বরিশালের ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বাদ আছে বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসন।

এই আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে এলাকায় সক্রিয় আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান। এখানে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আরও আছেন দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেলিমা রহমান এই আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। জয়নুল আবেদীন হয়েছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। বিএনপি গত সোমবার জাতীয় সংসদের ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে। তবে বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি।

দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণার আগে থেকেই সেলিমা রহমান ও জয়নুল আবেদীন দলীয় ও ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে শুরু করেন নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রচার। তবে এখনো হাল ছাড়েননি সেলিমা রহমান। তিনি এলাকায় ব্যক্তিভাবে দলীয় নানা কর্মসূচিতে সক্রিয় রয়েছেন। গতকাল বুধবার বিকেলে তিনি বাবুগঞ্জে একটি নারী সমাবেশে যোগ দেন। বিএনপির ‘রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা’ কর্মসূচি সম্পর্কে নারীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

আরও পড়ুনবিএনপির ২৩৭ প্রার্থীর মধ্যে ১০ জন নারী০৩ নভেম্বর ২০২৫

গতকাল বিকেল ৫টায় উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভুতেরদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ উঠান বৈঠকের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সেলিমা রহমান। এ সময় তিনি বলেন, ‘নারীর অংশগ্রহণেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব। একটি জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে সবাইকে সংগঠিত হতে হবে।’ তবে দলীয় মনোনয়ন ঘোষণা না করা কিংবা সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে এখানে তিনি কোনো বক্তব্য দেননি।

আরও পড়ুনবিএনপির মনোনয়ন তালিকায় নেতাদের ১৯ ছেলে, ৫ মেয়ে০৫ নভেম্বর ২০২৫

ওই সমাবেশের পর বরিশাল-৩ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণার বিষয়ে জানতে চাইলে সেলিমা রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আসলে আমার বলার তেমন কিছু নেই। দল যাঁকে চূড়ান্ত করবে, আমরা তাঁকেই সবাই মেনে নেব। হয়তো তাঁরা চিন্তাভাবনা করছেন। আমরা যেহেতু দুজনই সিনিয়র, তাই একটু সময় নিচ্ছে।’

মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করি। তাই সব সময়ই আমরা আশাবাদী। আশাবাদী না হলে রাজনীতির মধ্য দিয়ে দেশ ও মানুষের কল্যাণ করা যায় না।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর শ ল ৩ ব এনপ র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

এবার পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতির নির্দেশ দিলেন পুতিন

পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরুর নির্দেশের পর এ পদক্ষেপ নিলেন পুতিন।

 

আরো পড়ুন:

বুরেভেসতনিক ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাতাদের পুরস্কৃত করলেন পুতিন

ইউক্রেনের ৯৮টি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি রাশিয়ার

যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার পাল্টাপাল্টি এমন পদক্ষেপ বিশ্ব রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতা বাড়াবে বলে বিশ্লেষকরা শঙ্কা প্রকাশ করছেন। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

রাশিয়ার নেতা বুধবার তার নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র বা ব্যাপক পারমাণবিক পরীক্ষা নিষেধ চুক্তির (সিটিবিটি) কোনো স্বাক্ষরকারী দেশ পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা চালায়, তাহলে ‘রাশিয়া পারস্পরিক ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকবে’।

পুতিন বলেন, “এই বিষয়ে আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশেষ পরিষেবা এবং সংশ্লিষ্ট বেসামরিক সংস্থাগুলোকে এই বিষয়ে অতিরিক্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করার নির্দেশ দিচ্ছি, নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক এটি বিশ্লেষণ করানো হোক এবং পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে সম্ভাব্য প্রথম পদক্ষেপের উপর সমন্বিত প্রস্তাব জমা দেওয়া হোক।”

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে মস্কো আর পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা চালায়নি। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে পুতিনের প্রতি ট্রাম্পের হতাশা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক অস্ত্রাগারের অধিকারী দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে।

গত মাসে মার্কিন নেতা হাঙ্গেরিতে পুতিনের সাথে একটি পরিকল্পিত শীর্ষ সম্মেলন বাতিল করেন, তার একদিন পরে রাশিয়ার দুটি শীর্ষ তেল কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। জানুয়ারিতে ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার পর থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এটিই প্রথম পদক্ষেপ।

এরপর ৩০ অক্টোবর ট্রাম্প বলেন, তিনি মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগকে অন্যান্য পারমাণবিক অস্ত্রধারী শক্তির সাথে ‘সমান ভিত্তিতে’ পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন।

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত মস্কোর নতুন বুরেভেসতনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সমালোচনা করার কয়েকদিন পর আসে। বুরেভেসতনিক পারমাণবিক শক্তিচালিত ও পারমাণবিক অস্ত্র বহনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

ক্রেমলিনের তথ্যানুসারে, পুতিন গতকাল বুধবার মস্কোতে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা অধিবেশনে বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছেন।

বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোসভ পুতিনকে বলেছেন, ওয়াশিংটনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো ‘রাশিয়ার জন্য সামরিক হুমকির মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে।’ তিনি বলেন,  “আমাদের পারমাণবিক বাহিনীকে এমন পর্যায়ে প্রস্তুত রাখা অপরিহার্য প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে"।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরো বলেছেন, আর্কটিক অঞ্চলের নোভায়া জেমলিয়া ঘাঁটিতে অল্প সময়ের নোটিশেই পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো সম্ভব।

রাশিয়ার সামরিক বাহিনীল প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভও সতর্ক করে বলেছেন যে, রাশিয়া যদি ‘এখনই যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের প্রতি সময়োপযোগী প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় ও সুযোগ হারিয়ে যাবে’।

বৈঠকের পর, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের উদ্ধৃতি দিয়ে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস জানিয়েছে, পুতিন অনুরোধকৃত প্রস্তাবগুলো খসড়া করার জন্য কর্মকর্তাদের জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করেননি।

পেসকভ বলেন, “এই ধরনের পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করার যুক্তিসঙ্গততা সম্পর্কে সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য সম্পূর্ণরূপে বুঝতে আমাদের যতটা সময় লাগে ঠিক ততটাই সময় লাগবে।”

রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের কাছে থাকা ওয়ারহেডের সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বব্যাপী বৃহত্তম পারমাণবিক শক্তিধর।

অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সিএসিএনপির ধারণা অনুসারে, মস্কোর বর্তমানে ৫ হাজার ৪৫৯টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে, যার মধ্যে ১ হাজার ৬০০টি সক্রিয়ভাবে মোতায়েন করা হয়েছে।

সিএসিএনপি অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রায় ৫ হাজার ৫৫০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ সক্রিয়। স্নায়ুযুদ্ধের সময় ১৮৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৩১ হাজারের বেশি সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় পারমাণবিক ওয়ারহেড ছিল।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ