রশক্তি, শ্রমিকশক্তির বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। হাসনাত আবদুল্লাহ তাঁদের নানা অভিযোগ ও প্রশ্নের জবাব দেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সরকারের সবচেয়ে ব্যর্থ উপদেষ্টা। তিনি স্বাস্থ্য বোঝেন না। তিনি শুধু বোঝেন কোন জায়গা থেকে কিস্তি আনলে কী পরিমাণ লাভ হবে। আমার খুলনার এক ভাই চোখ হারিয়েছেন। তাঁর চোখ হারানোর পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান এই স্বাস্থ্য উপদেষ্টার। যথাসময়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলে আজকে এই ক্ষতি হতো না।’
মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক উপদেষ্টার সমালোচনা করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমি তাঁকে ( ফারুক-ই-আজম) বলেছিলাম, এক সপ্তাহের মধ্যে টাকাপয়সা দিয়ে (আহতদের ক্ষতিপূরণ) ক্লিয়ার (পরিশোধ) করেন। তিনি বলেছেন, তাঁদের নাকি একটা প্রটোকল আছে.
এনসিপি চট্টগ্রাম নগরের প্রধান সমন্বয়কারী মীর আরশাদুল হকের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ এস এম সুজা উদ্দিন, দক্ষিণ জেলার প্রধান সমন্বয়কারী মোহাম্মদ হাসান আলী, উত্তর জেলার প্রধান সমন্বয়কারী সাগুপ্তা বুশরা, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক জুবাইরুল হাসান, ইমন সৈয়দ, কেন্দ্রীয় সদস্য জুবাইরুল আলম, জাওয়াদুল করিম ও এহসানুল মাহবুব।
‘এনসিপি জোটে বিশ্বাসী নয়’
সভায় সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাসান আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা রাষ্ট্র পুনর্গঠনে বিশ্বাসী। এনসিপি কোনো জোটে বিশ্বাসী নয়। তবে আমাদের সঙ্গে সংস্কারের প্রশ্নে যদি কেউ আসতে চায়, আমরা তাঁকে জোটে নেব।’
বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘বিএনপির যাঁরা মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন, কিন্তু বাংলাদেশ পন্থায় বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশ পুনর্গঠনে যাঁরা দায়িত্ব নিতে চান; আমরা তাঁদের এনসিপিতে স্বাগত জানাচ্ছি। কে জিতবে কে হারবে নির্বাচনে, সেটা মুখ্য নয়। আমাদের নির্বাচনব্যবস্থাকে জেতাতে হবে। আমি সমঝোতা করে, সংসদে মন্ত্রিত্ব ভাগাভাগি করে নির্বাচনব্যবস্থাকে কলুষিত করব না। এই খন্দকার মোস্তাক আমরা হইতে আসিনি। আমরা লড়ব। স্বচ্ছ লড়াই করে প্রয়োজনে হারব। যে জিতবে তাঁকে সমর্থন দেব। কিন্তু আমরা মাঠ থেকে উঠে যাব না।’
কোনো ধরনের সমঝোতায় এনসিপি বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথকে আমাদের সংসদ বানাব। আমাদের সংসদ হচ্ছে রাজপথ। আমাদের শক্তি হচ্ছে জনগণ, আমাদের সবচেয়ে বড় ইনভেস্টমেন্ট হচ্ছে আমাদের সততা। আমরা শুনছি ব্যালট বাক্স নাকি ১২টার মধ্যে ভরে ফেলা হবে। ব্যালট বাক্স নাকি ১২টার মধ্যে ছিনতাই করে ফেলা হবে। আমরা বলতে চাই, আমরা যদি রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকি, আপনাদের সমস্ত শক্তি দিয়েও আমাদের ব্যালটের জয় আপনি থামাতে পারবেন না।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট র আম দ র স এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসু নেতার প্রবীণ ব্যক্তিকে লাঠি হাতে শাসানো নিয়ে সমালোচনা-বিতর্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ডাকসুর এক নেতার একজন প্রবীণ ব্যক্তিকে লাঠি হাতে শাসানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, ডাকসুর কার্যনির্বাহী সদস্য সর্বমিত্র চাকমা ওই ব্যক্তিকে লাঠি হাতে শাসাচ্ছেন এবং ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে বলছেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, প্রক্টরিয়াল টিমের একজন সদস্য ওই ব্যক্তির ব্যাগে লাঠি দিয়ে কয়েকবার আঘাত করছেন।
গত মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। পরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সমালোচনা। অনেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবীণ এক ব্যক্তির সঙ্গে এমন আচরণের প্রতিবাদ জানান। আবার কেউ কেউ এ ঘটনার পক্ষে অবস্থান জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে সর্বমিত্র চাকমা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘যে বৃদ্ধ লোকটিকে দেখছেন, আমি শুরুর দিন থেকে এই লোককে সেই মেট্রোস্টেশন থেকে তুলছি প্রতিরাতে। লোকটা ক্যাম্পাস ছেড়ে যায়-ই না, ওনার সাথে আরেকজন আরও বৃদ্ধ, উনিও মাদকাসক্ত। এই লোকের কাছে এর আগে একবার গাঁজা পাওয়া গেছিল। এই লোকগুলোকে তোলাটা অত্যন্ত কঠিন, তুললে আগায় ৪ কদম। তাই লাঠিসোঁটা ছাড়া বা ভয়-ভীতি প্রদর্শন না করে তাদের তোলা যায়–ই না।’
ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এ বি জুবায়ের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে সর্বমিত্র যেই মুরুব্বিকে লাঠি হাতে শাসাচ্ছে, তিনি একজন মাদক কারবারি। বেশভূষা দেখে বোঝার উপায় না থাকলেও সত্য হচ্ছে, তিনি ক্যাম্পাস এরিয়ায় মাদক কারবারের সাথে জড়িত। তাকে বারবার উঠিয়ে দেওয়া হলেও তিনি ক্যাম্পাস এরিয়া ছাড়ছেন না। কারণ, এইখানে তার মাদকের কারবার! সর্বমিত্রের নিজেই লাঠি হাতে নিয়ে মুরুব্বিকে শাসানোর এই অ্যাপ্রোচকে আমি ঠিক মনে করি না। প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নিলে ব্যাপারটা আরও সুন্দর হতো।’
ঘটনার সমালোচনা করেছেন ছাত্রদলের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইব্রাহিম হোসেন। ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, ‘বাবা, তুমি একটু শান্ত হও, তার হাঁটুর বয়সও হয়নি তোমার। ক্ষমতা পাইছ, তার মানে এই না যে অপব্যবহার করবে। সেদিন তো ছবি তোলা নিয়ে কত জ্ঞান দিলেন—মবের ছবি তোলা নিষিদ্ধ, আজকে কে যেন ভুলে ভিডিও করছে।’