সুদানের কেন্দ্রীয় কর্দোফান অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর এল-ওবাইদে একটি জানাজায় হামলায় ৪০ জন নিহত হয়েছেন। বুধবার জাতিসংঘ এ তথ্য জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক কার্যালয় কখন এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বা এর পিছনে কারা ছিল তা নির্দিষ্ট করে জানায়নি। তবে জানিয়েছে, কর্দোফান অঞ্চলের পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে।
সুদানের গৃহযুদ্ধে কয়েক হাজার মানুষকে হত্যার শিকার হয়েছে এবং আরো লাখ লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এই যুদ্ধ নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে, যা আরও বড় মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি করেছে।
২০২৩ সাল থেকে সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধরত আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) বিশাল পশ্চিম দারফুর অঞ্চলের শেষ সেনা ঘাঁটি এল-ফাশার দখল করার পর কর্দোফানে আক্রমণ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
জাতিসংঘের ওসিএইচএ সংস্থা বলেছে, “স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে যে উত্তর কর্দোফান রাজ্যের রাজধানী এল ওবাইদে একটি জানাজায় গতকাল হামলায় কমপক্ষে ৪০ জন বেসামরিক লোক নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছে।”
এল-ফাশার থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়া মানুষরা আরএসএফের হাতে ধর্ষণ সহ ভয়াবহ নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছে।
চার সন্তানের মা আমিরা এল-ফাশার থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার (৪৩ মাইল) পশ্চিমে তাওইলার একটি অস্থায়ী আশ্রয়স্থল থেকে বলেন, “ধর্ষণ ছিল গণধর্ষণ। জনসমক্ষে গণধর্ষণ, সবার সামনে ধর্ষণ এবং কেউ তা থামাতে পারেনি।”
ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (এমএসএফ) জানিয়েছে , যৌন সহিংসতার শিকার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ নিকটবর্তী জমজম শিবিরে আরএসএফের পূর্ববর্তী হামলার পর তাওইলায় তাদের দলের কাছ থেকে চিকিৎসা চেয়েছিলেন।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) কাছে দেশটির এল–ফাশের শহরের পতনের পর সেখানকার বাসিন্দারা ‘চরম বিপদের’ মধ্যে রয়েছেন। তাঁরা শহরটিতে আটকা পড়েছেন। গতকাল শনিবার ফ্রান্সভিত্তিক আন্তর্জাতিক দাতব্য চিকিৎসা সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছে।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরএসএফের লড়াই চলছে। গত ২৬ অক্টোবর এল-ফাশের দখল করে নেয় আধা সামরিক বাহিনীটি। শহরটির পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুনসুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে২২ ঘণ্টা আগেএল–ফাশের শহর থেকে যাঁরা পালিয়ে কাছের তাউইলা শহরে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁরা বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা চালানোর কথা বলেছেন। তাঁদের ভাষ্য, এল–ফাশেরে মা–বাবার সামনে সন্তানদের হত্যা করা হচ্ছে। মানুষজন শহরটি থেকে পালানোর সময় তাঁদের মারধর করা হচ্ছে। জাতিসংঘের হিসাবে, ২৬ অক্টোবর থেকে ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ শহরটি থেকে পালিয়েছেন।
শনিবার ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, এল–ফাশেরের বিপুল মানুষ ‘চরম বিপদের’ মধ্যে রয়েছে। তাদের শহরটি ত্যাগ করতে দিচ্ছে না আরএসএফ ও তাদের সহযোগীরা। সংস্থাটির জরুরি বিভাগের প্রধান মাইকেল ওলিভিয়ার লাচেরিটে বলেন, এল–ফাশের থেকে যাঁরা নিখোঁজ হয়েছেন, তাঁরা কোথায়? সম্ভাব্য উত্তরটা হলো—তাঁদের হত্যা করা হয়েছে।
গত শুক্রবার জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আরএসএফের হামলায় এল–ফাশেরে কয়েক শ মানুষ নিহত হয়েছেন। তবে সুদানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দুই হাজার বেসামরিক মানুষকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, এল–ফাশেরে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
সুদান ‘মহাবিপর্যয়কর পরিস্থিতির’ মধ্যে রয়েছে বলে শনিবার উল্লেখ করেছেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়েডফুল। বাহরাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বেসামরিক লোকজনকে সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আরএসএফ। এরপরও এমন নৃশংসতার জন্য তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। একই সংবাদ সম্মেলনে সুদানের পরিস্থিতি ‘ভয়ংকর’ বলে উল্লেখ করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার।
আরও পড়ুনসুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন৭ ঘণ্টা আগে